ব্রাজিলে ভারী বৃষ্টিপাত-ভূমিধস, মৃত্যু বেড়ে ৯১

আন্তর্জাতিক স্লাইড

মে ৩১, ২০২২ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ

ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এখনও নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ২৪ জন।

দেশটির বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, উদ্ধারকারীরা বেঁচে থাকা লোকদের সন্ধানে তৎপর রয়েছেন।

পার্নামবুকো রাজ্যের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে ওই অসহনীয় ক্ষতি সাধিত হয়। ব্রাজিলে বৈরি আবহাওয়ায় সৃষ্ট মারাত্মক ভূমিধস এবং বন্যার সাম্প্রতিক সিরিজের মধ্যে এটি সর্বশেষ বিপর্যয়।

সপ্তাহান্তে মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে। ভারী বৃষ্টিতে ভূমিধসের কয়েক ডজন ঘটনা ঘটে। বৃষ্টিতে নদীগুলো উপচে পড়ে এবং কাদার স্রোত পথঘাট বাড়িঘর সবকিছুকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বেসামরিক প্রতিরক্ষার সর্বশেষ বিবৃতিতে নিখোঁজদের সংখ্যা সম্পর্কে আপডেট দেওয়া হয়নি। এর আগে রিপোর্ট করা হয়েছিল ৫৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। প্রায় ৪ হাজার মানুষ বাড়িঘর হারিয়েছে।

পার্নামবুকোর গভর্নর পাওলো কামারা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমাদের হাতে এখনও নিখোঁজদের সঠিক সংখ্যা নেই। নিখোঁজদের শনাক্ত না করা পর্যন্ত অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে। প্রায় ১২শ কর্মী কিছু নৌযান ও হেলিকপ্টারের সাহায্যে অনুসন্ধান কাজ অব্যাহত রেখেছেন।

আঞ্চলিক উন্নয়ন মন্ত্রী ড্যানিয়েল ফেরেইরা রোববার দুর্যোগের বিষয়ে সতর্ক করেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পার্নাম্বুকো রাজ্যের রাজধানী রেসিফেতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সতর্কতা দেন। তিনি বলেন, যদিও এখন বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে, আমরা আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছি। প্রথম যে কাজটি করতে হবে, তা হলো আত্ম-সুরক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখা।

গত শুক্রবার রাত এবং শনিবার সকালের মধ্যে রেসিফ এলাকার কিছু অংশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭০ শতাংশে পৌঁছেছে। স্থানীয় মিডিয়াতে প্রচারিত ছবিগুলোতে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীর রেসিফ এবং জাবোতাও ডোস গুয়াররাপেসের পৌরসভায় ধ্বংসাবশেষের স্তূপ পরিষ্কার করছে। শনিবার সকালে ভূমিধসে ১৯ জনের মৃত্যুর খবর আসে। ভূমিধসে সেখানকার বাড়িগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

লুইজ এস্তেভাও আগুয়ার নামে এক বাসিন্দা টিভি গ্লোবোকে বলেন, তিনি ১১ জন আত্মীয়কে হারিয়েছেন। তার মধ্যে বোন, শ্যালকসহ অন্যান্য স্বজন রয়েছেন। ফ্লাভিও জোসে দা সিলভা মরিয়া হয়ে তার বাবা গিলভানকে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খুঁজছিলেন। বাড়িটি ধসে পড়ার কিছুক্ষণ পরে, তিনি চিৎকার শোনেন- ‌‘আমি এখানে, মাটির নিচে।’ ধ্বংসস্তূপের পাহাড়ের দিকে ইঙ্গিত করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সিলভা বলেন, আমরা তাকে জীবিত খুঁজে পাব বলে আশা করছি।

রোববার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো বলেছেন, তিনি সোমবার রেসিফে যাবেন। গত এক বছরে প্রবল বর্ষণে বন্যা ও ভূমিধসে শত শত ব্রাজিলিয়ান মারা গেছে। ফেব্রুয়ারিতে রিও ডি জেনিরো পেট্রোপলিস শহরে ২৩০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল। গত মাসের গোড়ার দিকে বন্যা ও ভূমিধস মারা যায় ১৪ জন।

মেটসুল এজেন্সির আবহাওয়াবিদ এস্টায়েল সিয়াসের মতে, প্রশান্ত মহাসাগরে ‌‘লা নিনা’র প্রভাবে উষ্ণ বায়ুমণ্ডল বেশি জল ধারণ করছে। এজন্য চরম বৃষ্টিপাত থেকে বন্যার ঝুঁকি এবং ভূমিধসের তীব্রতা বাড়াচ্ছে। আটলান্টিকের হারিকেন উত্তর-পূর্ব ব্রাজিলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটাচ্ছে।

সূত্র: এবিসি নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *