চিকিৎসায় নোবেলজয়ী কে এই কারিকো ও ওয়েইসম্যান

চিকিৎসায় নোবেলজয়ী কে এই কারিকো ও ওয়েইসম্যান

স্বাস্থ্য স্লাইড

অক্টোবর ৩, ২০২৩ ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

প্রাণ রক্ষাকারী এমআরএনএ করোনা টিকা আবিষ্কারে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ২০২৩ সালে চিকিৎসা খাতে বিশ্বের সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন পুরস্কার নোবেল পেয়েছেন ক্যাটালিন কারিকো এবং ড্রিউ ওয়েইসম্যান।

সোমবার (২ অক্টোবর) সুইডেনের নোবেল অ্যাসেম্বলি চিকিৎসায় চলতি বছরের নোবেলজয়ী হিসেবে এই দুই বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করেছে।

যে গবেষণার জন্য কারিকো এবং ওয়েইসম্যানকে নোবেল দেওয়া হয়েছে, সেই ‘নিউক্লিওসাইড বেইজড মডিফিকেশন’ করোনা টিকা আবিষ্কারের পথ সুগম করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার দুই বিজ্ঞানী কারিকো ও ওয়েইসম্যান তাদের এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছিলেন ২০০৬ সালে।

এ দু’জনের নাম ঘোষণার সময় সুইডেনের নোবেল অ্যাসেম্বলির জুরিরা বলেছেন, ‘তাদের এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় এমআরএনএ প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে এবং তাদের গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত টিকা এরইমধ্যে বর্তমান সময়ের মানবসভ্যতার একটি বিশাল হুমকিকে আমরা প্রতিহত করতে পেরেছি।’

নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণার অনুষ্ঠানে দুই চিকিৎসাবিজ্ঞানীর সম্পর্কিত কিছু তথ্যও দিয়েছেন জুরিরা।

১৯৫৫ সালে হাঙ্গেরির সোলনক শহরে জন্ম নেওয়া ক্যাথলিন দেশটির সেগেড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীববিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর জৈব রসায়ন শাস্ত্রে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে ডক্টরেট ডিগ্রি নেন তিনি।

ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের পর হাঙ্গেরিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের অধীনে সেগেড বিশ্বিবিদ্যালয়েই পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণায় মনযোগী হন ক্যাথলিন। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ওই বিশ্ববিদ্যালয়েই ছিলেন তিনি।

পরে সে বছরই হাঙ্গেরি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান ক্যাথলিন। সেখানে দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য পেনসিলভেনিয়ার রাজধানী ফিলাডেলফিয়ার টেম্পল ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স, বেথসেডায় পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণা সম্পন্ন করার পর ১৯৮৯ নালে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এই পদে তিনি ছিলেন ২০১৩ সাল পর্যন্ত।

২০১৩ সালে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়া থেকে অবসর নেওয়ার পর জার্মানির শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি বায়োএনটেক আরএনএ ফার্মাসিউটিক্যালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট হন ক্যাথলিন। উল্লেখ্য, বিশ্বের প্রথম আরএনএ করোনা টিকা ফাইজার অ্যান্ড বায়োএনটেক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে মার্কিন কোম্পানির অংশীদার ছিল বায়োএনটেক।

২০২১ সালে ফের সেগেড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান ক্যাথলিন এবং পূর্ণাঙ্গ অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। কাছাকাছি সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিনে অতিরিক্ত অধ্যাপক হন। এখনও এ দুই পদে আছেন তিনি।

এদিকে ক্যাথলিন কারিকোর সঙ্গে যুগ্মভাবে নোবেলজয়ী ড্রিউ ওয়েইসম্যান ১৯৫৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের লেক্সিংটন শহরে জন্ম নেন। দেশটির ব্র্যান্ডিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮১ সালে এনজাইমোলজির ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি নেওয়া ওইসম্যান ১৯৮৭ সালে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুজীববিজ্ঞানে (মাইক্রোবায়োলজি) পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের পর হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অধীন বেথ ইসরায়েল ডিকোনেস মেডিকেল সেন্টার থেকে ক্লিনিক্যাল প্রশিক্ষণ ও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ থেকে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন ওয়েইসম্যান।

১৯৯৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার অধীন পেরেলম্যান স্কুল অব মেডেসিনে গবেষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। এখনও এই পদেই আছেন তিনি।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *