বিএনপির কাছে ক্ষমতা ভোগের বস্তু লুটের মাল

বিএনপির কাছে ক্ষমতা ভোগের বস্তু লুটের মাল

জাতীয় স্লাইড

ডিসেম্বর ১৬, ২০২২ ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি জনগণকে পরোয়া করে না। ক্ষমতায় গেলে তারা নির্বাচন নিয়ে, মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। এটা বিএনপির চরিত্র। তার কারণ একটাই, বিএনপি গণমানুষের দল না। ওরা মানুষকে পরোয়া করে না। ক্ষমতা ওদের কাছে ভোগের বস্তু, লুটের সুযোগ, লুটের মাল। আর বাংলাদেশের মানুষ তাদের কাছে কিছুই না। বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপিকে ২০০৮ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের নির্বাচনের ফল স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজ নির্বাচন নিয়ে এত কথা বলেন। ২০০৮-এ নির্বাচন নিয়ে তো কথা হয়নি। জাতীয়, আন্তর্জাতিক কেউ তো সে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। ৩০০ সিটের নির্বাচনে বিএনপি কয়টা পেয়েছিল? মাত্র ৩০টি সিট। জাতীয় পার্টি পায় ২৭টি সিট। জাতীয় পার্টি আর কয়েকটা সিট পেলে খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেতাও হতে পারতেন না। তাহলে এত লাফালাফি কেন?

২০০১-পরবর্তী বিএনপি আমলের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর চরম নির্যাতন নেমে এসেছিল। অনেক নেতাকর্মীর চোখ তুলে নিয়েছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে অনেকের হাড় গুঁড়া গুঁড়া করে দিয়েছে। জেলে দিয়েছে। একেকটা নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শত শত মামলা দিয়েছে। হয়রানির চরম অবস্থা। সারা দেশে ঠিক পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে এ দেশে নারীদের ওপর অত্যাচার করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, অগ্নিসংযোগ করেছে; বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো সেই অত্যাচার-গণহত্যার পুনরাবৃত্তি ঘটায়।

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা ভুলে গেছেন, ২০০১-এ দক্ষিণাঞ্চলে কোনো সাংবাদিক ঢুকতেই পারত না। সে অঞ্চলে তাণ্ডব করেছিল। গৌরনদী থেকে একটা গ্রুপ কোটালীপাড়ায় এসে আশ্রয় নিয়েছিল ’৭১-এর মতো। শেখ হাসিনা বলেন, এদের দুঃশাসন চরম পর্যায়ে। আমরা আওয়ামী লীগ অফিসে যেতে পারতাম না। রাজনীতি করার সুযোগ ছিল না। যুব মহিলা লীগ করার পর সব বাধা অতিক্রম করে আমার এই মেয়েরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছে। এই মেয়েদেরও কিন্তু ওরা ছাড়েনি! একদিকে পুলিশ বাহিনী, আরেকদিকে ছাত্রদল; বিএনপির গুন্ডা বাহিনী। অকথ্য নির্যাতন করেছে আমাদের মেয়েদের ওপর। তারা যে অত্যাচার করেছে, আমরা কিন্তু এর কিছুই তাদের ওপর করিনি। আমরা প্রতিশোধ নিতে যাইনি, দেশের উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু লোক আছে গুজব ছাড়ানোর। তারা বলছে, ব্যাংকে নাকি টাকা থাকবে না। তাদের গুজবে কান দিয়ে মানুষ টাকা তুলে ঘরে রাখছে। এতে তো টাকা চুরির যাওয়ার আশঙ্কা আছে। যারা গুজব ছড়াচ্ছে, তারা চোরদের এজেন্ট কি না জানি না।

যুব মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অন্যায়ে বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করেছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। সংগঠনটির নেত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গ্রামের মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।’

এর আগে বেলা ১১টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সম্মেলন ঘিরে সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে উপস্থিতির সংখ্যাও। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে যুব মহিলা লীগের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যুব মহিলা লীগের সদ্যবিদায়ি সভাপতি নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে এবং সদ্যবিদায়ি সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *