সিলেটে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আসছে ৫০ হাজার গ্রাহক

সিলেটে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আসছে ৫০ হাজার গ্রাহক

দেশজুড়ে স্লাইড

আগস্ট ২৮, ২০২৩ ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ

সিলেটে জালালাবাদ গ্যাসের ৩ লাখ গ্রাহকের মধ্যে আপাতত ৫০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড গ্যাস মিটারের আওতায় আনা হচ্ছে। বাকিদের পর্যায়ক্রমে গ্যাস মিটারের আওতায় আনা হবে। এই প্রকল্পে প্রায় ১২০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ‘গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ও গ্যাসের অপচয় স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে প্রিপেইড মিটার সংযোগের মাধ্যমে। গ্রাহকের অর্থ ও কোম্পানির গ্যাস সাশ্রয় হবে।’ বললেন জালালাবাদ গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মঞ্জুর আহমদ চৌধুরী।

তবে সমস্যা সৃষ্টি করেছে রাইজার থেকে চুলা পর্যন্ত জিআই সংযোগ লাইন। পরীক্ষামূলকভাবে মিটার লাগানোর পর কোথাও কোথাও দেখা যায়, গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে না। লাইন চেকিংয়ের পর সেই সমস্যাও চিহ্নিত হয়েছে এবং সমাধানের চেষ্টা চলছে। এদিকে আশির দশকে মাটির নিচে স্থাপিত জিআই লাইন আর ব্যবহারের উপযোগী নেই।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, ‘দ্রুত সেগুলোও সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছি। তা না হলে প্রিপেইড মিটারের সুফল পাওয়া যাবে না। সিঙ্গেল বার্নারের সংযোগে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডাবল বার্নারের বৈধ অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক লিটন চন্দ্র নন্দী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ২০১৯ সালে মিটার স্থাপনের জন্য একটি ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্প অনুমোদিত হয়। গ্যাসের প্রিপেইড মিটার স্থাপনের মাধ্যমে গ্রাহকের প্রতি মাসের খরচও কমবে। দুই চুলার গ্যাসের জন্য এখন প্রতি মাসে গ্রাহক ১ হাজার টাকার বেশি বিল দিচ্ছেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে একজন গ্রাহকের মাসে খরচ পড়বে ৩০০ টাকার মতো। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মনিটরিং ব্যয়ও কমবে।

‘স্মার্ট কার্ড’ভিত্তিক উন্নত প্রযুক্তির মিটার জালালাবাদ গ্যাসের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের বিনা মূল্যে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে’—এই তথ্য জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘মিটারের মূল্য মাসিক ভাড়া হিসেবে সমন্বয় করা হবে। নিকটস্থ রিচার্জ পয়েন্ট থেকে ‘স্মার্ট কার্ডের’ মাধ্যমে ক্রেডিট কিনে প্রিপেইড মিটার রিচার্জ করা যাবে। রিচার্জ শেষ হলেও এতে ইমার্জেন্সি ব্যালান্সের সুবিধা থাকবে।’

তিনি বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রিপেইড গ্যাস মিটার থাকলেও সিলেটে প্রথম বারের মতো চালু করা হচ্ছে এ পদ্ধতি।

জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানায়, মিটার স্থাপনের কাজে নিয়োজিতদের সঙ্গে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেনের প্রয়োজন নেই। কেউ কোনো টাকা দাবি করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। মিটার ও মিটার স্থাপনের কাজে ব্যবহৃত পাইপ ফিটিংস বিনা মূল্যে গ্রাহক আঙিনায় পৌঁছে দেওয়া হবে। জালালাবাদ গ্যাস সূত্রে জানা যায়, শুধু একটি চুলা দ্বারা যেসব গ্রাহকের গ্যাসের সংযোগ রয়েছে, সেই সব গ্রাহককে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে মিটার স্থাপন করবে। যেসব গ্রাহকের আঙিনায় দুই বা ততোধিক চুলার মাধ্যমে গ্যাসের সংযোগ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে জালালাবাদ গ্যাস টিঅ্যান্ডডি সিস্টেম লিমিটেডের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার নিয়োগ করে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

সিলেটে আবাসিক পর্যায়ে গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ এটিই প্রথম। প্রকৌশলীরা বলেন, প্রিপেইড মিটার যুক্ত হলে গ্রাহকেরা অহেতুক চুলা জ্বলিয়ে রাখা থেকে বিরত থাকবেন। অহেতুক বিল দিতে হবে না। যতটুকু ব্যবহার ততটুকু বিল আসবে। কর্মকর্তারা জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রতিটি আবাসিক গ্রাহকের মাসিক গড় গ্যাস ব্যবহার ৬৬ ঘনমিটার থেকে ৪০ ঘনমিটারে নেমে আসবে। ফলে গ্রাহকপ্রতি গ্যাস সাশ্রয় হবে গড়ে ২৬ ঘনমিটার। লিকেজ-জনিত অপচয়ও রোধ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *