বিজিপিসহ ৩৩০ জনকে ফিরিয়ে নিল মিয়ানমার

বিজিপিসহ ৩৩০ জনকে ফিরিয়ে নিল মিয়ানমার

জাতীয় স্লাইড

ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪ ১২:৪২ অপরাহ্ণ

বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মির সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে প্রাণভয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা দেশটির সীমান্ত রক্ষী পুলিশসহ (বিজিপি) ৩৩০ জনকে বৃহস্পতিবার হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে বিজিবির কড়া পাহারায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত ও টেকনাফ থেকে তাদের কক্সবাজারের ইনানীর নৌবাহিনীর জেটি ঘাটে আনা হয়।

মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিকে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সফলতা হিসাবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। এ কূটনৈতিক পন্থা অনুসরণ করে আশ্রিত রোহিঙ্গাদেরও দ্রুত হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা উচিত বলে তারা মন্তব্য করেন। সীমান্তে স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের জন্য বাংলাদেশকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

মিয়ানমারের নাগরিকদের বুঝে নিতে সকালে দেশটির সীমান্ত রক্ষী পুলিশের কর্নেল মিও থুরা নউংয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জাহাজে ইনানীর নৌবাহিনীর জেটিতে আসেন। তাদের কাছে মিয়ানমারের সেনা, বিজিপি ও শুল্ক কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জনকে পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমারবিষয়ক পরিচালক রাকিবুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব রাশেদ হোসেন চৌধুরী, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজিবি জানায়, বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, চারজন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুজন সেনাসদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও চারজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেশটির কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়।

এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ বাংলাদেশের সীমানায় এসে গভীর সাগরে অবস্থান নেয়। জাহাজটি থেকে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল ইনানীর নৌবাহিনীর জেটিতে আসে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ও বিজিবি প্রধানের উপস্থিতিতে বেলা ১১টার দিকে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়।

বিকালের মধ্যে সবাইকে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বান্দরবানের ঘুমধুম হাইস্কুলে থাকা ১৬০ বিজিপি সদস্যকে বিজিবির ছয়টি বাসে ইনানী ঘাটে আনা হয়। আর টেকনাফ হ্নীলা হাইস্কুলে থাকা ১৬৬ বিজিপি সদস্যকে অন্য ছয়টি বাসে সাড়ে ৮টার দিকে ঘাট এলাকায় আনা হয়।

২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের মধ্যে বিদ্রোহীরা বিজিপির তুমব্রু রাইট ক্যাম্পসহ কয়েকটি সীমান্ত ফাঁড়ি দখল করে নিলে বিজিপির সদস্যরা ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেন। তাদের নিরস্ত্র করে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজিবি হেফাজতে রাখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *