অসময়ে ঘামছেন?

অসময়ে ঘামছেন?

স্বাস্থ্য

ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩ ১২:৫৩ অপরাহ্ণ

কাঠফাটা রোদে বাইরে বেরোলে ঘাম হওয়া যেমন অস্বাভাবিক নয়, তেমনই তীব্র গরমে ঘরে বসে ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়ে যাওয়াও খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তবে যদি কোন ব্যক্তি ঘরের মধ্যে থেকে ফ্যানের হাওয়া খেয়েও ঘামেন অথবা শীতকালেও ঘেমে ওঠেন কিংবা খেতে বসে দর দর করে ঘাম ঝরতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে ব্যাপারটা স্বাভাবিক নয়।

আসলে আমাদের শরীরে যা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলে তার প্রত্যেকটাই আমাদের স্বাস্থ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ঘাম আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে কাজে লাগে। কারণ এই ঘামের মাধ্যমেই শরীরের মধ্যে থাকা অতিরিক্ত জল এবং খনিজ পদার্থ বেরিয়ে যায়। কাজেই শরীর আমাদের ঠান্ডা হয়। তাই ঘাম যে উপকার করে না একথা বলা যায় না। ঘামের মাধ্যমে মানবদেহের বেশ কিছু উপকার হয়।

চলুন জানা যাক সেইগুলো-

প্রথমত শরীর চর্চা করার পরে ঘাম নিঃসৃত হয় দেহ থেকে। এগুলো আসলে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ক্যালোরি, যা বার্ন হয়ে নিয়মিত কসরতের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে। এই কারণেই বলা হয় প্রতিদিন ঘাম ঝরলে ওজন কমে।

যখন ঘাম হয় তখন আমাদের ত্বকের ছিদ্র গুলি উন্মুক্ত হয়ে যায়। কাজেই সেই সময় ওই ত্বকের কোষের মধ্যে জমে থাকা ময়লা ,জীবাণু, তেল সমস্ত কিছু ঘামের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে আসে। এর ফলে ব্রণের সমস্যা অনেক কমে যায় । কারণ ওই জমে থাকা ময়লা, তেল, থেকেই ব্রণ দেখা দেয়।

আমাদের দেহে যে পরিমাণ খনিজ পদার্থ প্রয়োজন হয় তার থেকে বেশি পরিমাণ খনিজ পদার্থ জমতে থাকলে তা ধীরে ধীরে পাথর সৃষ্টি করে। এই কারণেই কিডনিতে পাথর সৃষ্টি হওয়ার সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়। কাজেই যাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘাম হয়, তাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত খনিজ পদার্থ বাইরে বেরিয়ে আসে। এটি কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিকে অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। তাই বলাই যায়, অত্যাধিক ঘাম হওয়া খুব একটা ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু বিশেষ কয়েকটি অবস্থায় যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ঘাম হয় তাহলে সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন।

কোন কোন ক্ষেত্রে ঘাম ক্ষতিকারক হতে পারে ?

যদি কোন নারী অন্তঃসত্ত্বা থাকেন এবং তিনি অসময়ে বিনা কারণে দর দর করে ঘামতে থাকেন তাহলে সেটি চিন্তা করার মতো বিষয়। এছাড়াও একজন ব্যক্তি যিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন অথবা শরীরের থাইরয়েড বাসা বেঁধেছে তাদের জন্য অতিরিক্ত ঘাম ভালো নয়। লিউকিমিয়া ক্যানসার, আর্থারাইটিসের সমস্যা থাকলে বেশি ঘামকে উপেক্ষা করা উচিত নয়। এমনকি চিকিৎসকরা বলে থাকেন মহিলাদের ঋতুবন্ধের সময় যদি অতিরিক্ত ঘাম দেখা দেয় তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *