ব্যাট ছাড়াই খেলবে পিটিআই

ব্যাট ছাড়াই খেলবে পিটিআই

আন্তর্জাতিক

জানুয়ারি ৪, ২০২৪ ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) গত ২২ ডিসেম্বর পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আন্তঃদলীয় নির্বাচনকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা দিয়ে কেড়ে নিয়েছিল তাদের দলীয় নির্বাচনি প্রতীক ‘ব্যাট’।

পরবর্তী সময়ে ইসিপির এমন সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে পেশোয়ার হাইকোর্টের (পিএইচসি) দ্বারস্থ হয় ইমরান খানের দল। গত ২৬ ডিসেম্বর পিএইচসি পিটিআই-এর আন্তঃদলীয় নির্বাচনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করার পাশাপাশি ‘ব্যাট’ প্রতীক বাতিলের ইসিপির ঘোষণাকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেছিল। তবে বুধবার ইসিপির আগের সিদ্ধান্তকেই পুনর্বহাল করেছে পিএইচসি।

আদালতের এমন রায়ের পর নির্বাচনের মাঠে এবার প্রিয় প্রতীক ‘ব্যাট’ ছাড়াই খেলতে হবে পিটিআইকে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে এই দলের সদস্যদের। তবে পিএইচসির এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের (এসসি) দ্বারস্থ হবে বলে জানিয়েছে পিটিআই। ডন, জিইও নিউজ।

এর আগেই (সোমবার) দলীয় প্রতীক ব্যাট না পেলেও পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে পিটিআই অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছিলেন দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর গোহর খান।

পিএইচসির রায়ের পরপরই এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো অবস্থায়ই বয়কটের দিকে যাব না। আমরা এসসিকে অনুরোধ করব যে ‘ব্যাট’ দরকার নেই, অন্য কোনো প্রতীক দিন। আইন বলে যে রাজনৈতিক দল ও তাদের প্রার্থীদের একটি সাধারণ প্রতীক থাকা দরকার, তা যাই হোক না কেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এই সিদ্ধান্তটি তাড়াহুড়ো করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের কাছে যাব। সুতরাং আমরা এসসিকে অনুরোধ করছি, আমরা আগামীকাল আপনার কাছে আসব। আমাদের এই দয়া করুন আর আমাদের কথা শুনুন।’

পিএইচসির রায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ইসিপির প্রতি পক্ষপাতের সবচেয়ে বড় প্রতিফলন’ বলে উল্লেখ করেন। আমি মনে করি পিটিআই থেকে ‘ব্যাট’ কেড়ে  নেওয়া নির্বাচনের ক্ষেত্রে বৈধতার প্রশ্ন তুলে।

তিনি বলেন, ‘আপনি যদি ‘ব্যাট’ কেড়ে নেন, তাহলে বিশ্ব আপনার নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে না।

তবে পাকিস্তানের আইনানুযায়ী, কোনো দল নির্বাচনি প্রতীক পেতে ব্যর্থ হলে তার প্রার্থীদের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের আসনে স্বতন্ত্র হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিধান রয়েছে। এছাড়া কোনো প্রার্থী শুধু ইসিপিতে যথাযথভাবে তালিকাভুক্ত কোনো দলে যোগ দিতে পারে। তাই সেক্ষেত্রে নির্বাচনে জয়ের পরও কোনো প্রার্থীর পিটিআইতে যোগ দেওয়া সম্ভব হবে না।

বিচারপতি এজাজ খানের সমন্বয়ে গঠিত একক সদস্যের বেঞ্চ ইসিপির সিদ্ধান্তকে পুনর্বহাল করেছেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী সিকান্দার বশির মহমান্দ ও অ্যাডভোকেট শাহ ফয়সাল উথমানখেল ও কাজী আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত পিটিআইয়ের আইনি দল।

ছয় পৃষ্ঠার আদেশে এজাজ খান বলেন, ‘পিএইচসি’র আগের রায় ‘প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের মসৃণ প্রক্রিয়াতে বাধা সৃষ্টি করেছিল। যার কারণে পিটিআই-এর পক্ষে পাশ করা এই আদালতের অন্তর্র্বর্তী আদেশ এতদ্বারা প্রত্যাহার করা হলো।’

পিএইচসির রায়ে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে তার সাংবিধানিক আদেশ অনুযায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

গত শনিবার নির্বাচনি পর্যবেক্ষণ সংস্থা পিএইচসিতে একটি পর্যালোচনা পিটিশন দাখিল করেছিল। আগের শুনানিতে পিটিআইয়ের আন্তঃদলীয় নির্বাচনকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা ও প্রতীক বাতিলকে পিএইচসির স্থগিত ঘোষণার মাধ্যমে আদালত তার এখতিয়ার লঙ্ঘন করেছে বলে যুক্তি দিয়েছিলেন ইসিপি আইনজীবীরা। এস ময় ইসিপিকে শুনানির সুযোগ দেওয়া হয়নি বলেও জানিয়েছেন তারা। আরও বলেছে, ‘আদালতের পিটিআইয়ের পক্ষে নেওয়া সিদ্ধান্ত আইন অনুযায়ী অনুমোদিত নয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *