জুয়ার বোর্ড মালিকের দম্ভোক্তি, খেলা চালাবো পারলে বন্ধ করেন

জুয়ার বোর্ড মালিকের দম্ভোক্তি, খেলা চালাবো পারলে বন্ধ করেন

দেশজুড়ে

জানুয়ারি ৭, ২০২৩ ২:৫৬ অপরাহ্ণ

মুরাদ শাহ জাবাল, ঝিনাইগাতী (শেরপুর)

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের তাওয়াকোচা সীমান্তে পাহাড়ি এলাকায় অবাধে জুয়াখেলা চলছে। এ জুয়ার আসরে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শতশত জুয়ারি অংশ নিচ্ছে।

জানা গেছে, কাংশা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যের ছেলে আল আমীন দীর্ঘদিন ধরে এ জুয়ার আসরটি পরিচালনা করে আসছে। কাংশা ইউনিয়নবাসী তাকে এক নামে চিনেন যদি বলা হয় কুক্ষ্যাত জুয়ারি আল আমীন। তার নেতৃত্বে তাওয়াকোচা গভীর অরণ্যে ভারত সীমান্তের কাছে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে জুয়ার আসর।

তাওয়াকোচা গ্রামের ইউপি সদস্য রহমত আলীসহ গ্রামবাসীরা জানান, এখানে ফর বসিয়ে প্রতিদিন শতশত জুয়ারি কোটি টাকার জুয়া খেলায় মেতে উঠেন। এখানে জুয়ার আসরের পাশাপাশি চলে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ নারীদের দেহ ব্যবসা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পতিতা এনে জুয়া খেলার পাশাপাশি চলে মনোরঞ্জন। এ জুয়ার আসরে বসে শতশত মানুষ স্বর্বস্ব খুইয়ে পথে বসার উপক্রম হযেছে।

জানা গেছে, জুয়া খেলা নিরাপত্তার জন্য পথেপথে বসানো হয়েছে পাহাড়াদার। থানা পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে কেউ ঘটনাস্থলে রওনা হলে সংকেতিক সব্দ ব্যবহার করে জুয়া খেলা ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। ফলে পুলিশের লোক অভিযান চালিয়ে কোন জুয়ারিকে গ্রেপ্তার করতে পারেন না।

স্থানীয়দের অভিযোগ কয়েক দিন লাগাতার এক পাহাড়ে জুয়ার বোর্ড চালানোর পর পাহাড় পরিবর্তন করে অন্য পাহাড়ে বসানো হয়। ঝিনাইগাতী সীমান্তে জুয়া খেলা বন্ধের বিষয়ে পুলিশের অভিযান জোরদার করা হলে তখন শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্ত পাহাড় খাড়ামুড়া, বালিজুরি ও কর্নঝোড়া পাহাড়ে বসানো হয় জুয়া খেলা।

গত ৩ জানুয়ারি কয়েক জন মিডিয়া কর্মি জুয়া খেলার সন্ধানে গুপ্ত পথে পাহাড়ে প্রবেশ করার সময় পাহাড়াদার সংকেতিক সব্দ ব্যবহার করে খেলাটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সাংবাদিকদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ছোটাছুটি করে জিয়ারিরা পালিয়ে যায়। এসময় শেরপুর সদর উপজেলার কুসুমহাটি এলাকার হারুন নামে একজন জুয়ারি দৌড়ে পালানোর সময় পা পিছলে পড়ে যায়। পরে হারুনের দেয়া তথ্যমতে আল আমীন দীর্ঘদিন ধরে এখানে জুয়ার আসর বসিয়ে অবাধে খেলা চালিয়ে আসছে।

হারুনের কাছ থেকে পাওয়া যায় আল আমীনের মোবাইল নাম্বার। পরে আল আমীনকে ফোন দিয়ে কার অনুমতি নিয়ে এখানে জুয়া খেলা হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে সে বলে আপনারা জুয়ার আসরে কেন গেলেন? আর এখন আমাকে কেন ফোন দিলেন ? আপনার মতো অনেক সাংবাদিকতো আমাকে ফোন দেয়। আমার সাথে দেখা করেন।

এ সময় তাকে বলা হলে আমি অন্য সাংবাদিকের মতো এতো বড় সাংবাদিক নই । একারনে আপনার নিকট ফোন দেইনি। উত্তোরে আল আমীন দম্ভোক্তি দেখিয়ে বলে উঠে, আমি জুয়ার আসর চালাবো। পারলে আপনি বন্ধ করবেন?

ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল আলম ভূইয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন পাহাড়ে একটি জুয়ার আসর বসানো হয়। কয়েকদিন পুলিশ পাঠিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে জুয়ারিরা দ্রুত পালিয়ে যায়। তবে জুয়ারি গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *