শেরপুর-৩ নির্বাচনী এলাকায় নাইমের শেষ জনসভায় জনসমুদ্র

শেরপুর-৩ নির্বাচনী এলাকায় নাইমের শেষ জনসভায় জনসমুদ্র

রাজনীতি স্পেশাল স্লাইড

জানুয়ারি ৬, ২০২৪ ৬:০৩ অপরাহ্ণ

এস এইচ শাকিল।।

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে সর্বোচ্চ জনসমাগম করে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শেষ করলেন শেরপুর—৩ (শ্রীবরদী এবং ঝিনাইগাতী) ট্রাক মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম।

প্রচারণায় শেষ দিন ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে সাধারণ ভোটারদের উদ্যোগে ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শরীফ উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ঝিনাইগাতী সরকারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই নির্বাচনী জনসভার আয়োজন করা হয়। এই সমাবেশে অন্তত ৩০ হাজারের অধিক মানুষের উপস্থিতি ছিল। ঝিনাইগাতীবাসীর ভাষ্যমতে ৫২ বছরের ইতিহাসে এত বড় জনসমাগম কখনো তারা দেখেননি।

স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসলেও ঝিনাইগাতী থেকে আজ পর্যন্ত জাতীয় সংসদে পা রাখেননি এই উপজেলার কোন নেতা। ঝিনাইগাতীবাসীর আশা এইবার ঝিনাইগাতী—শ্রীবরদী থেকে আলহাজ্ব এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম ৭ জানুয়ারির ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে জাতীয় সংসদে পা রাখবেন।

সমাবেশে নাইম বলেন, আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আমি বহুবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। কিন্তু আমার অঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে আমি কখনো পিছপা হইনি। মানুষের ভালোবাসায় আমি আজ এই অবস্থানে এসেছি। ৭ তারিখের নির্বাচনে মানুষ আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করবে বলে আমি আশা রাখি।
আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম নির্বাচিত হলে ঝিনাইগাতীকে পৌরসভাকরণ, শফিউদ্দিন কলেজকে সরকারীকরণ, মহিলা কলেজে অনার্স কোর্স চালু, দুই উপজেলা তিনটি পর্যটক কেন্দ্রকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা, সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয় হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সংসদে প্রস্তাব, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জাতীয়করণের ব্যাপারে সংসদে কথা বলা, এলাকার রাস্তাঘাট অবকাঠামো উন্নয়নের প্রসারসহ একাধিক প্রতিশ্রুতি দেন।

সমাবেশে আসা একাধিক প্রবীণ ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা জানান, স্বতন্ত্র উন্মুক্ত হওয়ায় দলের মনোনয়ন না পেলেও ঝিনাইগাতীবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে নির্বাচনে এসেছেন নাইম। শুধু আওয়ামী লীগ নয় অন্যান্য দলের ভোটাররাও আজকের সমাবেশে এসে তাকে সমর্থন দিয়েছেন।

এসময় পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লি. এর ডিরেক্টর মার্কেটিং ও শীর্ষ খবর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির) বলেন, নাইম একজন স, যোগ্য, শিক্ষিত, মার্জিত ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। আমি শ্রীবরদী—ঝিনাইগাতীবাসীর কল্যাণের স্বার্থে আগামী ৭ তারিখে নাইমের ট্রাক মার্কায় ভোট দিয়ে তাকে জয়যুক্ত করার জন্য সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি।

সমাবেশ সূত্র জানিয়েছে, শ্রীবরদী এবং ঝিনাইগাতীর অধিকাংশ বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী এবং এদের সাধারণ ভোট ব্যাংকের ভোট ট্রাক মার্কায় পড়বে। নৌকার প্রার্থীর জনবিচ্ছিন্নতা এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীণ আচার ব্যবহার দেখে তারা নৌকায় ভোট দেবেন না।

শেরপুর—৩ (শ্রীবরদী—ঝিনাইগাতী) আসনে এবার ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪০৪। এর মধ্যে শ্রীবরদী উপজেলায় ২ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮ জন ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৩৬ জন। বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত এই আসনে বিএনপির ভোট ব্যাংকও রয়েছে। আর এবার এই ভোট ব্যাংকের অধিকাংশ পড়বে ট্রাক মার্কায়। বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করেন, সাবেক এমপির আমলে হামলা মামলার শিকার হয়ে তারা এখন বিপর্যস্ত। ট্রাক মার্কা জিতলে অন্তত তারা মামলা হামলা থেকে বাঁচবেন।
এছাড়াও জাতীয় পার্টির একটি বড় অংশ ট্রাক মার্কাকে সমর্থন দিয়েছেন। আওয়ামীলীগের সিংহভাগ নেতাকর্মীর সমর্থন রয়েছে আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম কেন্দ্রিক। সব মিলিয়ে সাধারণ ভোটারদের হিসেব—নিকেশ অনুযায়ী ট্রাক মার্কার বিজয় নিশ্চিত বলেই মনে করছেন।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র আবু সাঈদ, রানিশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সোহাগ, ঝিনাইগাতী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ ফারুক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ—সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ফকির সাইফুল ইসলাম, সিএনজি শ্রমিক সমিতির সভাপতি রজব আহমেদ, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আয়শা সিদ্দিকা রুপালীসহ আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *