সিনিয়র কূটনৈতিক প্রতিনিধি।।
বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন বলে কানাডার আদালতের দেয়া রায় তুলে ধরা হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে। এ ব্যাপারে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানান, যুক্তরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট দলের সমর্থক নয়।
ব্রিফিংয়ে মানবাধিকার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের দেশভেদে পক্ষপাতমূলক আচরণের সমালোচনা করে প্রশ্ন করা হলে মিলার বলেন, ‘যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, সেখানেই উদ্বেগ জানায় ওয়াশিংটন।’
২০১৪ সালে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে ব্যাপক সহিংসতা চালায় বিএনপি-জামায়াত জোট। গণপরিবহনে আগুন, রেলস্টেশনে ভাংচুর এবং পুলিশের ওপর হামলার মত বেশকিছু ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে কানাডার একটি আদালত এক বিএনপি নেতার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করে কানাডার ফেডারেল আদালত।
বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে আবারও আন্দোলনে নেমেছে বিএনপি ও এর সমমনা জোট। এরই মধ্যে বেশকিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে দলটির বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি ঘিরে। এ বিষয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বিষয়টি তুলে ধরা হয়। প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে মার্কিন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমার পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আমরা বাংলাদেশে বা বিশ্বের অন্য কোনও দেশে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে অবস্থান নিই না। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত।’
মানবাধিকার প্রশ্নে ভারত, সৌদি আরব কিংবা ইসরাইলের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র নমনীয় ভূমিকা পালন করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পক্ষপাতমূলক অবস্থান নেয়। বিশেষজ্ঞদের এমন মতামত তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য জানতে চাইলে জবাবে মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে, সম্প্রতি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন অর্থায়নে চলা বিতর্কিত সংগঠন সেন্টার ফর গভর্নমেন্ট স্টাডিজ (সিজিএস) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সোমবার (২৪ জুলাই) সেই গবেষণাপত্র নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের অবস্থান জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী। একই সঙ্গে, বাংলাদেশে বিরোধীদের ওপর সরকারের কড়াকড়িতে জড়িতদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে কি না এমন প্রশ্নও করেন ফজল। ম্যাথিউ মিলার বিষয়টি নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। বরং জানান, ভিসা নীতির বিষয়টি আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন গত ২৪ মে ভিসা নীতি জারি করার সময় স্পষ্ট করে বলেছিলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে এ ভিসা বিধিনিষেধগুলো প্রযোজ্য হবে।
নতুন করে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আসছে না বলেও জানান মিলার।