সজীব খান
মুন্সীগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা শাকিলকে গজারিয়ার ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চৌদ্দ বছর বয়সের এক কিশোরী ধর্ষিত হয়েছে। আর সেই মামলায় শাকিল (২১) নামের এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সে ছাত্রলীগ নেতা বলে জানা গেছে।
শনিবার (৮ জুলাই) ভোর রাতের দিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলা কান্দি গ্রাম থেকে পুলিশ শাকিলকে গেস্খপ্তার করতে সক্ষম হয়। রবিবার দুপুরে শাকিলকে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।
শাকিল মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সে মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে। তারা মুন্সীগঞ্জ শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের খালইস্ট এলাকার বিলাস বহুল ফ্লাটে বসবাস করে।
তাদের আদি বাড়ি হচ্ছে চরকেওয়ার ইউনিয়নের কাউয়াদি গ্রামে। শাকিলের পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, সে খুব শীঘ্রই ইউরোপে যাওয়ার কথা ছিল। সে ধরণের প্রস্তুতি চলছিল তার। মাঝ পথে এ ধরণের দুর্ঘটনায় সেই পথ এখন বন্ধ হয়ে গেল তার।
ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা জেলার একটি হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন বলে জানা গেছে। সেই সুবাদে প্রায়ই মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়া-আসা এবং মাঝেমধ্যে হাসপাতালে থাকত সে।
গেল মঙ্গলবার রাতে মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে ছিল ওই কিশোরী। ঘটনার রাতে ৪-৫ জনের সহযোগীকে নিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে যান স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা শাকিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে লোকজন কমে আসলে ওই কিশোরীকে ডেকে প্রেমের প্রস্তাব দেন শাকিল। এতে অস্বীকৃতি জানালে একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে টেনে হাসপাতালে ছাঁদে নিয়ে ধর্ষণ করেন তারা।
এ সময় বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান তারা। পরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেন ওই কিশোরী। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও সমঝোতার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত শাকিল। পরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা।
এদিকে শুক্রবার ভুক্তভোগী কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নড়েচড়ে বসে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। হাসপাতালের ভেতরে কীভাবে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটলো তা জানতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনো তদন্ত শেষ হয়নি বলে জানা গেছে। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ আবু হেনা মোস্তফা জামাল হচ্ছেন তদন্তের প্রধান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় শাকিলকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, এর পূর্বে একাধিক স্থানে অভিযান চালানো হলেও শাকিল পালিয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশের একাধিক টিম তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রাখে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এনামুল হক স্থানীয় সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।