সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে লাশ হলো আরেক শিশু

সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে লাশ হলো আরেক শিশু

দেশজুড়ে স্লাইড

ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪ ১২:২৬ অপরাহ্ণ

সুন্নতে খৎনা করতে গিয়ে আবারো রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আহনাফ তাহমিদ। বয়স হয়েছিলো ১০ বছর।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, লোকাল এনেসথেসিয়া না দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত জেনারেল এনেসথেসিয়া দেন মালিবাগের জেএস হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। এ কারণেই শিশু আহনাফের মৃত্যু হয়। এদিকে, জেএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুটির রোগ সম্পর্কে স্বজনরা না জানানোয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর মালিবাগের জেএস হাসপাতালে আহনাফ তাহমিদকে সুন্নতে খতনা করতে নিয়ে আসেন বাবা ফখরুল আলম। পরিবারের অভিযোগ, আসার পরই হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদিরদের নেতৃত্বে তাহমিদকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় হাসপাতালে দায়িত্বরত ডা. মাহাবুব এবং ডা. ইশতিয়াক আজাদ। এর ঠিক ২০ মিনিট পর আহনাফকে দেখতে চায় পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধা দিলে শুরু হয় হট্টগোল। এরপরই তাকে মৃত ঘোষণা করে তারা।

পরিবার বলছে, প্রথমে লোকাল এনেসথেসিয়া প্রয়োগ করার কথা থাকলেও দেওয়া হয় জেনারেল এনেসথেসিয়া। অপারেশনের কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলেও বমি করে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় তাহমিদ।

স্বজনরা বলছেন, তাহমিদ হেঁটে হেঁটে হাসপাতালে এসেছে। এরপর সাড়ে ৮টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। ৯টার পর সে মারা যায়।

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মৃত্যু- মানছেন সবাই। কিন্তু হাসপাতালের দাবি, তার রোগ সম্পর্কে সব তথ্য না জানানোয় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যদি পরিবার সব বলত, তাহলে তারা এসব ওষুধ প্রয়োগ করতো না।

এমন ঘটনার পরও দায় এড়াতে ব্যস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেনারেল এনেসথেসিয়া দেওয়া হয়নি জানিয়ে তাদের দাবি, আগে থেকেই শারীরিক সমস্যা ছিল তাহমিদের। সে ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে সঠিক তথ্য না দেয়াতেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

হাসপাতাল পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির দাবি করেন, ছেলেটির ওজন বেশি ছিল। বয়সও ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। ফুসফুসে সমস্যা ছিল। কিন্তু সব তথ্য পরিবার জানায়নি।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করতে পারলেও অপারেশনের পরপরই পালিয়েছেন একজন।

হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রুহুল আমিন জানান, হট্টগোলের খবর পেয়েই উপস্থিত হন তারা।

শিশু আহনাফ তাহমিদ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।

এর আগে, গত ৩১ ডিসেম্বর খৎনার জন্য আয়ানকে বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ৯টার দিকে শিশুটিকে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়। পরে জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার পিআইসিইউতে (শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

আয়ানের বাবা-মায়ের অভিযোগ, ইন্টার্ন চিকিৎসক দিয়ে সুন্নতে খতনার সময় অতিরিক্ত অ্যানেসথেশিয়া দেয়ায় ঘটেছে এমন ঘটনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *