ঢাকায় দিন যায় যানজট বাড়ে, সমাধান কতদূর

ঢাকায় দিন যায় যানজট বাড়ে, সমাধান কতদূর

জাতীয় স্লাইড

এপ্রিল ৪, ২০২৪ ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

দিন যাচ্ছে যানজটে স্থবির হচ্ছে রাজধানী ঢাকা। এই যানজট এড়াতে ভুরি ভুরি পদক্ষেপ নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন, রাজউক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা। নেয়া হয়েছে মেগাপ্রকল্পও। এরই মধ্যে মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা পাচ্ছে নগরবাসী। তবে এর বাইরের সড়কগুলোর অবস্থা আগের মতোই। যানজটে নাকাল অবস্থা সেসব সড়কের। এটি থেকে পরিত্রাণের পথ বের করতে পারছে না ট্রাফিক পুলিশও। সড়কে নানা পরিকল্পনার পরিবর্তন, ফ্লাইওভার নির্মাণসহ বহুমুখী প্রচেষ্টার পরও জনভোগান্তি রয়ে গেছে আগের মতোই।

সকালে অফিসগামী মানুষের রুদ্ধশ্বাস ছোটাছুটি। গন্তব্যে যেতে যানবাহন পেতেই সময় চলে যায় অনেকটা। এরপর যানবাহন চলে কচ্ছপের গতিতে। আধা ঘণ্টার পথ যেতে নিয়মিতই লেগে যায় ঘণ্টার বেশি। এ চিত্র সারা বছরের। তবে তা আরো অসহনীয় হয়ে ওঠে যেকোনো উৎসব-পার্বণ ঘিরে। দুয়ারে যখন ঈদুল ফিতর কড়া নাড়ছে, এমন সময় রাজধানীর প্রতিটি সড়ক ও মোড়ে যানজটও বেড়েছে কয়েকগুণ। এতে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। তারপরও তাদের ছুটে চলা থেমে নেই। এ সময়ে রাস্তায় সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে ঈদের কেনাকাটা করতে বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে যাওয়া মানুষদের।

ঢাকায় বুধবার সকালে দেখা যায়, প্রধান সড়কের প্রায় প্রতিটিতে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। সড়ক সংযোগগুলোতে জট লেগে গাড়ি থেমে আছে দীর্ঘ সময়। কেন এ যানজট, সে প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব নেই কারো কাছে।

ঢাকায় দিন যায় জ্যাম বাড়ে

ঢাকায় দিন যায় জ্যাম বাড়ে

মিরপুরের কচুক্ষেতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন গাজী রুম্মান ওয়াহেদ। আসেন পুরান ঢাকার বংশাল থেকে। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের জ্যাম আর নতুন কী? এটা প্রতিদিনের ঘটনা। বিলম্বের ভয়ে সকালে বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হই অন্তত দুই ঘণ্টা আগে। এই যানজট মেনে নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছি না।

সেলিম মিয়া ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, যা বেতন পান তাতে পরিবার নিয়ে কোনোরকম চলে তার। প্রতিদিন কল্যাণপুর থেকে সদরঘাটে যাওয়া-আসা করতে হয় তাকে। তিনি বলেন, রাস্তায় প্রচুর যানজট। বাসে বসে থাকতে থাকতে খুব ক্লান্ত লাগে। বিরক্ত হয়ে যাই। কাজ শেষে বাসায় ফিরে পরিবারকে যে একটু সময় দেবো সেটা আর হয়ে ওঠে না। জ্যামেই পুরো সময় চলে যায়।

সাধারণত একটি শহরের রাস্তার পরিমাণ হওয়া উচিত সেই শহরের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ, অর্থাৎ চার ভাগের এক ভাগ। অথচ ঢাকায় মোট রাস্তার পরিমাণ আয়তনের মাত্র ৮ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিকল্পিত ব্যবস্থার মাধ্যমে এই ৮ শতাংশ রাস্তা দিয়েও ঢাকার যানজট নিরসন করা সম্ভব।

যোগাযোগ বিশেজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীতে ছোট ও ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এসব গাড়ি সড়কের বেশিরভাগ জায়গা দখলে রাখছে। দক্ষ লোকবল দিয়ে যোগাযোগ খাত পরিচালনা না করাসহ নানাবিধ কারণে ঢাকার যানজটের এ করুণ অবস্থা। যে হারে যানজট বাড়ছে এখনই সমন্বিত পরিকল্পনা না নিলে অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। যানজটে আরো স্থবির হয়ে পড়বে পুরো ঢাকা শহর।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প—

জনবহুল এ শহরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে প্রকল্প হাতে নেয়ার এক দশকেরও বেশি সময় পর গত বছরের (২০২৩ সাল) ২ সেপ্টেম্বর বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করা হয়। ৩ সেপ্টেম্বর থেকে এ অংশে যান চলাচল শুরু হয়। বিদেশি বিনিয়োগে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) আওতায় পরিবহন খাতে এটিই প্রথম প্রকল্প।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে- ফাইল ফটো

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে- ফাইল ফটো

সম্পূর্ণ এক্সপ্রেসওয়ে অর্থাৎ তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত চলতি বছরের (২০২৪ সাল) জুনে চালুর লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। পুরো উড়ালসড়কে ৩১টি স্থান দিয়ে যানবাহন ওঠানামা (র‌্যাম্প) করার ব্যবস্থা থাকছে। কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশে ওঠা-নামার জন্য মোট ১৫টি র‌্যাম্প রয়েছে। এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার যান ও বাইসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্য যানবাহন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে চলতে পারবে। মূল এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। র‌্যামসহ এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

তবে এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যক্তিগত যানবাহন তথা প্রাইভেটকার চলাচল বেশি হওয়ায় বাসের যাত্রীরা তেমন একটা সুফল পাচ্ছেন না।

সরেজমিনে দেখা যাচ্ছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি নেই, তবে তার ঠিক নিচের সড়কে যানজটে আটকা পড়ে আছে শত শত গাড়ি৷

মেগা প্রকল্প মেট্রোরেল—

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর সরকারের আরেক মেগা প্রকল্প মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন হয়। ঐদিন সর্বপ্রথম মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। পরদিন ২৯ ডিসেম্বর থেকে এ অংশটি সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর মেট্রোরেলের দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন হয়৷ ঐদিন আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন হয়। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মেট্রোরেল নির্মাণ করছে এবং এ প্রকল্পে সহজ শর্তে ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিয়েছে।
মেট্রোরেলে যাত্রীদের চাপ

মেট্রোরেলে যাত্রীদের চাপ

মেট্রোরেল চালুর পর সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছেন মিরপুর এবং উত্তরার বাসিন্দারা৷ আগে যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকতে হতো, এখন সেই পথ খুব সহজে ও অল্প সময়ে পাড়ি দেওয়া যাচ্ছে। আধা ঘণ্টারও কম সময়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল পৌঁছাতে পারছে মানুষ।

মিরপুর থেকে প্রতিদিন সচিবালয় এলাকায় যাতায়াত করেন মামুন কবীর৷ তিনি বলেন, মেট্রো চালুর আগে প্রেসক্লাব পর্যন্ত আসতে দেড়-দুই এমনকি তিন ঘণ্টাও লেগে যেতো। এখন খুব সহজে অল্প সময়ে চলে আসতে পারি। মেট্রো আমাদের জীবন অনেক সহজ করে দিয়েছে৷

তবে উল্টো চিত্র রাজধানীর অন্য সড়কগুলোতে। সেসব সড়কে যানজটে নাকাল নগরবাসীকে এখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামেই কাটাতে হয়।

যানজটের প্রভাব পড়ে জিডিপিতে—

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুধু ঢাকার যানজটের কারণেই বছরে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৯ শতাংশে। অপরিকল্পিত নগর সম্প্রসারণের পরোক্ষ ক্ষতির হিসাব যুক্ত হলে এ ক্ষতি জিডিপির ৬ শতাংশের বেশি হয়। গবেষণা প্রতিবেদনটিতে নগরে অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপের বিষয়টিও উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের মোট জনসংখ্যার ১১ দশমিক ২ শতাংশই বাস করে ঢাকায়, যা এ অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ। চীনের বৃহত্তম শহর সাংহাই, যেখানে দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশের বাস। প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রধান শহরে বাস করে দেশটির জনসংখ্যার ২ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ভিয়েতনামে তা ৮ দশমিক ১ শতাংশ।

ঢাকা দিন দিন কমছে গাড়ির গতিবেগ—

২৫ বছর আগেও ঢাকায় প্রতি ঘণ্টায় গাড়ির গতিবেগ ছিল ২৫ কিলোমিটার, এখন সেটা কমতে কমতে ৩-৪ কিলোমিটারে নেমেছে। এটা কন্টিনিউয়াসলি নিচের দিকে যাচ্ছে। গুগল বলছে এটা শূন্যে নেমে যাবে। এর মধ্যে অনেক বিনিয়োগও হয়েছে। কিন্তু কার্যকর কোনো সুরাহা হয়নি। উন্নয়ন যা হয়েছে তা খণ্ডিত। যারা উন্নয়ন বড় করে দেখছেন সিস্টেম সম্পর্কে তাদের ন্যূনতম ধারণা নেই। যানজট নিরসনে বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধান জরুরি।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর এখন ঢাকা। ১৫২টি দেশের এক হাজার ২০০টির বেশি শহরের যান চলাচলের গতি বিশ্লেষণ করে এ চিত্র তুলে আনা হয়েছে। যান চলাচলে এ ধীরগতির নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে গোটা দেশের অর্থনীতিতেও।

ক্ষতি করছে পরিবেশ ও শরীরের—

ঢাকার সড়কে যানজট

ঢাকার সড়কে যানজট

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) প্রতিবেদন বলছে, ঢাকায় বসবাসকারী জনগণকে সড়কে প্রতি দুই ঘণ্টায় যানজটে বসে কাটাতে হয় ৪৬ মিনিট। বছরে জনপ্রতি গড়ে ২৭৬ ঘণ্টা নষ্ট হয় যানজটের কবলে।

রাজধানীর যানজট পরিস্থিতি বুঝতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই) ২০২০ সালের জুলাইয়ে একটি গবেষণা করে৷ যেখানে যানজটের ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে। ঐ গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকার সড়কে গাড়ির গতিবেগ ঘণ্টায় ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। অথচ একজন সুস্থ মানুষ হেঁটে ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারেন।

গবেষণায় যানজটের কারণে ক্ষতির দিক হিসেবে কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়া, অতিরিক্ত জ্বালানি অপচয়, পরিবেশের ক্ষতি, সড়কের কাঠামোগত ক্ষতি এবং দুর্ঘটনা- পাঁচটি বিষয়কে বিবেচনায় নেয়া হয়েছিল।

গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটির মতো ট্রিপ তৈরি হয়। এই দুই কোটি ট্রিপের মধ্যে বড় অংশ হলো অফিসগামী৷

যানজটের কারণে প্রতিদিন ঢাকার মানুষের ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। জ্যামে বসে থেকে পরিবহনের অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ জ্বালানি খরচ হচ্ছে। গাড়ি রাস্তায় জ্যামে আটকা থাকার সময় কার্বন-ডাই-অক্সাইডসহ বিভিন্ন বিষাক্ত গ্যাস পরিবেশ দূষিত করছে। ফলে অনেক মানুষ ফুসফুসজনিত রোগে ভুগছে। শুধু এ কারণেই প্রতিদিন ঢাকার মানুষকে অতিরিক্ত ওষুধ সেবন করতে হচ্ছে। যার দৈনিক মোট মূল্য ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা। এছাড়া যানজটে দীর্ঘ সময় গাড়ি আটকে থাকার কারণে সড়কের আয়ুষ্কাল ১৮-৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাচ্ছে। এজন্য রাস্তা বারবার মেরামত করার প্রয়োজন হচ্ছে। এছাড়া যানজটের কারণে দুর্ঘটনাও বাড়ছে। কেননা গাড়ি দীর্ঘ সময় জ্যামে থাকার পর সিগন্যাল ছাড়লে চালকদের মধ্যে আগে ও দ্রুত যাওয়ার প্রবণতা থাকে। তখন পথচারীরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হন৷

গবেষণার তথ্য মতে, ঢাকায় দুর্ঘটনার শিকার ৬০ শতাংশই পথচারী। সব মিলিয়ে যানজটের কারণে ঢাকায় দৈনিক ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে, যা বছরে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকার মতো। ২০১৭ সালেও এ ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩৭ হাজার কোটি টাকা।

বুয়েটের ঐ গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তৎকালীন পরিচালক প্রফেসর ড. মো. হাদিউজ্জামান গণমাধ্যমে বলেন, রাজধানীতে পলিসি সাপোর্ট লাগবে। শুধু অবকাঠামো তৈরি করে ঢাকার যানজট নিরসন করা সম্ভব নয়। অবকাঠামো তৈরি করে যতটা না সড়কের সক্ষমতা বাড়ছে তার চেয়ে যানবাহনের সংখ্যা বেশি বাড়ছে। দিনে গড়ে ঢাকা শহরে ৫০টির বেশি ব্যক্তিগত গাড়ি এবং এক হাজারটির বেশি মোটরসাইকেল বাড়ছে। অন্য যানবাহনও ঢাকার সড়কে নামছে। যানবাহনের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে, এর কোনো বিকল্প নেই৷ ফিটনেসবিহীন গাড়ি যানজট, বায়ুদূষণ ও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এ গাড়িগুলো সড়ক থেকে বের করে ফেলতে হবে।

রাজধানীতে যানজট- ফাইল ফটো

রাজধানীতে যানজট- ফাইল ফটো

তিনি আরো বলেন, মেট্রোরেল পুরোপুরি চালুর ফলে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করছে। সে হিসাবে আরো ৮৮ শতাংশ যাত্রী রয়ে গেছে। তাদের নিয়ে এখন চিন্তা করা দরকার। এখনই ঢাকার ৪০ শতাংশ মানুষ গণপরিবহন ব্যবহার করে। গণপরিবহনের গুণগত মান ভালো এবং চাহিদার বিপরীতে জোগান নিশ্চিত করা গেলে ৫৫ শতাংশ মানুষ তাতে চড়বে।

ঢাকা থেকে রাজধানী বা প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ড. হাদিউজ্জামান বলেন, এমন অনেক অফিস আছে যেগুলো ঢাকায় থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণটা খুব জরুরি। এভাবে জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপ কমিয়ে আনতে পারলে যানজট কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।

তবে পরিবহন সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরগুলোতে পেশাদার লোকবল না থাকার কারণে যানজটের এ সংকট তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল হক।

তিনি বলেন, পেশাদার লোকবল খুব প্রয়োজন। অথচ এ খাত অপেশাদার লোকে ছেয়ে গেছে। যারা সমস্যা তৈরি করতে পারে, কিন্তু সমাধান করার সক্ষমতা তাদের নেই এবং পেশাদারিত্বও নেই। ফলে সমস্যাটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *