অক্টোবর ১৪, ২০২৩ ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ
বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রমোদতরীর কথা উঠলেই আমাদের প্রায় সবারই চোখে ভেসে উঠে টাইটানিকের ছবি। প্রকাণ্ড সেই জাহাজটি তার প্রথম যাত্রায় ডুবে গিয়েছে আজ থেকে একশ বছরেরও বেশি সময় আগে। টাইটানিকের দুর্ভাগ্যের পুনরাবৃত্তি আবারও ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা থাকলেও মানুষ দমে যায়নি। তারই প্রমাণ হলো দৈত্যাকার প্রমোদতরী ‘আইকন অব দ্য সি’।
ফিনল্যান্ডের মায়ার টার্কু শিপইয়ার্ডে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য নির্মাণাধীন অত্যাধুনিক এ জাহাজটির কাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। এখন নির্মাণ কাজ একেবারে শেষ ধাপে। এরইমধ্যে সাগরে শুরু হয়েছে জাহাজটির ট্রায়াল রান। আগামী অক্টোবর নাগাদ জাহাজটি রয়্যাল ক্যারিবিয়ানের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর এটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে।
জানা গেছে, ‘আইকন অব দ্য সিজ’ এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১ হাজার ২০০ ফুট। আনুমানিক ওজন ২ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টন। ওজন ধারণের ক্ষমতা বোঝাতে বলা যায়, প্রমোদতরিটি দুটি সিএন টাওয়ারকে ভাসিয়ে রাখতে পারবে। কানাডার টরন্টোয় অবস্থিত সিএন টাওয়ারের উচ্চতা প্রায় ১ হাজার ৮১৫ ফুট।
বিশাল এই প্রমোদতরিতে প্রায় ৫ হাজার ৬১০ যাত্রী ও ২ হাজার ৩৫০ ক্রু থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে। এতে থাকছে সমুদ্রে ভাসমান বিশ্বের বৃহত্তম ‘ওয়াটার পার্ক’। যার নাম রাখা হয়েছে ‘ক্যাটাগরি সিক্স’। এই পার্কে রেকর্ডসংখ্যক ছয়টি ‘ওয়াটার স্লাইড’ যুক্ত থাকবে। সেই সঙ্গে থাকছে সাতটি পুল ও নয়টি ঘূর্ণিজলের ব্যবস্থা।
প্রমোদতরিতে খাবারদাবার, পানীয় ও বিনোদনের ৪০টির বেশি উপায়-উপকরণ থাকছে। এতে ২০টি ডেক ও ৮টি সন্নিহিত এলাকা থাকছে। জাহাজটিতে নতুন জুটিদের জন্য যেমন বিশেষ স্থান থাকবে, তেমনি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য থাকবে আলাদা জায়গা। সবমিলিয়ে যেন এটি পুরো একটি শহর।
বিশালাকৃতির এই জাহাজটি চলাতে আশ্রয় নেয়া হয়েছে তুলনামূলক আধুনিক পদ্ধতির। জাহাজটির মূল জ্বালানি হিসেবে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হলেও এতে ফুয়েল সেল প্রযুক্তিও রাখা হয়েছে।
এরই মধ্যে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল জাহাজটির প্রথম যাত্রার জন্য প্রি-বুক অর্ডার শুরু করেছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে বুক করতে পারা যাবে।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বর্তমান সর্ববৃহৎ প্রমোদতরীর মালিকানাও রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনালের। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাধীন ‘ওয়ান্ডার অব দ্য সি’র দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১৮৮ ফুট। জাহাজটিতে মোট ১৮টি তলা রয়েছে।