হজ-ওমরা সফরে মৃত্যু হলে যে বিশেষ মর্যাদা

হজ-ওমরা সফরে মৃত্যু হলে যে বিশেষ মর্যাদা

ধর্ম

জুন ১১, ২০২৩ ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ

ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান হচ্ছে হজ। এ হজ বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুসলিমদের একত্রিত করে। এখানে এসে রঙ, বর্ণ, উঁচু-নিচু শ্রেণীভেদ ভুলে সবাই নিজেকে সঁপে দেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে।

পবিত্র হজকে কেন্দ্র করে মুসলিমদের এ সর্ববৃহৎ সমাগম হয় সৌদি আরবের মক্কায়।

বর্তমানে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে বর্তমানে মানুষ কয়েক দিন, মাস, বছরের পথ কয়েক ঘণ্টায় পার হতে পারেন। এক সময় হজের সফরে মানুষের দীর্ঘ সময় লাগতো। দূর দেশ থেকে হজ পালন করতে প্রায় বছর খানেক সময়ও লেগে যেতো। এই সফরে অনেকে মারাও যেতেন। বর্তমান সময়েও অনেকে হজ ওমরার সফরে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

মৃতের স্বজনেরা স্বাভাবিক নিয়মেই প্রিয়জনকে হারানোর ফলে কষ্ট পান। তবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজ-ওমরাযাত্রায় মৃত্যুবরণকারীদের জন্য সুসংবাদ শুনিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসূল (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশ্যে বের হলো, অতঃপর মৃত্যুবরণ করল, কেয়ামত পর্যন্ত তার হজের সওয়াব লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি ওমরার উদ্দেশ্যে বের হলো, আর সে অবস্থায় তার মৃত্যু হলো, কেয়ামত পর্যন্ত তার জন্য ওমরার সওয়াব, লেখা হবে।’ (মুসনাদে আবু ইয়ালা: ৬৩৫৭)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আরাফাতে উকুফ অবস্থায় হঠাৎ তার উটনি হতে পড়ে যায়। এতে তার ঘাড় মটকে গেল অথবা রাবি বলেছেন, তার ঘাড় মটকে দিল। (যাতে সে মারা গেল)। তখন নবী (সা.) বললেন, তাকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দু’কাপড়ে কাফন দাও। তাকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং মস্তক আবৃত করবে না। কেননা, কেয়ামতের দিন সে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠবে। (সহিহ বুখারি: ১২৬৫; সহিহ মুসলিম: ২৭৬৩; ইবনে মাজাহ: ৩০৮৪)

হজের সফরে মক্কায় মৃত্যুবরণকারীদের সাধারণত কাবা শরিফের সন্নিকটে জান্নাতুল মুয়াল্লাতে আর যারা মদিনায় মৃত্যুবরণকারীদের মসজিদে নববী সংলগ্ন জান্নাতুল বাকিতে দাফন করা হয়। এ কবরস্থানে দাফন হওয়া মুসলিম অনেক সৌভাগ্যবান। কারণ, এখানে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্তান, স্ত্রীসহ অসংখ্য সাহাবায়ে কেরাম শুয়ে আছেন।

এক হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে ব্যক্তির জমিনে চিড় ধরবে, সেই ব্যক্তি আমি। তারপর আবু বকর (রা.), তারপর ওমর (রা.), তারপর আহলে বাকি। আমি আহলে বাকির পাশে থাকব। তারা আমার সঙ্গে একত্র হবে। তারপর আমি মক্কাবাসীর জন্য অপেক্ষা করব। তারা মক্কা ও মদিনার মাঝামাঝি জায়গায় এসে আমার সঙ্গে মিলিত হবে। (সুনানে তিরিমজি: ৩৬২৫)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *