ডিসেম্বর ২৩, ২০২২ ১০:১২ পূর্বাহ্ণ
পদ্মাসেতুতে ২৭ টনের বেশি ওজন নিয়ে যানবাহন চলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জানুয়ারি থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। নির্ধারিত সীমার বেশি ওজনের যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সেতুর জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে বসানো হয়েছে ইলেট্রিক সেন্সর নিয়ন্ত্রিত ওজন পরিমাপের যন্ত্র ওয়েস্কেল। ওজন বা গতি বেশি হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাইরেন বেজে উঠবে। ডিজিটাল ডিসপ্লেতে দেখা যাবে যানবাহনের প্রকৃত ওজন।
তিন লেনের ওয়েস্কেলের নির্মাণ শেষে চলছে পরীক্ষামূলক পরিমাপ। ৬৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়েস্কেলটি বসিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোরিয়ান একপ্রেসওয়ে।
এছাড়া যানবাহনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে বসানো হয়েছে মোশন ক্যামেরা। গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে সিগন্যাল বাতি, ডিজিটাল ডিসপ্লে, ডিভাইডার সাইন বসানোর কাজও। ডিজিটাল পদ্ধতির এই ওয়েস্কেলে দাঁড়াতে হবে না যানবাহনকে, চলতি পথেই হবে ওজন পরিমাপ।
পদ্মাসেতুর টোল আদায় শাখার জাজিরা প্রান্তের ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন জানান, উদ্বোধনের পর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১৫৮ দিনে পদ্মা সেতু থেকে টোল আদায় হয়েছে ৩৩৫ কোটি ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৫০ টাকা। এই সময়ের মধ্যে পদ্মা সেতু পারাপার হয়েছে ২৩ লাখ ৩১ হাজার ৭৯টি। প্রতিদিন গড়ে পদ্মাসেতু পারাপার হয়েছে ১৪ হাজার ৭৫৩টি আর টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ১২ লাখ ১৯ হাজার ৭১৫ টাকা।
পদ্মাসেতু পার হতে উভয় প্রান্তে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে আসা প্রতিটি পণ্যবাহী যানবাহনকে ওজন পরিমাপ করতে টোল প্লাজার আগে নির্ধারিত তিনটি আলাদা লেনে আসতে হবে ওয়েস্কেলে। নির্ধারিত ইলেকট্রিক সেন্সর ও সড়কে থাকা ওজন পরিমাপের বিশেষ ডিভাইসের উপর দিয়ে পার হতে হবে ওয়েস্কেলের বিশেষ লেন।
২৭ টন পর্যন্ত ওজন বহনকারী যানবাহন টোল পরিশোধ করে গ্রিন জোন দিয়ে সরাসরি পার হবে পদ্মাসেতু। আর বেশি ওজন বহনকারী যানবাহন রেড জোন দিয়ে চলে যাবে টোল প্লাজার পাশে নির্মিত স্টকইয়ার্ডে। সেখানে সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওজন কমিয়ে পুনরায় ওয়েস্কেলে ওজন পরিমাপ শেষে গ্রিন জোন দিয়ে পদ্মাসেতু পার হবে ওই যানবাহন। স্টকইয়ার্ডে নামিয়ে রাখা অতিরিক্ত পণ্য সর্বোচ্চ ৭ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার পদ্মাসেতুর জাজিরা প্রান্তে দেখা গেছে, সেতুর মুল টোল প্লাজার ১০০ মিটার সামনেই প্রস্তুত করা হয়েছে ওয়েস্কেল। একটি বালু ভর্তি ট্রাক বারবার ওয়েস্কেল অতিক্রম করছে এবং পুনরায় ফিরে আসছে। ওজন বা গতি বেশি হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাইরেন বেজে উঠছে। ডিজিটাল ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করছে যানবাহনের প্রকৃত ওজন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস বলেন, ওয়েস্কেল বসানোর কাজ পুরাপুরি শেষ। জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে সফল পরীক্ষা হয়েছে। বেশি ওজনের যানবাহন পদ্মাসেতু পারাপারের সুযোগ থাকবে না।