ঢাবি ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু হৃদরোগে নাকি আত্মহত্যা!

দেশজুড়ে

এপ্রিল ৭, ২০২৩ ২:৩৮ অপরাহ্ণ

তন্বী ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাবিল হায়দারের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ২৫ বছর।

বন্ধুর বাসায় রাতে ঘুমালে সকালে জেগে না উঠায় তাকে জরুরীভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে ‘বিদায়’ লিখে ভাঙা চশমার ছবি দিয়ে পোস্ট করার পরেই আজ সকালে তার মৃত্যু হলো। ফলে তার বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে এমন মৃত্যু রহস্যের জন্ম দিয়েছে। তারা নাবিলের এমন মৃত্যুকে স্বাভাবিকের চেয়ে বরং আত্মহত্যা বলেই মনে করছেন। তবে ডাক্তার তার স্বাভাবিক মৃত্যু ঘোষণা করেছেন বলে দাবি করেছেন নাবিলের বড় ভাই ও মামা।

নাবিল রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি ভোলা জেলায়। সে ঐতিহ্যবাহী মানিকা শানু মিয়া বাড়ির বড় মানিকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি জসীমউদ্দীন হায়দারের ছোট ছেলে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাবিল বেশ কয়েক বছর ধরেই লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারীর ৩ তারিখ সে খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার ছোট ভাইয়েরা ঢাবির অ্যাম্বুলেন্সে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরে ৩-৪ ঘন্টার জরুরী চিকিৎসা শেষে নাবিল কিছুটা সুস্থ হলে তাকে হাসপাতাল থেকে হলে নিয়ে আসা হয়। তিনি থাইল্যান্ডে চিকিৎসা চালানোর জন্য নিয়মিত ক্লাসও করতে পারছিলেন না।

নাবিলের শুভাকাঙ্ক্ষী, ছোট, বড় ভাইদের মতে নাবিল ছিলেন অত্যন্ত অমায়িক, ছাত্রলীগের প্রতি অসীম ত্যাগী, শিশুসুলভ আচরণ ও হাসিমাখা মুখের একজন ছিলেন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, আমি নাবিলের সাথে গতকাল পরীক্ষার হলেও কথা বলেছি। তাকে জিজ্ঞেস করলাম কেন সে নিয়মিত ক্লাসে আসে না। সে জানালো সে অসুস্থ এবং দেশের বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে সুস্থ অবস্থায়ই দেখেছি।’ হঠাৎ এমন সংবাদ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সকলকে মর্মাহত করেছে।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. ইকবাল রওফ মামুন বলেন, আমি সকালে খবর পেয়ে হাসপাতালে যাই। তার পরিবারের সাথে কথা বলে শান্তনা দেই। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে মামা ও ভাই তার লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে তার গ্রামে নিয়ে যায়। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল পরিবার তার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত।

নাবিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, নাবিলে বন্ধুদের কাছ থেকে আত্মহত্যার বিষয়টি জানতে পেরেছি। ওর মধ্যে কিছু সমস্যা ছিল। ছেলেটা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। সকালে ওর প্রথম জানাজা সেন্ট্রাল মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারপর মরদেহ নিয়ে ভোলাতে রওয়ানা দিয়েছে। আগামীকাল সকাল সাড়ে দশটায় সেখানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *