নিজস্ব প্রতিবেদক
ভোলা জেলার দৌলতখান থানার একটি মাদরাসায় সন্ত্রাসীদের হামলা ও ব্যাপক ভাংচুর-লুটতরাজের ঘটনা ঘটেছে।
২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার থানার ৫নং ওয়ার্ডের মারকাজুল উলূম আল ইসলামিয়া আল মাদরাসাতুল আরাবিয়ায় সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায়। এতে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মাওলানা ফয়জুল্লাহ গুরুতর আহত হন।
তারা সকাল নয়টায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহ মাদরাসায় প্রবেশ করে মাদরাসার সকল ক্লাসরুমে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মাওলানা ফয়জুল্লাহকে অফিস কক্ষে হাত-পা বেঁধে আটকে রেখে ব্যাপক মারধর করে গুরুতর আহত করে।
স্থানীয়দের থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারা মাদরাসাকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করে এই হামলা চালায়। তারা তাদের প্লান বাস্তবায়ন করতে না পেরে নগদ টাকা লুট করে এবং ভাংচুর করে।
তারা প্রিন্সিপালকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ড্রয়ারের চাবি নিয়ে নগদ তিন লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকাগুলো মাদরাসা নির্মাণ কাজের জন্য এবং মাদরাসার বার্ষিক মাহফিলের জন্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। তারা মাদরাসার দুটি ল্যাপটপ নিয়ে যায় যেগুলোর মূল্য যথাক্রমে ১ লক্ষ টাকা এবং একটি ডেস্কটপ পিসি ও প্রিন্টারসহ ভেঙ্গেচুরে পাশের খালে তারা ফেলে দেয়। যেটার মূল্য ৭০ হাজার টাকা।
এছাড়া তারা প্রিন্সিপালের মোবাইলও নিয়ে যায়। নগদ অর্থ সহ তারা প্রায় ৫ লক্ষ টাকা লুটপাট করে।
সন্ত্রাসীরা টাকা নিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি, অফিসে তারা ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সকল সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে ফিকাহ-হাদিস ও তাফসির গ্রন্থও রেহাই পায়নি। তারা ধর্মীয় গ্রন্থগুলোকে চরম অবমাননা করে এবং গ্রন্থগুলো রাখার শোকেস ভেঙ্গেচুরে তছনছ করে দেয়।
বাহির থেকে গেট আটকিয়ে দীর্ঘ ৪০ মিনিট সন্ত্রাসীরা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ফয়জুল্লাহকে পিটিয়ে আহত করে এবং ব্যাপক ভাংচুর ও তাণ্ডব চালায়।
অবশেষে স্থানীয় জনগণ চিৎকার চেঁচামেচি এবং হইচই শব্দ পেলে মাদরাসায় এসে অফিস কক্ষে প্রিন্সিপালকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় জনগণ দেখে সন্ত্রাসীরা ককটেল ফাটিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়।
সন্ত্রাসীদের মূল গডফাদার আবু মুসা মাঝি। সে আরো ছয়/সাত জন সন্ত্রাসী নিয়ে মাদরাসায় হামলা করেছে। এদের মধ্যে রিয়াজ, ভুট্টু এবং মাহবুবকে স্থানীয় জনগণ চিনতে পেরেছে। অন্যদের মুখে মাস্ক থাকায় তাদেরকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
সন্ত্রাসীদের হামলায় মাদরাসার প্রিন্সিপালের আহত হওয়া এবং ব্যাপক লুটতরাজ ও ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় আলেম ওলামাগণ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। আলেম ওলামাগণ সহ জনসাধারণ এবং মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ প্রশাসনের প্রতি এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেছেন।