রিং লাইগেশনে পাইলসের চিকিৎসা

স্বাস্থ্য

জুন ৩, ২০২২ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ

মলদ্বারের জটিল রোগ পাইলস। রোগীরা পাইলস, ফিস্টুলা ও এনাল ফিশারকে অনেক সময় গুলিয়ে ফেলেন। এ তিনটির আলাদা আলাদা উপসর্গ ও লক্ষণ রয়েছে।

পাইলসের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে নানা জনে নানা মত রয়েছে। তবে রিং লাইগেশন পাইলসের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে একটি।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক।

পাইলস রোগে মলদ্বার থেকে মাঝে মধ্যে রক্ত যায়। মলত্যাগের সময় অনেকের মলদ্বার ফুলে ওঠে আবার কারও কারও মাংস পিণ্ড ঝুলে পড়ে যা আবার আপনা আপনি ভেতরে ঢুকে যায় অথবা চাপ দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হয়।

যুগ যুগ ধরে এ জাতীয় রোগীরা প্রতারণার শিকার হয়ে আসছেন। অনেক হাতুড়ে চিকিৎসক আছেন যারা বিনা অপারেশনে চিকিৎসার নামে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। তারা অনেকে মলদ্বারে বিষাক্ত কেমিকেল ইনজেকশন দিচ্ছেন যাতে মলদ্বারে মারাত্মক ব্যথা হয় এবং মলদ্বারের আশপাশে পচন ধরে এবং এ জন্য রোগী অবর্ণনীয় দুঃখ দুর্দশা ভোগ করেন।

পরিণামে কারও কারও মলদ্বার সরু হয় এবং বন্ধ হয়ে যায়। তখন পেটে মলত্যাগের বিকল্প পথ করে দিয়ে ব্যাগ লাগিয়ে দিতে হয়। আবার কোনো কোনো হাতুড়ে চিকিৎসক বিষাক্ত কেমিকেল পাউডার দেন যা মলদ্বারে লাগালেও মলদ্বার পচে ঘা হয়ে যায় এবং রোগীর একই পরিণতি হয়।

লেজার সার্জারির মাধ্যমে ধন্বন্তরি পাইলস চিকিৎসা হচ্ছে। বিষয়টি মোটেই সত্য নয়। কারণ এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে লেজারের মাধ্যমে পাইলস চিকিৎসায় কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নেই। রিং লাইগেশন এবং লংগো অপারেশনের মাধ্যমে প্রায় ১০০ ভাগ রোগীর মলদ্বারে কোনো রূপ কাটাছেঁড়া ছাড়া চিকিৎসা করা সম্ভব। প্রচলিত অপারেশনে মলদ্বারের তিনটি মাংস পিণ্ড কাটতে হয়। যা আজকাল আমরা শুধু তাদের জন্যই করি যারা রিং লাইগেশনের জন্য উপযুক্ত নয় এবং লংগো অপারেশনের যন্ত্র কিনতে অক্ষম।

লেজার দিয়ে পাইলস অপারেশন প্রচলিত অপারেশনের মতোই। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে এ ক্ষেত্রে লেজার বিম দিয়ে কাটা হয় এবং প্রচলিত অপারেশনে সার্জিক্যাল নাইফ দিয়ে কাটা হয়। প্রচলিত অপারেশনের মতো লেজার অপারেশনেও তিনটি ক্ষত স্থান হবে। লেজার অপারেশনের পর সাধারণত অপারেশনের মতোই ব্যথা হয় ঘা শুকাতে ১-২ মাস সময় লাগে। এবং প্রচলিত অপারেশনের মতোই একই ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।

পাইলস চিকিৎসার জন্য বহু ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। যেমন ইনজেকশন, রিংলাইগেশন, ইলেকট্রোকোয়াগুলেশন, আল্ট্রয়েড, ক্রায়োথেরাপি ইনক্রারেড ফটোকোয়াগুলেশন, এনাল ডাইলেটেশন, লেজার থেরাপি, প্রচলিত অপারেশন এবং লংগো অপারেশন।

সব ধরনের পদ্ধতির মেরিট এবং ডিমেরিট বিবেচনা করলে এবং বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সার্জনদের প্র্যাকটিস বিবেচনা করলে তিনটি পদ্ধতি বেশি প্রচলিত আর তা হচ্ছে রিংলাইগেশন, লংগো অপারেশন ও প্রচলিত অপারেশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *