আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের হামলায় আহত ৩৩

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের হামলায় আহত ৩৩

দেশজুড়ে

জানুয়ারি ২১, ২০২৪ ৬:২৭ অপরাহ্ণ

মাহফুজুর রহমান সোহাগ, নালিতাবাড়ী (শেরপুর)।।

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মাদরাসার নামে ওয়াকফকৃত জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে আধিপত্য বিস্তাারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের হামলায় কমপক্ষে ৩৩ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের গোল্লারপাড় এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ৮ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছে।

এলাকাবাসীর সুত্রে জানা গেছে, বিগত প্রায় ৪০ বছর পূর্বে উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের গোল্লারপাড় ইবতেদায়ী মাদরাসা নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ওই এলাকার মৃত সফর উদ্দিন, মৃত নীল মাহমুদ ও মৃত ছাবেদ আলী মিলে মোট ১ একর ৫ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দেন। বর্তমানে ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠানটি কোন কারনে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় মাদরাসার ওয়াকফকৃত সম্পত্তি দাতার ওয়ারিশগণ মজিবর মেম্বাররা তসরুপ করে আসছিল বলে জানায়। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী গোল্লারপার মদিনাতুল উলুম কওমি মাদ্রাসা নামে নতুন একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে আগের বিলুপ্ত হওয়া মাদরাসার সম্পত্তির উপার্জিত অর্থের অংশ বর্তমান প্রতিষ্ঠিত কওমি মাদরাসায় দান করে আসছিল কর্তৃপক্ষ।

এমতাবস্থায় গোল্লারপাড় জামে মসজিদের কমিটি গঠন নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে এক পর্যায়ে ওয়াকফকৃত সম্পত্তির উপার্জিত অংশ ওই কওমি মাদরাসার নামে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে কওমি মাদরাসার সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান উসমান গনি ও সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আলীর মাঝে বিরোধ বাঁধে। বর্তমান সভাপতি উসমান গনি চলমান বোরো আবাদে ওই জমি চাষ করে লাগানোর প্রস্তুতি নিলে সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আলীর লোকজন গতকাল শুক্রবার গোপনে গিয়ে ওই ধানখেত লাগিয়ে ফেলে। এনিয়ে শনিবার সকাল ৯ টার দিকে সভাপতি উসমান গনির নেতৃত্বে কয়েক শত লোকজন নিয়ে সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আলী ও তার স্বজনদের বাড়িতে অতর্কিতে হামলা লুটপাট করে ৩টি দোকান ঘর ও ৩টি অটোরিকশা ভাংচুর করে। এতে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উভয় পক্ষের মাঝে ব্যাপক ঝগরা বাধে। এসময় উভয় পক্ষের হামলায় কমপক্ষে ৩৩ জন আহত হন।

আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে বেশ কয়েক জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে কয়েকজন শেরপুর ও নালিতাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত মামুন, আজাদ, মাসুদ ও বাক্কি মিয়াসহ ৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বল্লম, লাঠিসোঠা ও কুড়াল উদ্ধার করেছে। এছাড়া এ ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নালিতাবাড়ী সহকারী পুলিশ সুপার দিদারুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ নিয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ প্রাপ্তীর পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *