ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাব ডেকে আনে যেসব মারাত্মক ঝুঁকি

ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাব ডেকে আনে যেসব মারাত্মক ঝুঁকি

স্বাস্থ্য

এপ্রিল ১৮, ২০২৩ ৯:৫১ পূর্বাহ্ণ

ভিটামিন ‘ডি’ কে বলা হয়, সানশাইন ভিটামিন। খাবারের পাশাপাশি এর প্রধানতম উৎস হলো সূর্যালোক। এর উপকারিতা বহুমুখী। রক্তে মিশে থাকা ভিটামিন ‘ডি’ হাড় ও কোষের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কার্যত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

বিভিন্ন মেডিকেল জার্নাল অবলম্বনে নিজেকে সূর্যবঞ্চিত রাখার কুফল কিন্তু অনেকগুলো:

অবসাদ:
আমাদের স্ট্রেসফুল জীবনে নানামুখী অবসাদের শেষ নেই। রোদের অভাব সেই সমস্যা আরো বাড়িয়ে দেয়। ব্রিটিশ জার্নাল অফ সাইকিয়াট্রির সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি’র পরিমাণ কম, তাদের অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অন্যদের থেকে দ্বিগুণ। রৌদ্রবঞ্চিতদের মনে স্ফূর্তি ও চনমনে ভাব থাকে না।

হার্টের রোগ:
যাদের শরীরে ভিটামিন ডি’র পরিমাণ কম, তাদের করোনারি আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ৩২ শতাংশ বেশি।

ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের শক্তি কম:
গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি বেশি, তারা ক্যান্সারের সঙ্গে বেশি লড়াই করতে পারেন। ভিটামিন ডি ১০ শতাংশ বাড়লে, ক্যান্সারে সারভাইভালের সম্ভাবনা চার শতাংশ বেড়ে যায়। ভিটামিন ডি’র ঘাটতি থাকলে প্রস্টেট ক্যান্সারের বিপদ চার থেকে পাঁচ গুণ বাড়ে।

ডিমেনশিয়া ও অ্যালজাইমার্স:
প্রাপ্তবয়স্করা বেশি মাত্রায় ভিটামিন ডি’র ঘাটতিতে ভোগেন, তাদের ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার প্রবণতা ৫৩ গুণ বেড়ে যায়।| এর সঙ্গে থাকে অ্যালজাইমার্সের ঝুঁকি।

সোরিয়াসিস আর্থারাইটিস:
বাতের যন্ত্রণার পিছনেও রয়েছে এই ভিটামিন ডি’র ঘাটতি। সোরিয়াটিক আর্থারাইটিসে যারা ভোগেন, তাদের ৬২ শতাংশের শরীরেই প্রয়োজনীয় পরিমাণে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি থাকে।

নিউমোনিয়া সংক্রমণ:
ভিটামিন ডি’র ঘাটতিতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা আড়াই গুণ বেশি।

সিজোফ্রেনিয়া:
সাইকিয়াট্রিক হেলথের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি’র গুরুত্বও অপরিঅসীম। রক্তে ভিটামিন ডি কম থাকলে সিজোফ্রেনিয়া বা মানসিক বৈকল্যের প্রবণতা বেড়ে যায়।

অস্টিওপরোসিস:
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি’র ঘাটতিতে অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়রোগ হয়ে থাকে।সাধারণত বাংলাদেশের মেয়েরা ঘরে থাকে বলে তারা এ রোগে বেশি ভোগেন। কারণ তারা রোদের আলো খুব বেশি পান না।

স্নায়ুবিক সমস্যা:
পার্কিনসন্স, ক্লোরোসিসের মতো রোগে যারা আক্রান্ত, ভিটামিন ডি’র ঘাটতি তাদের শরীরে স্নায়ুবিক সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। ভিটামিন ডি’র ৯০ শতাংশ উৎস হলো সূর্যালোক। বাকি ১০ ভাগ মাত্র বিভিন্ন খাবারের উৎস থেকে পাওয়া যায়।

শহুরে সাহেবদের চেয়ে গ্রাম্য চাষি ভাইদের রোগব্যাধি ও অবসাদ তুলনামূলকভাবে কম কেন তা এতক্ষণের আলোচনা থেকে সহজেই অনুমান করতে পারছেন।

বাড়ির উঠান বা ছাদে গিয়ে সকাল ৯/১০টায় ১৫ থেকে ৩০ মিনিট সানবাথ তথা সূর্যস্নান নেয়া সবার জন্যই বিশেষ দরকার। বিশেষ করে পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ, নারী ও শিশুদের জন্য এটা অত্যাবশ্যক।

আর ঘরে থেকে জানালা দিয়ে হলেও সুবর্ণসূর্যের আহ্লাদে মাতুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *