এবারও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ঘিরে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ

এবারও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ঘিরে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ

জাতীয় স্লাইড

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ

এবারও গ্রীষ্মের চাহিদা মেটাতে নির্ভরতা বাড়ছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর। অভ্যন্তরীণভাবে ৫ হাজার মেগাওয়াট সরবরাহের পাশাপাশি আদানির কেন্দ্র থেকে দেড় হাজার জোগান পাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে এক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থের নিশ্চয়তা। বিদ্যুৎ নিয়ে যে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে, সেটিকে ইতিবাচক উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান নিশ্চিত করতে না পারলে ভেস্তে যাবে সবকিছু। এতে গরমে অসহনীয় দুর্ভোগের আশঙ্কা তাদের।

৫ জুন ২০২৩। অর্থের অভাবে কয়লা যোগানের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় দেশের সবচেয়ে বড় ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা। গত বছর প্রচণ্ড গরমের মধ্যে যা ছিল বড় ধরনের ধাক্কা।

কখনো চালু, কখনো বন্ধ- এমন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে আলোচিত রামপাল। সংকটে কিছুটা স্বস্তি যোগাতে উৎপাদন বাড়ালেও কয়লার অভাবে চারদিনের মাথায় বন্ধ হয়ে যায় সে সময় পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকা বাঁশখালীর এস এস পাওয়ার। স্বাভাবিক উৎপাদন ধরে রাখতে পারেনি দেশের প্রথম কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র বড়পুকুরিয়াও।

গতবারের এমন সব তিক্ত অভিজ্ঞতার পর আবারো সেই কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর ওপর নির্ভর করেই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এতোদিন গ্যাসের পর ফার্নেস অয়েল থেকেই মিলতো বেশি বিদ্যুৎ। এবার সেই জায়গা নিচ্ছে কয়লা। গ্রীষ্মে প্রায় ১৮ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা মেটাতে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে ৫ হাজার মেগাওয়াট সরবরাহের পরিকল্পনা বিদ্যুৎ বিভাগের। আর তাতে আশা জাগাচ্ছে পায়রা, রামপাল, বাঁশখালীর পর গত বছরের শেষে মাতারবাড়ির মতো বড় কেন্দ্র উৎপাদনে আসা।

কিন্তু এসব পরিকল্পনায় মূল চ্যালেঞ্জ কয়লার জোগান নিশ্চিতে অর্থ সংস্থান। একদিকে পিডিবির কাছে বকেয়া, অন্যদিকে ডলারের প্রাপ্যতা- দুটো বিষয় ভাবাচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের।

এস এস পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক প্রকৌশলী এ এস এম আলমগীর কবির বলেন, বিল পাইনি। নিজেদের খরচেই জ্বালানি আনা হচ্ছে। এভাবে বেশিদিন চালানো যাবে না। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে ডলার ছাড়তে হবে, এলসি প্রসেস সহজ করতে হবে।

যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ মনে করে, এবার আর গতবারের পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলছেন, চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের জানা। এজন্য আগাম প্রস্তুতিও আমরা নিয়েছি। আশা করছি, এবার গতবারের মতো সমস্যা হবে না।

আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলছেন, কথার মিল বাস্তবে পাওয়া গেলে ভালো। নতুবা আবারো বিপদেই পড়বে বিদ্যুৎ খাত।

দেশের কেন্দ্রগুলোর বাইরে আদানি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে প্রায় দেড় হাজার বিদ্যুৎ পাওয়ার আশা নীতি নির্ধারকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *