যুক্তরাজ্যের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পদত্যাগের পর নিজেকে ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও দেশের প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যেই প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে তার একটি বক্তব্য নিয়ে যুক্তরাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, সদ্য চল্লিশ পেরোনো ঋষি সুনাকের কম বয়সের একটি বক্তব্য নতুন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে তাকে বলতে শোনা গেছে, তিনি মধ্যবিত্ত হতে পারেন। তবে সমাজের অভিজাতদের অনেকেই তার বন্ধু। সমাজের উচ্চবিত্ত বহু মানুষও তার ভালো বন্ধু। তবে খেটে খাওয়া মানুষদের কেউ তার বন্ধু নন।
তখন সুনাক ২১ বছরের তরুণ। ওই বয়সে বিবিসিকে ‘মিডল ক্লাস-দেয়ার রাইজ অ্যান্ড স্প্রল’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্রে সাক্ষাৎকার দেন সুনাক। ওই তথ্যচিত্রেরই সাত সেকেন্ডের একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়। ক্যাথরিন ফ্রাঙ্কলিন নামে এক ব্রিটিশ নারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ভিডিওটি শেয়ার করেন। ভিডিওটি এখন পর্যন্ত ৩০ লক্ষাধিক ভিউ হয়েছে।
ওই ভিডিও ক্লিপে সুনাক বলেন, ‘সমাজে সবস্তরে আমার বন্ধু আছে। আমার এমন বন্ধু আছে যারা অভিজাত। আবার এমন বন্ধুও আছে যারা উচ্চবিত্ত; এমনও আছে যারা শ্রমিক।’ এরপরই মূলত নিজের কথা সংশোধন করে নেন সুনাক; বলেন, ‘ও নাহ! খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে আমার কোনো বন্ধু নেই।’
তরুণ সুনাক ওই সাক্ষাৎকারেই স্পষ্ট করে দেন সমাজের শ্রমিক শ্রেণির সঙ্গে সংসর্গ রাখা পছন্দ নয় তার। সেই সুনাকই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে নেমে এখন বলছেন, ‘আমার ঠাকুমাকে এই দেশ দুটি ইচ্ছেডানা দিয়েছিল। মধ্যবিত্ত আমাকেও স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করেছে। আমাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করলে, এ দেশে স্থায়ী হতে চাওয়া মানুষকে (খেটে খাওয়া) আমি একই সুবিধা দেব।’
সুনাকের বক্তব্য শুনে রীতিমতো থ বনে গেছেন ব্রিটেনের নাগরিকরা। তার এই দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা; বলছেন, যিনি তরুণ বয়সে এত জোর দিয়ে শ্রমিক শ্রেণির মানুষ সম্পর্কে নিজের অপছন্দের কথা স্পষ্ট করে বলতে পারেন, তার বিশ্বস্ততা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।