উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলেছে চট্টগ্রাম

উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলেছে চট্টগ্রাম

দেশজুড়ে স্লাইড

ডিসেম্বর ৫, ২০২২ ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দিয়ে ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সাধিত করেছে ব্যাপক উন্নয়ন। সেই উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বাদ যায়নি বন্দরনগরী চট্টগ্রামও। ছোট-বড় অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখেছে চট্টগ্রামের মানুষ।

এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, বঙ্গবন্ধু টানেল, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রাম বন্দর বে-টার্মিনাল ইত্যাদি।

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর

দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর। মীরসরাইয়ে সাত হাজার একর এলাকাজুড়ে এটি গড়ে তোলা হয়েছে। প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে এখানে। বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ১৩৩। নির্মাণাধীন রয়েছে ১৫টি প্রতিষ্ঠান। ধারণা করা হচ্ছে, ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের পণ্য রফতানি হবে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে।

বঙ্গবন্ধু টানেল

চীনের সাংহাই শহরের আদলে বন্দরনগর চট্টগ্রাম শহরকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেলে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর টানেল নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পরে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

টানেলটির দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩ কিলোমিটার হলেও মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এটিই বাংলাদেশের প্রথম সুড়ঙ্গ পথ, যা নদীর দুই তীরের অঞ্চলকে যুক্ত করবে। যার প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য দুই দশমিক ৪৫ কিলোমিটার ও ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। প্রতিটি টিউবে দুটি করে রয়েছে মোট চারটি লেন। লেনগুলো দিয়ে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলবে গাড়ি।

টানেলটির ফলে ত্বরান্বিত হবে কর্ণফুলী নদীর পূর্বপ্রান্তের প্রস্তাবিত শিল্প এলাকার উন্নয়ন। পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত চট্টগ্রাম শহর, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের সঙ্গেও স্থাপিত হবে উন্নত এবং সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা। কমে যাবে ভ্রমণের সময় ও খরচ।

এছাড়া পূর্বপ্রান্তের শিল্পকারখানার কাঁচামাল ও প্রস্তুত করা মালামাল চট্টগ্রাম বন্দর, বিমানবন্দরসহ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পরিবহন প্রক্রিয়া সহজ হবে। কর্ণফুলী নদীর পূর্বপ্রান্তের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের ফলে বিকশিত হবে পর্যটনশিল্প।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন

চলছে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণকাজ- ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

চলছে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণকাজ- ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণকাজ। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারের এ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৭৬ শতাংশ। আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান।

বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ

নগরের কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত চার লেনের একটি মেরিন ড্রাইভ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এবার মীরসরাই থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ প্রকল্প শিগগিরই শুরু হবে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও মেট্রোরেল

১৬ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে

১৬ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে

নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। এর বাইরে নগরে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফ্লাইওভার। এছাড়া ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ তিনটি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা রয়েছে।

বে-টার্মিনাল

বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঘণ্টায় ১৪ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে- ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঘণ্টায় ১৪ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে- ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

জোয়ারের সময় শুধুমাত্র ৮ থেকে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারে চট্টগ্রাম বন্দরে। এতে বছরে ৩০ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হয়। বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঘণ্টায় ১৪ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে। বছরে হ্যান্ডলিং করা যাবে ৪৫ লাখ কনটেইনার। এর মাধ্যমে বছরে ৪০০ কোটি রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প

পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ব্যয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। প্রকল্পটি শেষ হলে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। এছাড়া নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে সবসময় গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে চট্টগ্রামে এতগুলো মেগাপ্রকল্পের কাজ হয়েছে, হচ্ছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামের চিত্র পাল্টে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *