ম্যাক্রোঁকে ইইউ নেতাদের শুভেচ্ছা

আন্তর্জাতিক

এপ্রিল ২৫, ২০২২ ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের জয়ী হওয়ায় ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতারা।

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা তার শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছেন, শক্তিশালী ইইউ গড়তে শক্তিশালী ফ্রান্স প্রয়োজন।

অভিনন্দন জানিয়েছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিচেলও। তিনি বলেন, ‘আমরা আরও পাঁচ বছর ফ্রান্সের ওপর নির্ভর করতে পারি।’

ম্যাক্রোঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার (২৫ এপ্রিল) প্রথম প্রহরে ম্যাক্রোঁর উদ্দেশে এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার আপনাকে অভিনন্দন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ফ্রান্স আমাদের অন্যতম ঘনিষ্ঠ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি বলেছেন, ‘ম্যাক্রোঁর জয় ইউরোপের সবার জন্য চমৎকার খবর।’ তিনি আরও বলেন, ‘ফ্রান্স ও ইতালি ইউরোপের অন্য দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটা শক্তিশালী ও সংহত ইউরোপীয় ইউনিয়ন গড়তে কাজ করছে।’

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, ‘ম্যাক্রোঁর জয় ইউরোপে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়েছে।’

পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী আন্তনিও কস্তা বলেছেন, ‘ম্যাক্রোঁকে ভোট দেওয়ার মধ্যদিয়ে ফরাসি ভোটাররা আরেকবার ইউরোপীয় প্রকল্পকেই সমর্থন জানাল।’

নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থী প্রার্থী মেরিন লা পেনকে ধরাশায়ী করেছেন ফ্রান্সের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ফলে আরও পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ৪৪ বছর বয়সী এ রাজনীতিক। রোববারের (২৪ এপ্রিল) দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত ধাপের ভোটের পর বুথফেরত জরিপ বলছে, শতকরা ৫৮.৫ ভাগ ভোট পেতে যাচ্ছেন ম্যাক্রো। বিপরীতে মেরিন লা পেন পাচ্ছেন মাত্র ৪১.৫ শতাংশ।

এর আগে ১০ এপ্রিল প্রথম ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্বে ডান-বাম এবং মধ্যপন্থী মিলিয়ে ১২ জন প্রার্থী অংশ নেন। এই ধাপে জয় পেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। সর্বোচ্চ ২৮.১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন তিনি। ২৩. ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন লা পেন। তৃতীয় হন জ্যা-লুক মেলেনচন। তিনি পেয়েছিলেন ২০ শতাংশ ভোট।

ফ্রান্সের নির্বাচনী বিধি অনুসারে, প্রথম রাউন্ডে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দ্বিতীয় রাউন্ড বা রান-অফে অংশ নিতে হয়। এক্ষেত্রে প্রথম রাউন্ডে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী রান-অফে অংশ নেন। নিয়মানুসারে দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত ধাপের নির্বাচনে লড়াইয়ে নামেন ম্যাক্রোঁ ও লা পেন। স্থানীয় সময় রোববার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৮টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায়) দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৮টায় (বাংলাদেশ সময় ১২টায়)।

ফ্রান্সে নির্বাচন শেষ হওয়ার পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তবে তার আগে ভোটকেন্দ্রের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে জরিপ ফলাফল প্রকাশ করে জরিপ প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব বুথফেরত জরিপ প্রায়ই সঠিক হয়ে থাকে।

স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৮টায় ভোটাভুটি শেষ হওয়ার পরপরপরই টিভি চ্যানেল ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে ম্যাক্রোঁকে বড় ব্যাবধানে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। জরিপ প্রতিষ্ঠান ইপসোস ও সোপরা স্টেরিয়ার বিশ্লেষণ মতে, ৫৮.২ শতাংশ ভোট পাচ্ছেন মধ্যপন্থী ম্যাক্রোঁ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ৫৩ বছর বয়সী নারী রাজনীতিক মেরিন লা পেন পাচ্ছেন ৪১.৮ শতাংশ ভোট।

এদিকে বুথফেরত জরিপ প্রকাশের পরপরই রাজধানী প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের কাছে বিজয় উদযাপনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ম্যাক্রোঁ সমর্থকরা। এরমধ্যে স্লোগান উঠেছে, ‘আরও পাঁচ বছরের জন্য ম্যাক্রোঁ’।

নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিয়েছেন বিরোধী ন্যাশনাল র‌্যালি দলের প্রার্থী লা পেন। তবে পরাজয় মেনে নিলেও ভোটের ফলাফলকে ‘বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশজুড়ে মুক্তির বাতাস বয়ে যেতে পারত। তবে ব্যালট বাক্স বিষয়টাকে অন্যভাবে চেয়েছে।’

ভোট দেওয়ার জন্য জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন লা পেন। তার নামে স্লোগান দেওয়া সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণও দিয়েছেন তিনি। লা পেন বলেন, নির্বাচনের ফলে যেটুকু ভোট পেয়েছেন সেটি এখনও তার দলের জন্য এক বিজয়। ব্যালট বক্সে যে রায় এসেছে তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *