শাহিন খন্দকার, মাগুরা
শিক্ষার্থীদের সাথে শ্লীলতাহানি, প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপকর্ম ও প্রাইভেট না পড়লে হাতের মার্ক না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত শ্রীপুর সরকারি এম. সি. পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিষয়ক শিক্ষক মোঃ রোকন-উজ-জামানকে চুরির মামলায় আটক করে পুলিশ। ১৫ অক্টোবর, রবিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে স্কুলের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েন ঐ শিক্ষক। সেখান থেকে ঐ শিক্ষককে থানা হেফাজতে নিয়ে জায় শ্রীপুর থানা পুলিশ। এলাকাবাসীর ধারণা স্কুল থেকে তার অপকর্মের আলামত নষ্ট করে স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করে পালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এ ঘটনায় স্কুলটির নৌশপ্রহরী মোঃ ইউসুফ আলী বাদী হয়ে শ্রীপুর থানার একটি চুরির মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-১৩।
একই দিন সকালে ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও বিচারে দাবি জানায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রবিবার সকাল ৯ টায় স্কুলটির অভিযুক্ত ক্রীড়া বিষয়ক শিক্ষক মোঃ রোকন-উজ-জামানের বহিষ্কারের দাবিতে রাস্তায় নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় ঔ শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে শোনা যায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহল এর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে অভিযুক্ত শিক্ষক রোকন-উজ-জামান এর বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। ঘন্টাব্যাপী অবস্থানের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমস্ত অভিযোগ শুনে তাদেরকে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আশ্বাস দেন বিদ্যালয়টির সভাপতি মমতাজ মহল।
নাম প্রকাশ্যে একাধিক ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, ইতিপূর্বেও ওই শিক্ষক এমন কু-কর্ম করেছেন। তবে সেগুলোর সঠিক প্রমাণ না থাকায় বার বার তিনি একই অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন। এতে ঐতিহ্যবাহী শত বর্ষের স্কুলটির সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। প্রতিটি ক্লাসের সুন্দরী একটা মেয়েদের তার্গেট করে তাদেরকে বিভিন্ন কৌশলে ধর্ষণ করার চেষ্টা চালায় বলে গুরুতর অভিযোগ করেন এসব শিক্ষার্থীরা। স্কুলটির ৮ম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ সেলিম জানান, স্কুলটির সুনাম দেখে আমরা আমাদের মেয়েদেরকে ভর্তি করি পড়াশোনার জন্য। তবে এরকম ঘটনা ঘটলে আমরা খুবই চিন্তায় পড়ি। তবে অভিযুক্ত ঐ শিক্ষক তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোছাঃ সাবিনা ইয়াসমিন জানান, স্কুলে আসার পর সভাপতি আমাকে কল দিয়ে তার অফিসে ডাকেন। সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের কিছু শিক্ষার্থী তার কাছে বিভিন্ন অভিযোগ করেছন। সভাপতি তাদেরকে সঠিক তদন্ত করে বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ মহল জানান, শিক্ষার্থীরা তাদের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ জানিয়েছে। তাদেরকে সেগুলো তদন্ত করে সঠিক বিচারের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত একটি তদন্ত টিম গঠন করা হবে।