মাগুরায় বোরো প্রণোদনা বিতরণে অনিয়ম, সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত কৃষক

মাগুরায় বোরো প্রণোদনা বিতরণে অনিয়ম, সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত কৃষক

দেশজুড়ে

ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ ৮:২১ অপরাহ্ণ

শাহিন খন্দকার, মাগুরা

চলতি বছরের বোরো মৌসুমে মাগুরা জেলায় খাদ্য উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ১২ই নভেম্বর ১৫ হাজার কৃষকের মাঝে উফশি জাতের ধান বীজ ও সার প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অনুমোদনের পর ১৪ নভেম্বর জেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটি উপজেলা ভিত্তিক বিভাজন করে দ্রুত তালিকা করে বিতরণের নির্দেশনা দেয়। বিভাজনে মাগুরা সদর উপজেলায় ৬ হাজার ২ শত প্রান্তিক কৃষককে এই আওতায় আনা হয়।

অনুমোদনের ৩৭ দিন পরও ৪৪ লক্ষ টাকার প্রনোদনার বীজ সার বিতরণ হয়নি সদর উপজেলায়। ইতো মধ্যে জেলার প্রায় শতভাগ বোরো বীজতলা কৃষকদের ব্যাক্তিগত খরচে সম্পন্ন হয়েছে। অধিকাংশ কৃষক সরকারের এই প্রনোদনা বীজ, সার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

গত ১৯ ডিসেম্বর শতাধিক কৃষক উপস্থিতিতে বীজ ,সার বিতরন উদ্বোধণ কালে একজন কোট প্যান্ট পরিহিত লোককে ৫/৭ জনের ভুয়া স্বাক্ষর করে সার বীজ ভ্যানে করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। জানা গেছে চলতি মৌসুমে প্রণোদনার হাইব্রীড বীজ কৃষকের বীজতলাতেই নষ্ট হয়েছে। কারণ হিসেবে নিম্নমানের বীজ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

উপজেলার ছোনপুর গ্রামের কৃষক শাহেব আলী (৬৫) জানান, সরকারি কোনও সহায়তা আমি পাইনি। পাঁচ বিঘা জমিতে ধান রোপন করবো। নিজের টাকায় ধান বীজ কিনে চারা দিয়েছি। যারা নেতাদের সাথে ঘোরে তারা সরকারি সহায়তা পায়। কিন্তু তারা চাষ করে না।

একই গ্রামের মোহাম্মদ আলী (৬২) বলেন, শুনেছিলাম আমার নামে নাকি সার-বীজ দেওয়া হবে কিন্তু পাইনি। নিজের টাকায় বীজ-সার কিনে বীজতলা তৈরি করেছি।

ছোনপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা (৬৮) জানান, আমি দুই একর জমিতে ধান লাগাই কোনদিনও সরকারি কোন সহায়তা পায়নি কৃষি অফিস থেকে আমাদের কাছে কোন দিন কেউ আসে না।

আবু সাঈদ নামে এক ইউপি সদস্য জানান পূর্বে কৃষকদের মাঝে যে হাইব্রিড বীজ প্রদান করা হয়েছে তার ৫০% বীজ না গজানোর কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। পরে কৃষকরা বীজ কিনে বীজতলা তৈরি করেছেন। তিনি আরও বলেন, উফসি জাতের যে বীজ দেওয়া হবে তা দিয়ে খঁই ভেজে খাওয়া ছাড়া আর কোন কাজে লাগবে না।

অভিযোগ অস্বিকার করে কৃষকের ভূয়া তালিকা এবং এক ব্যাক্তির একাধিক স্বাক্ষর করে উপকরণ নেওয়ার অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানালেন অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ন কবির।

মাগুরা জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুফি মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন, একজন কৃষক একটি সাক্ষরের বেশি করতে পারবে না। যদি এমনটা হয়ে থাকে তবে আমাকে জানাবেন আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *