জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে শুরু হতে চলেছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ

দেশজুড়ে

ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩ ৭:০৯ অপরাহ্ণ

মোঃ আব্দুল হান্নানঃ-

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিঃমিঃ উত্তরে,হাওড় বেষ্টিত অঞ্চল নাসিরনগর উপজেলা।নির্বাচনের বাতাস বইতে শুরু করলেই এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়ন পেতে তৎপরতা শুরু করেন মৌসুমি প্রার্থীরা।ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের এ উপজেলায় এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর আগেও মাঠে দেখা যাচ্ছে এসব নেতাদের । তবে দীর্ঘদিন যাবৎ আওয়ামী লীগের দখলে থাকা এ আসনে এবারও লড়াইটা হবে পুরোনো নেতাদেরই মাঝে।

স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে সবাই যাঁর যাঁর মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপিতে দেশের একজন প্রতিষ্ঠিত এক ব্যবসায়ী বেশি আলোচনায় থাকলেও এবার রয়েছে একাধিক প্রার্থী।এবার আওয়ামী লীগেও একাদিক প্রা্র্থীর কথা শোনা যাচ্ছে। জাতীয় পার্টি (জাপা) ও ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী। এর মধ্যেই ভেতরে-ভেতরে নিজেদের গোছাচ্ছে বড় দুই দল। আওয়ামী লীগ এবারও আসনটি ধরে রাখতে আর বিএনপি তাদের দখলে নিতে চায়।
এ আসনে পাঁচবার এমপি ছিলেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডঃ ছায়েদুল হক। এর মধ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে টানা ৪বার। তিনি ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর মারা যাওয়ার পর ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা দম্পতির সন্তান বি,এম মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম এমপি নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনিই আবার দ্বিতীয় বারের মত এমপি হন।

নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগ,অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সাংগঠনিকভাবে মজবুত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে এমপি সংগ্রাম। তিনি এমপি হওয়ার পর নাসিরনগরের উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছেন।প্রতিটি গ্রামে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বার্তা নিয়ে ছুটে চলেছেন এমপি।করছেন গণসংযোগ ও কর্মী সমাবেশ।

অপরদিকে বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দীয় অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নাজির মিয়া এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। নাজির মিয়া দীর্ঘ দিন ধরে নাসিরনগরের বিভিন্ন গ্রামে জনগণের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।তিনি বেশ কিছু গরীব ও অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করে চলেছেন।তার স্ত্রী রোমা আক্তার উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও তার শ্যালক গোলাম মোঃ আরমান নুর ও উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।তাছাড়া মনোনয়ন চাইতে পারেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম মনিরুজ্জামান সরকার, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ এহসান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ কে এম আলমগীর,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজি্ুর রহমান ফাউন্ডেশনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডঃ রাখেশ চন্দ্র সরকার,বাংলাদেশ আওয়ামী প্রজন্ম লীগের সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ইহ তেশামুল কামাল প্রমুখ।

নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অসীম কুমার পাল বলেন, আমাদের কাছে যেহেতু এখন পর্যন্ত অন্য কোনো প্রার্থী আসেননি, শুধু বর্তমান এমপি বি,এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম মাঠে রয়েছেন। তাঁর জন্যই আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাছে মনোনয়ন চাইব।’

এ আসনে কখনো বিএনপি জয়ী হতে পারেনি। সাংগঠনিকভাবেও দলটি মজবুত নয়। তবে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান সুখন বেশ কয়েকবার প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ব্যবসায়ী হওয়ায় সারা বছর টাকা খরচ করে দলটিকে সক্রিয় রেখেছেন। দলের পেছনে তিনি প্রচুর টাকা খরচ করলেও ভোটের রাজনীতিতে তিনি তেমন ভালো করতে পারেননি। এবারও বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন এ নেতা। এ ছাড়াও এবার আলোচনায় রয়েছেন নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ কামরুজ্জামান মামুন।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নান বলেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রামে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে আছি। দলের কাছে আমিও মনোনয়ন চাইব। দল যে সিদ্ধান্ত নেবে তা মেনে নেব।’

এবার জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শাহানুল করিম গরিবুল্লাহ সেলিম। তিনিই এখন নাসিরনগর জাতীয় পার্টির কর্ণধার। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি।

বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সচিব অ্যাডঃইসলাম উদ্দিন দুলাল। বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের আবুল কাশেম মুহা. আশরাফুল হক, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের হুসেইন আহমদ ও জাতীয় পার্টি (বিজিবি) থেকে ফায়েজুল হক, বাসদ থেকে মনোনয়ন চাইবেন মোঃ বকুল হোসেন খান।

আসনটি হাওড়বেষ্টিত। এখন উপজেলা সদরের সঙ্গে এখনো অনেক ইউনিয়ন ও গ্রামের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নেই। ফলে হেঁটে কিংবা নৌকা চলাচল করতে হয়। ভোটারদের অনেকেই বলছেন, এলাকাটি এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। এই সরকারের আমলে অনেক কাজ হয়েছে। তবে আরও ব্যাপক উন্নয়ন দরকার। এখানে কলকারখানা স্থাপনের দাবি জানান স্থানীয় জনগণ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *