মা যে খাবার খেলে খুশি হয় পেটের ভ্রুণ

মা যে খাবার খেলে খুশি হয় পেটের ভ্রুণ

স্বাস্থ্য

নভেম্বর ২০, ২০২২ ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

মা যা ইচ্ছা তাই খাবেন, আর ভ্রুণ খুশি হয়ে যাবে এমনটা ভাবার কারণ নেই। তারও পছন্দ-অপছন্দ আছে। জানেন কি, ফোর-ডি আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান করলে বোঝা যায় আনন্দ-খুশির খবর। ভ্রূণের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখের ছাপ। ১৮-৪০ বছর বয়সী ১০০ জন নারীর ওপর স্টাডি করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গর্ভাবস্থার ৩২ ও ৩৬ সপ্তাহে তাদের ৪০০ গ্রাম গাজর বা পাতাকপি পাউডার ক্যাপসুলে ভরে খাইয়ে তার ২০ মিনিট পরে স্ক্যান করে দেখা গেছে, যারা গাজরভরা ক্যাপসুল খেয়েছেন, তাদের ভ্রূণের মুখে দেখা গেছে হাসির চিহ্ন আর যারা পাতাকপির ক্যাপসুল খেয়েছিলেন তাদের ভ্রূণের মুখে দেখা দিয়েছে কান্নার চিহ্ন।

ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময়ের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য। তথ্য অনুযায়ী, পাতাকপির স্বাদ পছন্দ হয়নি ভ্রূণের। ভাবছেন, স্বাদের কথা আসছে কীভাবে? ভ্রূণ স্বাদ কীভাবে বোঝে! সে তো আর কিছু খাচ্ছে না । আসুন জানা যাক বিজ্ঞানীরা কী বলছেন।

​ভ্রূণ কী স্বাদ পায়?

খাবার সে চেখে দেখতে পারে না ঠিকই, কিন্তু ৩২-৩৬ সপ্তাহে বয়সের মধ্যেই তার ঘ্রাণেন্দি্রয় পরিপক্ক হয়। ফলে ভাবী মা যাই খান না কেন, সে তার গন্ধ পায়। তার ওপর গর্ভের যে তরলের মধ্যে সে আপাদমস্তক ডুবে থাকে, যাকে বলে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড, সেখানে মায়ের খাবারের রেশ পৌঁছায়।

এককথায় বলতে গেলে, ওইটুকু বয়সেই, জন্মানোর আগেই যে তার স্বাদ-গন্ধের বোধ তৈরি হয়ে যায়, এ হলো তার জলজ্যান্ত প্রমাণ৷ এবং এক খাবারের সঙ্গে অন্য খাবারের রীতিমতো প্রভেদ করতে পারে সে। এবারের প্রশ্ন, এসব তথ্য গবেষণার কাজে অবশ্যই লাগে। কিন্তু আমজনতার কী লাভ এসব জেনে? আসুন দেখে নেয়া যাক৷

​ভ্রূণের স্বাদ-গন্ধ বিচারে লাভ-লোকসান

>>গবেষণা যেদিকে এগোচ্ছে, তা থেকে বোঝা যাচ্ছে, গর্ভাবস্থায় মা যদি স্বাস্থ্যকর খাবার খান, কম ক্যালোরির শাক-সবজি-ফল, হোল গ্রেইন, মাছ ইত্যাদি, তা প্রাথমিকভাবে ভ্রূণের পছন্দ হোক বা না হোক, নিয়মিত তাদের সংস্পর্শে আসতে আসতে তাদের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে৷

>> ভবিষ্যতে সন্তান কী ধরনের খাবার পছন্দ করবে, তার হয়তো একটা ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হয়ে যাবে। কমবে ‘এটা খাবো না বা সেটা খাবো’-র বদভ্যাস তৈরি হওয়ার সুযোগ৷ তার পাশাপাশি আরো কিছু লাভ হওয়ারও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে এই গবেষণা থেকে৷

>> ফোর-ডি আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান করে, বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ভাবী মা যদি ধূমপান করেন বা তাকে যদি দিনের অনেকটা সময় পরোক্ষ ধূমপানের মোকাবিলা করতে হয়, ভ্রূণের মধ্যে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে। সেখান থেকে হয়তো ভবিষ্যতে সে দেরিতে কথা শুরু করতে পারে।

>> একইভাবে মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অবসাদ ইত্যাদিরও বিরূপ প্রভাব পড়ে ভ্রূণের ওপর৷ তবে এসব নিয়ে এখনো শেষ কথা বলার সময় আসেনি, কিন্তু এটুকু বলাই যায়, যত এসব তথ্য মানুষের সামনে আসবে, তত মানুষ সচেতন হয়ে এসব এড়ানোর চেষ্টা করবেন। আর তাতে সন্তানের পাশাপাশি মায়েরও শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *