জানুয়ারি ১১, ২০২৩ ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
ভারতের উত্তরাখণ্ড প্রদেশের জোশিমঠ শহরে কয়েকটি বাড়িঘর ও একটি মন্দির দেবে যাওয়ার ঘটনায় ওই এলাকায় বেশ আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে হিমালয় অঞ্চলের ছোট শহরটি থেকে চার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে জোশীমঠে বিপজ্জনক বাড়িগুলো ভাঙার কাজ শুরু হবে। কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে সেখানে পৌঁছেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরও একটি দলকে মঙ্গলবারই জোশীমঠে পাঠানোর কথা। তাদের তত্ত্বাবধানে এ কাজ শুরু হবে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ‘দেবে যেতে থাকা’ শহরটিকে দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে এর ভেতরে ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের নির্মাণ কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি সবাইকে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করে শহরটিকে রক্ষা করার আবেদন জানিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্য সরকারকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, ভূমি অবনমনের সম্ভাব্য বিপদের মাত্রা বিবেচনায় শহরটিকে তিনটি অংশে বিভক্ত করে ‘ডেঞ্জার’, ‘বাফার’ ও ‘পুরোপুরি নিরাপদ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘ডেঞ্জার’ অংশটি ৩৫০ মিটার প্রশস্ত বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এখানে রাস্তা ও ফুটপাতে বড় বড় ফাটল তৈরি হয়েছে, দুটি হোটেল ভবন একে অপরের ওপর ঠেস দিয়ে আছে আর নলকূপ দিয়ে অনবরত পানি বের হচ্ছে যার কারণ পুরোপুরি পরিষ্কার নয়।
জোশিমঠকে হিন্দু দেবতা বদ্রিনাথের ‘শীতকালীন আসন’ বলে বিবেচনা করা হয়। প্রতি শীতে বদ্রিনাথ শহরের প্রধান মন্দির থেকে বদ্রিনাথ দেবতার মূর্তি নিচে জোশিমঠ শহরের বাসুদেবা মন্দিরে নামিয়ে আনা হয়। শহরটি শিখদের পবিত্র মন্দির হেমকুণ্ড সাহিবে যাওয়ারও প্রধান পথ।
জোশীমঠের এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করা হচ্ছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য খোঁড়া একটি সুড়ঙ্গকে, ২০০৯ সালে যা খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছিল। এই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার যন্ত্র প্রকৃতির তৈরি একটি বিরাট জলভান্ডারে ছিদ্র করে দিয়েছিল। যা থেকে বেরিয়ে এসেছিল হাজার হাজার গ্যালন পানি।
২০২১ সালে চামোলি জেলায় হড়কা বানে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় এবং দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ভেসে যায়। ওই সময়ই জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতের ওপর এর প্রভাব নিয়ে কাজ করা কিছু বিজ্ঞানী পরিস্থিতি নিয়ে হুঁশিয়ার করেছিলেন।