যেমন হবে আগামী বছরের নতুন শিক্ষাক্রম

যেমন হবে আগামী বছরের নতুন শিক্ষাক্রম

শিক্ষা স্লাইড

ডিসেম্বর ২১, ২০২২ ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ

সারাদেশের সব বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের সাহায্যে পাঠদান চালু হতে যাচ্ছে। মূলত জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১-এর আলোকে এই পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হবে।

যেমন হবে আগামী বছরের নতুন শিক্ষাক্রম

এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রমে ধর্মশিক্ষাসহ মোট ১০টি বিষয় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী শিক্ষকরাই ঐ বিষয়ে ক্লাস নেবেন। নতুন শিক্ষাক্রমে বাংলার শিক্ষকদের পাঠদানের বিষয় হবে বাংলা। ইংরেজি শিক্ষকদের ইংরেজি, গণিত শিক্ষকদের গণিত, ভৌতবিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞানের শিক্ষকদের বিষয় হবে বিজ্ঞান। ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পড়াবেন ভূগোল শিক্ষকরা। আবার ভৌতবিজ্ঞান বা আইসিটিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিষয় হবে ডিজিটাল প্রযুক্তি। কৃষি ও ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষকদের পাঠদান করতে হবে ঐ দুই বিষয়ে। শারীরিক শিক্ষা, গার্হস্থ্য অর্থনীতি ও জীববিজ্ঞানের শিক্ষকদের নতুন বিষয় হবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষকরা পড়াবেন ধর্মশিক্ষা। চারু ও কারুকলা বিষয়ে শিক্ষকদের নতুন বিষয় হবে শিল্প ও সংস্কৃতি।

জানা যায়, এরই মধ্যে এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য জেলা পর্যায়ে শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। ঢাকা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিতে এরই মধ্যে এনসিটিবি মনোনীত শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা প্রশিক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে প্রশিক্ষণবিহীন কোনো শিক্ষক আগামী ৩১ ডিসেম্বরের পর আর ক্লাস নিতে পারবেন না। ডিসেম্বরের আগেই ঢাকার স্কুলগুলোর শিক্ষকদের বিষয় সমন্বয় করা হবে।

যদিও পাইলট প্রকল্পের আওতায় এখন মাত্র ৬২ স্কুলে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের একটি নমুনা দেখানো হচ্ছে। প্রথম দিকে ১০০টি করে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় বাছাই করে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় সেটি সম্ভব হয়নি। এখন মাত্র ৬২টি স্কুলে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সম্প্রতি রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ৩৩ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এক সঙ্গে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা সহজ নয়। আমাদের নতুন কারিক্যুলাম তৈরি হয়েছে। বর্তমানে ৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণিতে সেটি পাইলটিং (পরীক্ষামূলক) চলছে। তার ফিডব্যাক অনেক ভালো। ৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাইলটিং করা যতটা সহজ, ৩৩ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেটি বাস্তবায়ন করা সহজ নয়। কারণ এতে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

এনসিটিবি সূত্র বলছে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে প্রায় চার লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কারণ শিক্ষকরা এত দিন যে আঙ্গিকে পাঠদান পরিচালনা করেছেন, এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে তাদের শিখন শেখানো কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সে জন্য শিক্ষকদের প্রস্তুত করতে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। তবে এ কার্যক্রম অনেক সময়সাপেক্ষ। ফলে শিক্ষক প্রশিক্ষণে অনুমেয় সময় বেশি ধরে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *