চালের মূল্য ঘোষণা করে চালু হবে ওয়েবসাইট: খাদ্যমন্ত্রী

জাতীয় স্লাইড

সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২ ৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ

চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে মোকাম, পাইকার ও খুচরা পর্যায়ে মূল্য ঘোষণা করা হবে। এতে কোনো একপক্ষ মূল্য বাড়িয়ে অন্যপক্ষকে দোষারোপ করতে পারবে না। এজন্য ডিজিটাল ওয়েবসাইট চালু করা হবে।

পাশাপাশি চালের বস্তায় ধানের জাত লেখা বাধ্যতামূলক এবং চালের কতটুকু ছাঁটাই করা যাবে, তা নির্ধারণ করে একটি আইন প্রণয়ন হচ্ছে। এখন খসড়া আইন ভেটিংয়ে আছে। সেখানে আরও বলা আছে, ব্র্যান্ড নাম তারা যেটাই দিক, রজনীগন্ধা দিতে পারে, গোলাপফুল, জরিনা, সখিনা-নাম যাই দিক, ধানের জাতের নাম দিতে হবে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত এক সংলাপে এ কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। মন্ত্রী বলেন, আমরা এমন একটি ওয়েবসাইট চালু করতে চাচ্ছি, যেখানে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলার মিলাররা মিলগেটের চালের দাম ঘোষণা করবেন। একইভাবে পাইকারি এবং খুচরা বাজারে চালের মূল্যও সেখানে থাকবে। আর এভাবেই চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মিল থেকে চাল খুচরা বাজারে পৌঁছানোর পর প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পার্থক্য হয়। মূল্যের এই অস্থিরতা নিয়ে পালটাপালটি দোষারোপ চলে।

অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, একশ্রেণির ব্যবসায়ীর কারণে বিভিন্ন সুযোগে চালের বাজার অস্থির হচ্ছে। কয়েকদিন আগে জ্বালানি তেলের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে চালের দাম কেজিতে বড়জোর ৭০ পয়সা থেকে ১ টাকা বাড়তে পারে। কিন্তু বাজারে প্রতি কেজিতে ৭/৮ টাকা করে বেড়ে গেছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, মিলাররা দাবি করেন, মিলগেটে দাম বাড়েনি। দাম বৃদ্ধির কথা কেউ স্বীকার করে না। তাহলে দামটা বাড়ায় কে? আসলে বাজার যে রকম অস্থির, ব্যবসায়ীদের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা অস্থিরতা সৃষ্টি করেন। তাদের কারণে বাজার পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, গমের সমস্যা হবে না। গম আসছে। জেলা পর্যায়ে ১ অক্টোবর থেকে প্রতি ডিলারকে ১ টন করে বরাদ্দ দেওয়া শুরু করব। এটা প্যাকেটজাত করা যায় কি না, তা চিন্তা করছি। এতে দাম একটু বেশি পড়বে; কিন্তু বাজারমূল্যের চেয়ে দাম অর্ধেক হবে। এতে কালোবাজারি বন্ধ হবে বলে আশা করি।

মন্ত্রী দাবি করেন, এখনো দেশে যে খাদ্যের মজুত আছে, তাতে হাহাকারের আশঙ্কা নেই। তারপরও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সরকার চাল-গম আমদানি করে রাখছে।

তিনি আরও বলেন, মিনিকেট বলে কিছু নেই। মিনিকেটের উৎপত্তি জানলে আর এই নাম দিত না। একসময় ভারত থেকে চিকন চালের বীজ আনতাম মিনি (ছোট) প্যাকেটে করে। এই হলো মিনিপ্যাক। এই বীজ থেকে আমরা নাম দিয়েছি মিনিকেট চাল। এটা বহুবার বলা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার এই মিনিকেট নাম উচ্ছেদ করতে অভিযান চালাতে পারে। আমাদের সে ক্ষমতা নেই।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চালসহ ৯ পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করার যে উদ্যোগ নিয়েছে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমি জানি না বাণিজ্যমন্ত্রী কীভাবে বলেছেন। আমার সঙ্গে এটা শেয়ার হয়নি। তবে এটুকু বলতে পারি, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম বেঁধে যে তিনি এটা ধরে রাখতে পারবেন, এটা তো সেটা নিশ্চিত নয়। আমাদের উৎপাদনের ওপর যেমন নির্ভর করে, তেমনই ক্রাইসিস মনে করলে আমদানিও করা হয়।

তিনি বলেন, উনি (বাণিজ্যমন্ত্রী) যেটা বলেছেন যে আমদানি করা পণ্যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু যেটা আমাদের দেশে উৎপাদিত হয়, যার সঙ্গে কৃষক জড়িত, উৎপাদন-পরিবহণ ব্যয়, তেলের মূল্য, কৃষককে যেমন দামটা পেতে হবে তেমনই আবার ভোক্তাদের জন্য সহনীয় হতে হবে। নিম্ন-আয়ের ভোক্তা যারা, তাদের জন্য সরকারের পরিকল্পনা তো আছেই।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাস। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *