রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা আবারও বাড়তে শুরু করেছে

রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা আবারও বাড়তে শুরু করেছে

আন্তর্জাতিক

জুন ১৬, ২০২৩ ৮:২০ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা আবারও বাড়তে শুরু করেছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী যখন হারানো অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধারে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে, তখন রাশিয়াও আক্রমণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বুধবার ভোররাতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও সুমি অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্রজ মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। আলজাজিরা ও রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।

ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, রাশিয়ার এসব হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং প্রায় অর্ধশত লোক আহত হয়েছেন। এছাড়া বাড়ি, স্কুল, গুদামসহ অসংখ্য অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে সুমি অঞ্চলে। সেখানে রাশিয়ার হামলায় সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত সবাই ইউক্রেনের বন বিভাগের কর্মী।

ইউক্রেন দাবি করেছে, রাশিয়া বুধবার যেসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, তার একটি বড় অংশ ঠেকিয়ে দিয়েছে তাদের বাহিনী। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল রুশ বাহিনী। এর মধ্যে ১২ ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকিয়ে দিতে পেরেছে ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী। তাছাড়া ১০টি ইরানের তৈরি ড্রোন নিক্ষেপ করেছিল রুশ বাহিনী। এর মধ্যে ৯টি ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

রুশ হামলার মধ্যেই নিজেদের হারানো এলাকা পুনরুদ্ধার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। ইউক্রেনের শীর্ষ জেনারেল ভালেরি জালুঝনি ফেসবুকে লিখেছেন, দেশের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে প্রতিরোধ এবং পাল্টা আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তাদের সেনারা বেশ কিছু এলাকায় এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।

সিএনএন বলছে, মস্কো সমর্থিত কর্মকর্তা এবং সামরিক ব্লগারদের কাছ থেকে সর্বশেষ যুদ্ধের যে প্রতিবেদন এসেছে, তাতে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউক্রেনীয় বাহিনী সাফল্যের বিষয় স্বীকার করা হয়েছে।

ভূ-অবস্থানকৃত ভিডিও অনুসারে, কিয়েভের বাহিনী শনিবার ইউক্রেন নদীর তীরবর্তী কয়েকটি ছোট গ্রাম দখল করেছে। ইউক্রেনের ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার বলেছেন, এই অঞ্চলে কিয়েভের অগ্রগতির পরিমাণ প্রায় ৯০ কিলোমিটার।

রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনও ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের সফলতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে কিয়েভ ৭টি গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে।

প্রিগোজিন বলেছেন, আক্রমণ শুরু করেছে ইউক্রেনীয়রা। তারা সুনির্দিষ্টভাবে এগোচ্ছে, সবকিছু সঠিকভাবে করছে। তার ধারণা, ইতোমধ্যে প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুনরুদ্ধার করে ফেলেছে ইউক্রেনীয় সেনারা।

ইউক্রেনীয় বাহিনীর রুশবিরোধী পাল্টা হামলায় রসদ যোগাতে যুক্তরাষ্ট্রের কিয়েভকে আরও সামরিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

এছাড়া উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স, জার্মানি ও পোল্যান্ড। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ এবং পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা এ নিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বৈঠক করেছেন।

এদিকে, রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র পেতে শুরু করেছে বেলারুশ। দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা এসেছে। বোমাগুলো জাপানের নাগাসাকি ও হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত পারমাণবিক বোমার চেয়েও ৩ গুণ বেশি শক্তিশালী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *