৫৪ দেশে পাঁচশ’র বেশি বিক্ষোভের পরিকল্পনা দ্য ক্লাইমেট গ্রুপের

৫৪ দেশে পাঁচশ’র বেশি বিক্ষোভের পরিকল্পনা দ্য ক্লাইমেট গ্রুপের

আন্তর্জাতিক স্লাইড

সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩ ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ

জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের দাবিতে প্রায় ৭৫ হাজার বিক্ষোভকারী যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের মিডটাউন ম্যানহাইটের রাস্তায় জড়ো হয়েছেন। রোববার শুরু হওয়া বিক্ষোভের মাধ্যমে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করতে ও পরিবেশগত অবিচারের সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশন ঘিরে এ বিক্ষোভের আয়োজন করেছে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা বিষয়ক এনজিও সংস্থা ‘দ্য ক্লাইমেট গ্রুপ’। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতসহ ৫৪টি দেশে ৫০০-এর বেশি বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছেন জলবায়ুকর্মীরা। বিশ্বের প্রায় ৭০০টি সংগঠন এবং কর্মী-গোষ্ঠীর বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভে অংশ নেবেন।

এই কর্মসূচিরই অংশ হিসাবে এদিন অধিবেশন শুরুর আগের দিনই নিউইয়র্কে বিক্ষোভ করেন জলবায়ুকর্মীরা। বিক্ষোভে নতুন করে তেল ও গ্যাস প্রকল্প অনুমোদন বন্ধ করা, জীবাশ্ম জ্বালানির বর্তমান প্রকল্পগুলো বন্ধ করা এবং বৃহত্তর নির্বাহী ক্ষমতার সঙ্গে জলবায়ু জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা। রয়টার্স, ডয়েচে ভেলে।

বিক্ষোভকারী এমা বারেত্তা (১৭) মার্কিন নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে জনগণের শক্তি আছে, আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য আপনাদের যে শক্তি দরকার তা আমাদের হাতে। আপনারা যদি ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিততে চান তাহলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করুন।’ বিক্ষোভকারী মেজিয়া (৪৬) সাম্প্রতিক চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোর দিকে ইঙ্গিত করেন। কানাডা, হাওয়াই এবং গ্রিসে আগুন থেকে শুরু করে লিবিয়ায় বন্যা পর্যন্ত সব সংকটকে তুলে ধরেন। কোবো নামের আরেকজন বিক্ষোভকারী যিনি জলবায়ু প্রচারে সুইডেনের গ্রেটা থানবার্গের সঙ্গে কাজ করেছেন। ১৯ বছর বয়সে ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার জন্য তার বাড়িতে বিষাক্ত বাতাসকে দায়ী করেছেন। কিছু তরুণ কর্মী জানান, বাইডেন সবুজ অবকাঠামো নির্মাণ ও ক্লিন এনার্জি প্রকল্পের জন্য বিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ দিলেও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে কোনো জোরদার পদক্ষেপ নেননি।

আমেরিকান ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞানী ও পরিবেশ আন্দোলনের গবেষক ডানা ফিশার রোববারের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একটি জরিপ চালিয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ বিক্ষোভকারী জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট বেশ কিছু দুর্যোগের শিকার হয়েছেন। ৮৬ শতাংশ প্রচণ্ড তাপ, ২১ শতাংশ বন্যা এবং ১৮ শতাংশ মারাত্মক খরার সম্মুখীন হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে নির্গত গ্রিনহাউজ গ্যাস বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়াচ্ছে।

পরিবেশকর্মীরা বলছেন, বিগত ১০০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের তুলনায় বায়ুমণ্ডলে বেশি কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত করেছে। যদিও চীন এখন বার্ষিক ভিত্তিতে বেশি কার্বন দূষণ নিঃসরণ করে। বিক্ষোভকারীরা বাইডেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের টিকে থাকার জন্য আপনাকে অবশ্যই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারকে পর্যায়ক্রমে বন্ধ করতে হবে। এদিকে তেল ও গ্যাস শিল্পের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের পণ্য অর্থনীতির জন্য অত্যাবশ্যক। বলেন ‘বিলম্ব না করে একসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার পদক্ষেপ ভাগ করে নেওয়া উচিত।’

প্রেসিডেন্ট বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তনে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে (ইউএনজিএ) যোগ দিতে প্রস্তুত। বিশ্ব নেতাদের নিয়ে আয়েজিত অধিবেশনটি মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *