নিজ কর্মক্ষেত্রে স্মার্ট হতে যেভাবে ব্যবহার করবেন চ্যাটজিপিটি

নিজ কর্মক্ষেত্রে স্মার্ট হতে যেভাবে ব্যবহার করবেন চ্যাটজিপিটি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি স্পেশাল

আগস্ট ২৯, ২০২৩ ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি টেক জায়েন্ট আইবিএমের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অরবিন্দ কৃষ্ণ সিএনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, চ্যাটজিপিটি ও গুগল বার্ডের মতো জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলগুলো শুধু মানুষের কর্মদক্ষতাই বাড়াবে না, হোয়াইটকালার জবে অফিসের কাজগুলোকে আরো সহজ ও দ্রুততার সঙ্গে সমাধানে সাহায্য করবে।

অরবিন্দ কৃষ্ণের এ ভাবনা ফেলে দেওয়া যায় না। কারণ নিত্যনতুন সব প্রযুক্তিই আসছে মানুষকে সহায়তার জন্য। যারা এ প্রযুক্তিগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারছেন, তারাই আগামী পৃথিবীতে এগিয়ে থাকবেন। তাই চ্যাটজিপিটিকে ভয় নয় বরং একে ব্যবহার করে নিজ কর্মক্ষেত্রে স্মার্ট হয়ে ওঠাই এখন আসল কাজ।

স্পষ্ট করে বলতে গেলে, চ্যাটজিপিটি কর্মক্ষেত্রে মানুষকে প্রতিস্থাপন করবে- এরকম সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিশেষ করে মানুষের যে চেতনা বোধ ও মানসিক দক্ষতা, তা এআই রপ্ত করতে পারেনি। অপরদিকে, চ্যাটজিপিটিকে ব্যবহার করে কম সময়ে বেশি কাজ করা সম্ভব। তাই নিজ কর্মক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি আপনার শত্রু নয় বরং সহায়ক।

জেনে নিন কর্মক্ষেত্রে বা অফিসের কোন কোন কাজগুলোতে চ্যাটজিপিটি আপনাকে সাহায্য করতে পারে-

মিটিংয়ের সার-সংক্ষেপ তৈরি

ধরুন, আপনাকে ‘মিটিং মিনিটস’ টুকে নেয়ার দায়িত্ব দিলেন আপনার বস। অর্থাৎ মিটিংয়ে যত আলোচনা হবে তা বুলেট পয়েন্ট আকারে সংক্ষেপে লিখতে হবে। অবশ্যই আপনি মিটিং মনোযোগ দিয়ে সব শুনবেন; কিন্তু অনেকসময় একইসঙ্গে লেখা এবং শোনা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ মিটিং আপনি কোনো এআই টুল দিয়ে রেকর্ড করে লিখিত আকারে চ্যাটজিপিটিকে দিতে পারেন। চ্যাটজিপিটি আপনার হয়ে মিটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সার সংক্ষেপ করে দিতে পারবে।

ডাটা বিশ্লেষণ

ডাটা নিয়ে যারা কাজ করেন যারা, তারা অসংখ্য ডাটার ভিড়ে অনেক সময় সঠিক তথ্য তুলে আনতে পারেন না। এখানে চ্যাটজিপিটি আপনাকে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও মূল্যায়নে সাহায্য করবে। যেমন, মাইক্রোসফট এক্সেল থেকে কোনো টেবিল যদি আপনি চ্যাটজিপিটিতে ইনসার্ট করেন তখন সেই ডাটা থেকে আপনাকে তথ্যবহুল রিপোর্ট তৈরি করে দিতে পারবে।

ই-মেইল ও দরকারি বার্তা লেখা

শুধু অফিসের অভ্যন্তরীণ না, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ ও ই-মেইল এবং বিশেষ বার্তা বা পিআর তৈরি করতে সহায়ক হতে পারে এআই। যারা অফিসের জনসংযোগ, মানবসম্পদ ও ক্লায়েন্ট সার্ভিস বিভাগে কাজ করেন, চ্যাটজিপিটি এসব ক্ষেত্রে তাদের কাজকে আরো সহজ করে তুলতে পারে। চ্যাটজিপিটিকে নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে দিলে সে কাস্টোমাইজড মেইল তৈরি করে দেবে। এমনকী চ্যাটজিপিটির ভাষাও আপনি নির্ধারণ করতে পারবেন।

অনুবাদও করিয়ে নেয়া যাবে

চ্যাটজিপিটি আপনার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কোনো বার্তা অনুবাদও করে দিতে পারবে। এতে করে কয়েক ক্লিকেই বিভিন্ন ভাষাভাষীর গ্রাহকদের একই উত্তর দেওয়া যাবে।

শিডিউল তৈরি ও ব্যবস্থাপনা

একটা ব্যস্ত কর্মময় দিনকে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করা না গেলে রুটিন-জট বেধে যেতে পারে। তাই শিডিউল তৈরি করার জন্য নিতে পারেন চ্যাটজিপিটির সাহায্য। আপনি আপনার দিনের কাজের একটা বর্ণনা দিতে পারেন চ্যাটজিপিটিতে, শিডিউলের সময় কতক্ষণ হবে তা-ও উল্লেখ করতে হবে। আপনার দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে চ্যাটজিপিটি একটা কার্যকরি শিডিউল তৈরি করে দেবে।

কনটেন্ট নির্মাণ

চ্যাটজিপিটি আপনার হয়ে ব্রেইন স্টর্মিং করে দেবে, খোঁজ দেবে ট্রেন্ডে থাকা বিষয়ের। এমনকি এটা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের কাজ যেমন- লিংব বিল্ডিং ও কি-ওয়ার্ড গবেষণার কাজে সাহায্য করতে পারে। মনে রাখবেন, এআই দিয়ে তৈরি কন্টেন্ট প্রকাশ করার আগে অবশ্যই তথ্যের সত্যতা যাচাই করে নিতে হবে। কারণ চ্যাটজিপিটি দুর্দান্ত এক লেখার সরঞ্জাম হলেও- লেখকের প্রতিস্থাপন নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *