যে প্রক্রিয়ায় বাড়বে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন

যে প্রক্রিয়ায় বাড়বে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন

জাতীয় স্লাইড

মে ২৩, ২০২৩ ১২:০৪ অপরাহ্ণ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই উত্তাল হয়ে উঠে বৈশ্বিক অর্থনীতি। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। এতে বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতি। এবার সেই চাপ সামাল দিতে ইনক্রিমেন্টের ধারা সংশোধন করে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার।

বর্তমানে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট মূল বেতনের ৫ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে ইনক্রিমেন্ট বাড়িয়ে ৮ থেকে ১০ শতাংশ করা হতে পারে। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কাজও শুরু করে দিয়েছে অর্থ বিভাগ। বাজেট পরবর্তী সময়ে জাতীয় পে-স্কেলের গেজেটে সংশোধনী এনে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়া হতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট মূল বেতনের ৫ শতাংশ থাকলেও পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের কিছুটা কম। মূল্যস্ফীতির এ চাপ বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯.২৪ শতাংশ। আর গত মে-এপ্রিল ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতির হার ৮.৬৪ শতাংশ। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আগে সরকারি হিসাবে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে ছিল।

রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দুবছর ধরে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ায় সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে নতুন পে-স্কেলের দাবি ওঠে। এর প্রেক্ষাপটে আগামী বাজেটে মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি আলোচনায় আসে। কিন্তু জাতীয় বেতন স্কেলের ধারা অনুযায়ী তা সম্ভব নয়। ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতীয় বেতন স্কেলের যে গেজেট জারি হয়েছে, সেখানে মহার্ঘ ভাতা বিলুপ্তির কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। একটি ধারায় বলা হয়েছে, ‘জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর হইবার তারিখ হইতে মহার্ঘ ভাতা বিলুপ্তি হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে..’।

শেষ পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা না দিয়ে নতুন কোনো উদ্যোগে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি ভাবছে সরকার।

সূত্র জানায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন সমন্বয় কোন্ প্রক্রিয়ায় হবে এবং কী হারে বেতন বাড়বে, তা নির্ধারণে কাজ শুরু হবে বাজেট ঘোষণার পর। ইনক্রিমেন্ট বাড়ানোর জন্য পয়েন্ট টু পয়েন্ট নাকি বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনায় করা হবে– সে বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়বে কি না, সে বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে গেজেট জারি হতে পারে। তবে যখনই বেতন বৃদ্ধির গেজেট জারি হোক না কেন, তা জুলাই মাস থেকেই কার্যকর হবে।

অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতায় সরকারি চাকরিজীবীর মোট পদসংখ্যা ১২ লাখ ৪৬ হাজার। কিন্তু মোট পদের মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজার পদ শূন্য রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *