বিভিন্ন দেশে ঈদ উদযাপন যেমন

বিভিন্ন দেশে ঈদ উদযাপন যেমন

ফিচার স্পেশাল

এপ্রিল ১১, ২০২৪ ৯:০৬ পূর্বাহ্ণ

মুসলিম উম্মাহর প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলো ‘ঈদ’। বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলিম একযোগে উদযাপন করেন পবিত্র ঈদুল ফিতর। একদিন আগে পরে হলেও ঈদের আনন্দ-আয়োজন হয় সব দেশেই মুখর হয়।

ঈদের খুশিকে উপভোগ করে সব দেশের মুসলিমরা। তবে, পার্থক্য থাকে কিছু রীতিতে। দেশে দেশে ঈদ উদযাপনের সেসব রীতি নিয়ে আজকের লেখা।

সৌদি আরব: বাংলাদেশের মতোই সৌদি আরবেও ঈদ উদযাপন করেন সবাই মিলে। ব্যাপক খাবারের আয়োজন হয় বাড়িতে বাড়িতে। ছোটরা সালামি নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সম্পদশালীরা গবীর দুখীদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। সেখানে একটি বড় রেওয়াজ হলো উপহার দেওয়া। এমনকি দোকানদারও ক্রেতাদের উপহার দেন।

পাকিস্তান: ঈদের আগের রাতে পাকিস্তানের মেয়েরা দলবেঁধে মেহেদী লাগান। ছেলেরা ঈদের নামাজ পড়ে সবাই মিলে ঘুরে বেড়ান। বাড়িতে থাকে খাবারের অনেক আয়োজন।

ভারত: ভারতের মুসলমানরাও অনেকটা পাকিস্তানের আদলেই ঈদ উদযাপন করেন। কোথাও কোথাও আয়োজন করা হয় কাওয়ালি গানের অনুষ্ঠান। তবে ভারতে মুসলিমদের সঙ্গে কোথাও কোথাও অন্য সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরাও আনন্দ করে।

লিবিয়া: ঈদে লিবিয়ায় ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ঘোড়দৌড় খেলার আয়োজন করা হয়। এছাড়া সবাই মিলে একত্রে খাবার খাওয়াও একটা রেওয়াজ আছে।

রোমানিয়া: ঈদের দিন সবাই ঐতিহ্যবাহী ঈদের পোশাক পরে ঘুরে বেড়ায়। করা হয় বিশেষ খাদ্য আয়োজন।

চীন: ঈদের নামাজ আদায় করার পর সবাই মিলে মসজিদে খাবার উৎসবে মেতে ওঠেন। এতে চীনের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো পরিবেশন করা হয়। ঈদ উপলক্ষে থাকে সরকারি ছুটিও।

নাইজেরিয়া: ঈদের নামাজের পর দেশটিতে উৎসব আয়োজন করা হয় বড় পরিসরে। এতে রাজার দীর্ঘায়ু কামনা করে অস্ত্র হাতে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকে।

দক্ষিণ আফ্রিকা: পৃথিবীতে বোধহয় একটি মাত্র দেশ, যেখানে ঘোষণা দিয়ে শত শত মানুষ চাঁদ দেখার জন্য একত্রিত হন। এরপর চাঁদ দেখা গেলে পরেরদিন ঈদ উদযাপন করেন। তারা পাড়া-প্রতিবেশীদের আপ্যায়নের মধ্যদিয়ে সময় কাটান।

ফিলিপাইন: পৃথিবীতে একমাত্র দেশ এটি যেখানে বেশিভাগ মানুষ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের হলেও ঈদের দিন সরকারি ছুটি।

তিউনিসিয়া: এদেশে ঈদের আনন্দ পুরোটাই উপভোগ করা হয়। কেননা, দুইদিন সরকারি ছুটি থাকায় এখানে ঈদ আমেজ থেকে যায় তিন-চারদিন পর্যন্ত। ঐতিহ্যবাহী পিঠা, খাবার তৈরি করে আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে চলে খাওয়া দাওয়া।

ইন্দোনেশিয়া: বলা হয়ে থাকে এদেশে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বসবাস। তাই তাদের আয়োজন কোনো অংশে কম নয়। ব্যাপক ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় উদযাপিত হয় ঈদ। এদেশে নারীরাও ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ঈদের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করেন। ঈদের দিন থাকে সরকারি ছুটি।

মালয়েশিয়া: সরকারি ছুটির মধ্য দিয়েই দেশব্যাপী উদযাপিত হয় ঈদ উৎসব। এদেশে সবাই একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। ছোটরা সেলামি নেয় বড়দের কাছ থেকে। নানা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে দিন কেটে যায় মালয়দের।

তুরস্ক: বাংলাদেশের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের দিক থেকে অনেক মিল আছে। সকালে সবাই নতুন জামা পরে নামাজ আদায় করেন। এরপর কবর জিয়ারত করেন। পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয়রা একে অন্যের বাড়িতে বেড়াতে যান। তবে সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি হলো বিশেষ কায়দায় প্রবীণদের শ্রদ্ধা জানানো। এক্ষেত্রে তরুণরা প্রবীণদের ডান হাতে চুমু দিয়ে তা নিজের কপালে ছুঁইয়ে দেন।

ইরান: দেশটি শিয়া অধ্যুষ্যিত। তাদেরও ঈদ আনন্দ কম নয়। তারা ধনী-গবীরদের মধ্যে গোশত বিতরণ করেন।

ইরাক: দেশটিতে ঈদের দিন সবাই একত্রে মসজিদে নামাজ পড়েন। এরপর দিনভন চলে ভোজ উৎসব। তবে সকালেই খির-খুরমায় মিষ্টিমুখ করে নেন।

মিসর: দেশটিতে একদিনের সরকারি ছুটি থাকে। তবে ঈদ আনন্দ উদযাপন হয় দুই-তিন দিন ধরে। এদেশে ঈদে সবাই ঘুরতে বের হন। তবে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঘোরেন বিভিন্ন পার্ক ও নীল নদে। বাসায় বাসায় আয়োজন হয় নানা ঐতিহ্যবাহী খাবারের।

এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, জাপানসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে অভিবাসীরা যার যার নিজেদের ইউনিটির ভিত্তিতে ঈদের আনন্দ উদযাপন করেন। অনেকেই ছুটি কাটান। অনেকেই আবার কাজে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *