যে গ্রামের মানুষ সকালের নাশতা খায় রাত ৩টায়

যে গ্রামের মানুষ সকালের নাশতা খায় রাত ৩টায়

ফিচার স্পেশাল

জানুয়ারি ৪, ২০২৪ ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ

উত্তর-পূর্ব ভারতের বেদং উপত্যকার ডং গ্রামকে বলা হয় ভারতের প্রথম গ্রাম। কারণ, এখানে পুরো ভারতবর্ষের সূর্যের আলো প্রথম পরে। জানলে অবাক হবেন, এই এলাকার বাসিন্দারা সকালের নাশতা খায় রাত ৩টায়। দুপুরের খাবার খান সকাল ১০টায়। আর রাতের খাবার খায় বেলা ৪টায়।

সূর্যের প্রথম রশ্মি পৃথিবী স্পর্শ করে রাত ৩টায়

১৯৯৯ সালে, ডং গ্রাম ভারতের উদীয়মান সূর্যের ভূমির মর্যাদা পায়। এখানে সূর্যের প্রথম রশ্মি পৃথিবী স্পর্শ করে ভোর রাত ৩ টায়। শুনতে যেমন রোমাঞ্চকর বলে মনে হচ্ছে, সূর্যোদয়ের সেই দৃশ্য দেখাও কিন্তু দারুণ রোমাঞ্চকর। নিজের চোখে সে দৃশ্য না দেখলে বুঝি জীবন বৃথা।

রাতের খাবারের প্রস্তুতি শুরু হয় বেলা ৪টা থেকে

জেনে অবাক হবেন যে, নতুন বছরে অনেক পর্যটকই সূর্যোদয়ের এই গ্রামে কাটাতে পছন্দ করেন। প্রথম সূর্যোদয় দেখলে সারাটা বছর ভালো যাবে বলে অনেকের বিশ্বাস। আবার অনেকেই বছরের প্রথম সূর্যোদয় দেখে জীবনী শক্তি অর্জন করতে চান। এই গ্রামে যেমন সকাল সকাল সূর্য ওঠে, তেমনই সকাল সকাল রাত হয়। মজার কথা হলো, বিকেল ৪টা বাজতে না বাজতেই সে গ্রামের বাসিন্দারা রাতের খাবারের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। কারণ এখানে ৪টায় অন্ধকার হতে শুরু করে। ভোর ৩টায় এখানে সূর্যের লাল আভা দেখা যায় বলে সেটাই তাদের কাছে ভোরবেলা। পুরো দেশ যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন এখানকার মানুষ বিছানা ছেড়ে উঠে কাজ শুরু করে দেন। এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে এই স্থান ভ্রমণের সেরা সময়।

১২ ঘণ্টা দিন

ডং গ্রাম অর্থাৎ বেদাং উপত্যকায় দিন প্রায় ১২ ঘণ্টা। বিকেল ৪টায় যখন আমরা চা খাওয়ার প্রস্তুতি নিই, তখন এখানকার লোকজন রাতের খাবার খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। এই গ্রামটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২৪০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। লোহিত এবং সতী এই দুটি এখানকার প্রধান নদী। এই গ্রামের লোকসংখ্যা মোট মাত্র ৩৫ জন।

আগে সূর্যের প্রথম রশ্মি এখানে পড়ত

১৯৯৯ সালের আগে লোকজন বিশ্বাস করতেন যে, সূর্যের প্রথম রশ্মি নাকি আন্দামানের কুচ্ছল দ্বীপে পড়ে। কিন্তু পরে জানা যায়, সূর্যোদয়ের গ্রামটি আসলে অরুণাচল প্রদেশে অবস্থিত, ডং গ্রাম। এই তথ্য প্রকাশের পর থেকেই এখানে পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

কীভাবে ডং গ্রামে বা বেদং উপত্যকায় যাবেন

বিমানে: কেউ যদি ফ্লাইটে যেতে চান তাহলে তাকে ডিব্রুগড় বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হবে। সেখান থেকে ডং ভ্যালি ৩৪৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাস বা ট্যাক্সি ক্যাবে করে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন।

ট্রেনে: ডং গ্রামের নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশনটি হলো তিনসুকিয়া রেলওয়ে স্টেশন। সেখান থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ডং ভ্যালি। এখান থেকে আপনি তেজু পৌঁছানোর জন্য একটি ট্যাক্সি ভাড়া করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *