যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে হাজার হাজার মানুষ

যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে হাজার হাজার মানুষ

আন্তর্জাতিক

মে ১৩, ২০২৩ ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ট্রাম্পের আমলে জারিকৃত ‘টাইটেল ৪২’র অবসান হলো ৩ বছর পর গতকাল ১১ মে বৃহস্পতিবার। এরপরই দক্ষিণের সীমান্ত দিয়ে শুক্রবার ভোর রাতের মধ্যে কমপক্ষে ৮ হাজারের অধিক মানুষ সীমান্ত ফাঁড়ি অতিক্রম করেন।

টেক্সাসের এলপাসো সীমান্ত-ফাঁড়িতে ইমিগ্রেশন বিভাগের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদনকারিদেরকে নোটিশ ধরিয়ে দিচ্ছেন পছন্দের সিটিতে পৌঁছার ৬০ দিনের মধ্যে ইমিগ্রেশন কোর্টে হাজিরার জন্য।

ট্রাম্প আমলে নির্মিত সীমান্ত-দেয়ালের মধ্যে দুটি প্রবেশ পথ (সীমান্ত ফাঁড়ি) ৪০, ৪২ দিয়ে ঢুকানো হচ্ছে সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশসমূহ থেকে আসা শরনার্থীদেরকে।

‘টাইটেল ৪২’ বহাল থাকার মধ্যেও গত সপ্তাহে দৈনিক গড়ে ১০ সহস্রাধিক শরনার্থী/রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীকে সীমান্ত রক্ষীরা গ্রেফতার করে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ডিটেনশন সেন্টারে রেখেছে। সময়ের পরিক্রমায় ডিটেনশন সেন্টারেও এখন আর জায়গা না থাকায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী আলেজান্দ্রো মেয়রকাস সহজশর্তে সকলকেই পছন্দের সিটিতে (অর্থাৎ যেখানে তাদের পূর্বপরিচিত অথবা আত্মীয়-স্বজন রয়েছে) গমনের সুযোগ দিচ্ছেন।

এক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন বিভাগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের একটি নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভিনেজুয়েলা, গুয়াতেমালা, আলসালভেদও, হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া প্রভৃতি দেশের বিপদগ্রস্থ নারী-পুরুষেরা শিশু সন্তানসহ ৮ শতাধিক মাইল হেঁটে অথবা যানবাহনে চড়ে মেক্সিকো সীমান্তে জড়ো হয়েছেন।

লাখো মানুষের স্রোত সামলাতে ইতিমধ্যেই হাজারো সৈন্য-সহ সীমান্ত রক্ষী সতর্কাবস্থায় রয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে ‘টাইটেল ৪২’র মেয়াদ ফুরিয়ে যাবার সময়ে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী আলেজান্দ্রো মেয়রকাস টুইট ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেছেন, আইনী প্রক্রিয়ায় যারা সীমান্ত অতিক্রম করবে না, তারা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি নাও পেতে পারেন।

এর আগেরদিন ১০ মে বর্ডার পেট্রোল চীফ রাউল অরটিজ এক নির্দেশে আগতদের প্রচন্ড ভিড় সামলানোর অভিপ্রায়ে ‘প্যারোল উইথ কন্ডিশন’ নীতি অবলম্বনের কথা জানিয়েছেন সীমান্তে কর্মরতদেরকে।

অর্থাৎ এই নোটিশ হাতে নিয়ে পছন্দের সিটিতে পৌঁছার ৬০ দিনের মধ্যে ইমিগ্রেশন কোর্ট/অথরিটির কাছে হাজিরা দিতে হবে। এরপরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঐ বিদেশী/শরনার্থী/অভিবাসীর যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসতি গড়ার অভিপ্রায়ের আবেদন গ্রহণ করবে।

উল্লেখ্য, টাইটেল ৪২ বিধি হচ্ছে ১৯৪৪ সালে ‘পাবলিক হেলথ সার্ভিস অ্যাক্ট অব ১৯৪৪’র অংশবিশেষ। কলেরা মহামারির সংক্রমণ রোধে এই বিধিকে ১৮৯৩ সালে কংগ্রেস অনুমোদন দেয়। এ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা পেয়েছেন মহামারিতে আক্রান্ত দেশসমূহের নাগরিকদের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের। এবং এই বিধি তৈরীর পর ট্রাম্প আমলেই প্রথম তার প্রয়োগ ঘটেছে।

অভিযোগ করা হয় যে, ইমিগ্র্যান্ট-বিরোধী ট্রাম্পকে করোনা মহামারি আরো কট্টর হবার পথ সুগম করেছিল, যদিও তিনি নিজেই করোনা নিয়ে অনেক তামাশা করেছেন। করোনা নিয়ে অবজ্ঞা-অবহেলা না করলে অনেক আমেরিকানের প্রাণহানি ঘটতো না বলে এখন অনেকে বলাবলি করছেন।

সূত্র: রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *