ফিলিপাইনে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় মেগির তাণ্ডবে নিহত ২৪

আন্তর্জাতিক

এপ্রিল ১২, ২০২২ ১১:১০ পূর্বাহ্ণ

ফিলিপাইনে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় মেগির প্রভাবে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট ভূমিধস এবং বন্যায় অন্তত ২৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশটির দক্ষিণ এবং মধ্যাঞ্চলে এই ঝড়ের তাণ্ডবে আরও অনেক বাড়িঘর, রাস্তাঘাট এবং অন্যান্য স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সোমবার কর্তৃপক্ষ  জানিয়েছে।

ফিলিপাইনের জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা বলেছে, রোববার ঝড়ের তাণ্ডবে দেশের দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলের ১৩ হাজারের বেশি মানুষ জরুরি আশ্রয় কেন্দ্রে পালিয়েছেন। ঝড়ের প্রভাবে ভারী বর্ষণের কারণে সৃষ্ট বন্যায় অনেক বাড়িঘর, আবাদি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া কিছু কিছু এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন ও হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছেন।

তবে ঝড় মেগির তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় লেইতে প্রদেশ। এই প্রদেশের চারটি গ্রামে ভূমিধসে অন্তত ২১ জনের প্রাণ গেছে বলে বেবে নগরীর দুর্যোগ কর্মকর্তা রাইসে অসতেরো বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন।

দেশটির জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা বলেছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় মিন্দানাও দ্বীপের লেইতে এলাকায় আরও তিনজন নিহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেছে, লেইতের বুঙ্গা এলাকার কয়েকটি বাড়িঘর কাদামাটিতে চাপা পড়েছে।

সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা হান্নাহ কালা ভিটাংকোল এএফপিকে বলেছেন, গতকাল তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে টানা বর্ষণ হয়েছে।

২৬ বছর বয়সী এই নারী শিক্ষক ঘুম থেকে ওঠার পর আশপাশের কিছু বাড়িঘর কাদামাটিতে চাপা পড়ে যেতে দেখে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি কান্না করছিলাম। আমি জানি সেখানে লোকজন মাটির নিচে চাপা পড়েছেন। আমিও ভয় পেয়েছিলাম। কারণ আমাদের বাড়ির পেছনেই পাহাড়।’

ফিলিপাইনের উপকূলরক্ষী বাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা আবুইয়োগ শহরের বন্যা কবলিত লোকজনকে তাদের বাড়িঘর থেকে উদ্ধার করেছে। ভাসমান নৌকায় বসানো কমলা রঙের স্ট্রেচারে শুইয়ে বাসিন্দাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগপ্রবণ ফিলিপাইনে চলতি বছরে প্রথম কোনো বড় ঝড় হিসেবে আঘাত হেনেছে মেগি। স্থানীয়ভাবে এই ঝড় আগাটন নামে পরিচিত। ঝড়ের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠায় দেশটির কয়েকটি বন্দরের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া এই ঝড়ের কারণে চলতি বছরে ভ্রমণের অন্যতম ব্যস্ত সময়ের শুরুতে প্রায় ৬ হাজার মানুষ আটকা পড়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *