ইউক্রেনকে যে অস্ত্র দিচ্ছে জার্মানি

আন্তর্জাতিক স্লাইড

জুন ৩, ২০২২ ১০:০১ পূর্বাহ্ণ

নতুন করে ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি।

এরই মধ্যে দেশটির পার্লামেন্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জার্মান চ্যান্সেলর। এদিকে চলমান পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে রক্ষায় মাঝারি পাল্লার রকেট সিস্টেম পাঠানোর বিষয়টি এক প্রকার নিশ্চিত বলে দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট মনে করেন পশ্চিমা বিশ্বের এসব ভারী অস্ত্র দিয়েও এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।

সময় যতই গড়াচ্ছে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্র ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিশেষ করে দেশটিতে অভিযান চালিয়ে যাওয়া রুশ বাহিনী যেমন সহজে পিছু হটছে না, তেমনি ইউক্রেনকে ভারী অস্ত্র সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে আসছে না পশ্চিমা বিশ্বও।

এবার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইউক্রেনকে অস্ত্র দিতে যাচ্ছে জার্মানি। দেশটির অস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডিল-এর তৈরি আইরিস টি এসএলএম মডেলের অত্যাধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় রাডার সিস্টেমের যুদ্ধ বিমানবিধ্বংসী ও আকাশপথে হামলা ঠেকানোর জন্য ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। বুধবার জার্মান পার্লামেন্টের অধিবেশনে ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক এসব ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১৪টি লেওপার্ড ট্যাংক প্রতিবেশী চেক প্রজাতন্ত্রের মাধ্যমে এবং সোভিয়েত আমলে তৈরি টি-৭২ মডেলের ট্যাংকসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্রের মাধ্যমে ইউক্রেনে পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন ওলাফ শলজ।

এদিকে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে রুশ হামলা জোরদার করায় দেশটিকে ৭০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের অত্যাধুনিক হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম, হেলিকপ্টার, ট্রাক ও রাডার সিস্টেম সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তবে পশ্চিমা বিশ্বের দেয়া এসব অস্ত্র রুশ বাহিনীর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না বলে দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই সঙ্গে এই অস্ত্র দিয়ে অঞ্চলটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দোনবাসের আরও কয়েকটি শহর দখলে অভিযান চলছে। বৃহস্পতিবার (২ জুন) সবশেষ খবরে বলা হয়েছে, পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্ক প্রদেশের সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের ৮০ ভাগই এখন রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।

লুহানস্কে ইউক্রেনের আঞ্চলিক সামরিক প্রশাসনের প্রধান সেরহি হাইদাই এ কথা জানান। হাইদাই বলেন, পূর্বাঞ্চলীয় সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের রাস্তায় রাস্তায় এখন লড়াই চলছে। অবশ্য রুশ বাহিনী শহরের ৮০ ভাগ দখলে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘কিছু সড়কে আমাদের প্রতিরোধকারীরা সফল হয়েছে।’

হাইদাই বলেন, লুহানস্কের বাকি অংশ (২০ ভাগ) এখনো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে টানা গোলাবর্ষণ চলছে। তবে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা কার্গোবোঝাই মানবিক সহায়তা নিয়ে অনেক বসতিতে পৌঁছাতে পেরেছেন। তারা লোকজনকে সরিয়ে নিতেও পেরেছেন।

এই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা বলেন, পাশের লিসিচানস্ক শহর ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সামরিক দিক বিবেচনায় শহরটি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। পাহাড়ের ওপরে শহরটির অবস্থান হওয়ায় অনেক সুবিধা রয়েছে। শহরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী।

হাইদাই বলেন, রুশ বাহিনী ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ঘেরাও করে ফেলার চেষ্টা করছে। সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের দক্ষিণ ও পশ্চিমে ভয়াবহ লড়াই অব্যাহত রয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধে লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চলের সমন্বয়ে গঠিত দনবাসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়াই এখন রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য। অবশ্য ওই অঞ্চলের একটি বড় অংশ আগে থেকেই রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে আছে। সেভেরোদোনেৎস্ক ও লিসিচানস্ক দখল করতে পারলে পুরো লুহানস্কের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে মস্কো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *