দুই বিশ্বসেরা মেসি এমবাপ্পের শেষ লড়াই

দুই বিশ্বসেরা মেসি এমবাপ্পের শেষ লড়াই

খেলা

ডিসেম্বর ১৬, ২০২২ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বকাপ শুরুর আগে অধিকাংশ ফুটবলবোদ্ধার ফেভারিটের ক্রমটা ছিল এমন-ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। বিশ্বকাপ শুরুর পর চমক, অঘটনের ঘনঘটায় ফুটবল দুনিয়ায় তোলপাড়। শেষ অঙ্কে এসে সেই ফেভারিট-তত্ত্বের জয়জয়কার।

শেষ ল্যাপের স্প্রিন্টে (ফাইনাল) শেষ পর্যন্ত ফুটবলের সবচেয়ে সমৃদ্ধ দুই মহাদেশেরই প্রতিনিধিত্ব থাকছে। লাতিন আমেরিকা বনাম ইউরোপ। লুসাইলে রবিবাসরীয় স্বপ্নের ফাইনালে মুখোমুখি দুই ফেভারিট আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। সাবেক ও বর্তমান দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের লড়াইয়ের মোড়কে আসল লড়াইটা হবে দুই বিশ্বসেরা লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পের। দুই পিএসজি সতীর্থই দেশকে তৃতীয় বিশ্বকাপ জেতাতে মরিয়া।

ব্রাজিলকে বিদায় করে দেওয়া ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে সবার আগে ফাইনাল নিশ্চিত করে মেসির আর্জেন্টিনা। গত পরশু রাতে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্স ২-০ গোলে হারিয়েছে কাতার বিশ্বকাপের বিস্ময় মরক্কোকে। মারাক্কেশ রূপকথা শেষ চারে থেমে গেলেও বিশ্বকাপে নিজেদের ছাপ রেখে যাচ্ছে আফ্রিকার দলটি। এখনো তাদের সুযোগ আছে তৃতীয় হওয়ার সান্ত্বনা নিয়ে দেশে ফেরার।

শিরোপার লড়াইটা হচ্ছে আসরের সেরা দুই দলের মধ্যেই। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে আর্জেন্টিনা তিনে, ফ্রান্স চারে। দুদলই বিশ্বকাপে জিতেছে দুবার করে। এবারের আসরে দুদলই হেরেছে একটি করে ম্যাচ। এখন পর্যন্ত যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসি ও এমবাপ্পে। দুজনই করেছেন সমান পাঁচ গোল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চার গোল ফ্রান্সের অলিভিয়ের জিরু ও আর্জেন্টিনার হুলিয়ান আলভারেজের। সবই কি কাকতাল!

এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের দৃশ্যমান দুর্বলতা রক্ষণ। আর শক্তি স্কোয়াডের গভীরতা। কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে এমবাপ্পে গোল না পেলেও ফ্রান্সের জয় আটকায়নি। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার বড় শক্তি ৩৫ বছর বয়সেও তারুণ্যের দ্যুতি ছড়ানো মেসি।

পাঁচ গোল করে এবং তিনটি করিয়ে আর্জেন্টিনার পাঁচ জয়ের চারটিতেই মেসি হয়েছেন ম্যাচসেরা। আবার অধিনায়কের ওপর অতি নির্ভরতাই আর্জেন্টিনার বড় দুর্বলতা। নিজেদের আগের পাঁচটি বিশ্বকাপ ফাইনালের তিনটিতে হেরেছে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স হেরেছে তিন ফাইনালের একটিতে। ইতালি ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় দল হিসাবে টানা দুটি বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি তাদের সামনে।

১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসরে আর্জেন্টিনার কাছে ১-০ গোলে হেরে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল ফ্রান্স। ১৯৭৮ বিশ্বকাপেও একই গল্প। সেবার প্রথম রাউন্ডে মিশেল প্লাতিনির ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারানো আর্জেন্টিনা শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বিশ্বকাপে দুদলের তৃতীয় ও সবশেষ সাক্ষাৎ গত আসরে।

সেবার এমবাপ্পের জোড়া গোলে ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিতে হয় মেসিদের। বিশ্বকাপে ৩৬ বছরের শিরোপা খরা ঘোচানোর অভিযানে মেসিরা তাই প্রতিশোধের মন্ত্র জঁপেই নামবেন। সেটা মাথায় রেখেই ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম বলেছেন, ‘চার বছর আগের আর্জেন্টিনা আর এই দলটা এক নয়। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে আছে মেসি। তাকে থামাতে মানুষের পক্ষে যা যা করা সম্ভব, আমরা তাই করব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *