রুশ মুদ্রা রুবলের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন না করলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির সরকার বলেছে, আজ শুক্রবার (১ এপ্রিল) মধ্যরাতের পর রুবল ছাড়া গ্যাস মিলবে না।
পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্দেশে রাশিয়া বলেছে, ‘অবন্ধুসূলভ দেশগুলোকে অবশ্যই রুবলের মাধ্যমে গ্যাসের অর্থ প্রদান করতে হবে। নতুবা গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতোমধ্যে একটি নির্দেশনা স্বাক্ষর করেছেন। এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘শুক্রবার থেকে ক্রেতাদের অবশ্যই রুশ ব্যাংকে রুবল অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।’
পুতিন আরও বলেছেন, ‘কেউ আমাদের বিনামূল্যে কিছু বিক্রি করে না, এবং আমরা দাতব্যও করতে যাচ্ছি না। অর্থাৎ, বিদ্যমান চুক্তিগুলো থামিয়ে দেওয়া হবে।’
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে রুবলের মান ব্যাপকভাবে পড়তে থাকে এবং রুবলের এ পড়তি মান বাড়ানোর চেষ্টায় পুতিন এ দাবি করছেন।
তবে রুশ মুদ্রা রুবলে গ্যাসের অর্থ প্রদানের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে পশ্চিমা কোম্পানি এবং সরকার। কারণ বিদ্যমান চুক্তিতে এ অর্থ ইউরো বা মার্কিন ডলারে প্রদানের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং এখন রুবলে প্রদানের দাবি করার অর্থ হলো বিদ্যমান চুক্তির লঙ্ঘন করা।
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের পর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মতো ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার তেল বা গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। কারণ ইইউ এর সদস্য দেশগুলো রুশ জ্বালানির ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট গ্যাস আমদানির প্রায় ৪০ শতাংশ এবং মোট তেল আমদানির ৩০ শতাংশ রাশিয়া থেকে হয়ে থাকে। রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হলে ইইউর কাছে এর কোনো সহজ বিকল্প নেই। এদিকে ইউরোপীয় দেশগুলোয় গ্যাস বিক্রি করে রাশিয়া বর্তমানে প্রতিদিন ৪০০ মিলিয়ন ইউরো আয় করে এবং দেশটির কাছে অন্য বাজারে জ্বালানি সরবরাহ করার কোনো উপায় নেই।
জার্মানি তাদের চাহিদার প্রায় অর্ধেক গ্যাস এবং এক তৃতীয়াংশ তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করে। ইতোমধ্যে দেশটি তার নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্ভাব্য ঘাটতির আশঙ্কায় গ্যাস ও তেল ব্যবহার কমানোর আহ্বান জানিয়েছে। এদিকে পুতিনের এ ঘোষণাকে হুমকি হিসেবে অবহিত করেছে জার্মানি ও ফ্রান্স।
সূত্র: বিবিসি