পুরোদমে চলছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ এর প্রস্তুতি

দেশজুড়ে

জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ ৬:৩৫ অপরাহ্ণ

মতিউর রহমান সরকার দুখু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি,

ফেব্রুয়ারি আসা মানেই বইমেলা শুরু। প্রিয়জনকে নিয়ে প্রতিবছর পাঠকরা এ মেলায় ভীড় করেন। এবারও পাঠকদের প্রাণের এই মেলা শুরু হতে যাচ্ছে পহেলা ফেব্রুয়ারি। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও বাংলা একাডেমি অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ আয়োজন করছে ।

ইতিমধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দক্ষিণ প্রান্তে ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার স্টলের কাজ শুরু হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনভর স্টল তৈরির কাজ করছে শ্রমিকরা। প্রতি সারিতে ৮ টি স্টলসহ ২ সারিতে ১৬ টি করে স্টল সাজানো হয়েছে।এরকম সারি সারি প্রায় ৬০০ এর মতো স্টল তৈরির কাজ চোখে পড়ে। প্রতি সারির মাঝে চলাচলের জন্য ফাঁকা জায়গা রাখা হয়েছে। স্টলগুলো বাঁশের কাঠামোর উপর টিনের চালা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এজন্য প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কাজ করেন শ্রমিকরা। স্টল তৈরিতে ব্যস্ত কুড়িগ্রামের নাজির হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ জানুয়ারি থেকে ৯৫০ টাকা মজুরিতে দৈনিক কাজ করছেন। কেউ কেউ বাঁশের কাঠামো তৈরি করছেন এবং কেউ কেউ টিন দিয়ে ছাউনী তৈরিতে কাজ করছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভালোভাবে কাজ শেষ করতে তারা চেষ্টা করছেন।

মেলার আয়োজনে থাকা বাংলা একাডেমির প্রশাসন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ও বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম জানান, ” ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৩’ আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে উপস্থিত হয়ে উদ্বোধন করবেন । এবারও বইমেলার দুটি অংশ। একটি হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী ও অন্যটি বাংলা একাডেমি। এবারের মেলাটি এমনভাবে বিন্যাস করা হয়েছে যেন একপ্রান্তে দাঁড়ালে শেষ মাথায় কি হচ্ছে এটা যেন দেখা যায়। সারিভিত্তিক স্টলগুলো সাজানো হয়েছে। একপাশে থাকছে প্যাভিলিয়ন, অন্যপাশে স্টল। এবারের মেলায় চারটি প্রবেশপথ (টিএসসি প্রান্ত, রমনা কালী মন্দির গেইট, দোয়েল চত্বর সাইট ও ইন্জিনিয়ারিং ইস্টটিটিউ সাইট) ও বাহির পথ থাকছে। শুধুমাত্র মন্দিরের গেইটে বাহির পথ নেই, এই বাহির পথটা একটু সরে গতবার যেখানে প্রবেশ পথ ছিল সেখানে এবার বাহির পথ হবে।” এবারের মেলায় খাবারের স্টলগুলো কোথায় হবে এর উত্তরে তিনি বলেন, মেলায় এলোমেলোভাবে খাবারের স্টলগুলো থাকবেনা, খাবারের সবগুলো স্টল একটি নির্দিষ্ট এরিয়ার মধ্যে ইন্জিনিয়ারিং ইস্টটিটিউ সাইটে থাকবে। কেউ যাতে খাবারের উচ্ছিষ্ট কিংবা প্যাকেট ফেলে বইমেলার পরিবেশ নোংরা করতে না পারে সেজন্য এ ব্যবস্থা এইবার আমরা নিয়েছি। এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণে ডাস্টবিন থাকবে এবং কেউ যাতে ময়লা যেখানে সেখানে না ফেলে সেজন্য একটি পর্যবেক্ষণ টিম কাজ করবে।”

তিনি(বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম) আরও জানান,”এবারের বইমেলায় নতুনত্ব আনতে ইন্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সাইটে কোনো স্টল থাকছে না। সেখানে পূর্বে থাকা ১১ টি প্যাভিলিয়নসহ ১৮২ টি স্টল সরিয়ে এনে খাবারের জায়গা, নামাজের স্থান,ওযু করার জায়গা,টয়লেট, আনসার ক্যাম্প,লেখক আড্ডা,লেখক বলছি ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া মন্দিরগেইটে প্রবেশপথে তথ্যকেন্দ্র, কিছুদূর যাওয়ার পর প্যাভিলিয়ন, পুলিশ,র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিস এবং ডানদিকে পুরোটা জুড়ে শিশু চত্বর হিসেবে থাকছে।”

এবারের মেলায় ৪৩৮ টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫৫৫ ও শিশুইউনিটসহ ৬৫৮ টি স্টল প্রয়োজন বলে পরিচালক . কে এম মুজাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে জানা যায় । সবশেষ তিনি যুক্ত করেন, “বইমেলায় ৪০ টির মতো প্যাভিলিয়ন থাকছে। এছাড়া বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এনজিও মিলে ১৫০ টির মতো স্টল থাকবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *