ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চল দখলের লড়াই আরও তীব্র রূপ নিয়েছে। এই মুহূর্তে শহরগুলোর রাস্তায় রাস্তায় প্রচণ্ড লড়াই চলছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান লড়াইয়ে ইতোমধ্যে এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। এছাড়া সেভেরোদোনেৎস্ক ও লিসিচানস্ক নামে গুরুত্বপূর্ণ দুটি শহর ঘেরাও করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। খবর এএফপির।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর তথ্য মতে, রোববার (২৯ মে) দোনবাসের দোনেৎস নদীর পূর্ব তীর ধরে সেভেরোদোনেৎস্ক শহর এলাকায় ধ্বংসাত্মক অভিযান চালিয়েছে রুশ বাহিনী।
লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সের্গি গাইডে জানিয়েছেন, লিসিচানস্ক শহরের পরিস্থিতি খুবই বাজে আকার ধারণ করেছে।
তিনি আরও জানান, রুশ বাহিনীর ছোড়া গোলা একটা আবাসিক ভবনে আঘাত হেনেছে। এতে তরুণী নিহত হয়েছে। আরও চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে দোনবাস কখনো ইউক্রেন বাহিনীর কাছ থেকে হাতছাড়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শনিবার (২৮ মে) রাতে নিয়মিত ভিডিও ভাষণে দৃঢ় কণ্ঠে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া লিমান দখল করেছে এবং সেভেরোদোনেৎস্ক শহরে আঘাত করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান প্রতিরক্ষা পরিস্থিতি যতটা সামর্থ্য রাখে’, সে অনুযায়ী ইউক্রেন তার ভূমি রক্ষা করছে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘যদি দখলকারীরা মনে করে যে, লিমান বা সেভেরোদোনেৎস্ক তাদের হবে, তবে তারা ভুল।দোনবাস ইউক্রেনীয়দেরই হবে।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। দেশটির রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। যুদ্ধে দুই পক্ষেরই ব্যাপক প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ। আর অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৮০ লাখের বেশি মানুষ।
রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের শহরগুলো ঘিরে রেখেছে রুশ সামরিক বাহিনী। হামলা চলছে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভেও। এদিকে অভিযানের তিন মাসেরও বেশি সময় পর যুদ্ধ থামাতে রাশিয়া ও ইউক্রেনকে সরাসরি আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি ও ফ্রান্স।
শনিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক ফোনালাপকালে এ আহ্বান জানান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো।
চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে ভারী অস্ত্র সহায়তা অব্যাহত রাখলে জার্মানি ও ফ্রান্সের কপালেও দুঃখ আছে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে পুতিন বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব যদি অস্ত্র সরবরাহ করেই যায় তাহলে ইউক্রেনের পরিস্থিতি কখনোই স্থিতিশীল হবে না। সেখানকার মানবিক বিপর্যয় আরও ঝুঁকিতে পড়বে।
তবে ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের ক্ষতি করা রুশ বাহিনীর লক্ষ্য নয় বলেও জানান পুতিন। তার দেয়া শান্তি আলোচনার প্রস্তাব ইউক্রেন ফিরিয়ে দিয়ে বড় ভুল করেছে বলেও সাফ জানিয়ে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট।