বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় স্লাইড

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩ ১২:০৩ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ একটি স্মার্ট, উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হয়ে ওঠার জন্য এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশ আর কখনও পেছনে ফিরে তাকাবে না, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।’

রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ও ভিডিপি অ্যাকাডেমিতে বাহিনীটির ‘৪৩তম জাতীয় সমাবেশ-২০২৩’-এ প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তির প্রসারের যে পদক্ষেপ নিয়েছি, এতে এই দেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলবো। স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি, আমরা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি, আমাদের দেশে মেট্রোরেল চালু হয়েছে, পাতালরেলও চালু হবে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল করে দিচ্ছি, পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থায়নে আমরা করেছি। আর এই প্রতিটি স্থাপনার নিরাপত্তার সঙ্গে আনসার বাহিনী বিশেষভাবে জড়িত রয়েছে।’

দেশ অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, আমরা আরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

ছবি- ফোকাস বাংলা

ছবি- ফোকাস বাংলা

এর আগে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক এবং বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট মো. ফখরুল আলম তাকে স্বাগত জানান।

প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৮০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্যের হাতে আটটি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন পদক তুলে দেন। পরে তিনি আনসার অ্যাকাডেমিতে বিভিন্ন স্থাপনা উদ্বোধন করেন এবং আনসার ও ভিডিপি পরিবেশিত বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কোরিওগ্রাফি উপভোগ করেন।

বিএনপি জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে আনসার বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস ও জ্বালাও পোড়াও যখন বিএনপি জামাত জোট শুরু করেছিল, বাস, ট্রেন, লঞ্চ, গাড়িতে যখন তারা আগুন দিচ্ছিল, আনসার বাহিনীর সদস্যরা তখন নিজ নিজ এলাকায় দায়িত্ব পালন করে এই অগ্নিসন্ত্রাস থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে যথেষ্ট সহায়তা করেছে। তাছাড়া জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনেও ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

‘পাশাপাশি খেলাধুলা এবং শরীরচর্চাসহ ক্রীড়াঙ্গনেও আনসার বাহিনীর সদস্যরা বিরাট ভূমিকা রেখে যাচ্ছে এবং অনেক পুরস্কারও পাচ্ছে’, যোগ করেন তিনি।

ছবি- ফোকাস বাংলা

ছবি- ফোকাস বাংলা

দেশের তৃণমূলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা বিনা পয়সায় ঘর করে দিচ্ছি এবং তাদের জীবন মান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় করোনা পরবর্তী রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কথা উল্লেখ করে দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে গ্রামীণ জনগণকে আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা সহায়তা করতে পারে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার অতিমারি এবং পরবর্তী রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক যে মন্দা দেখা দিয়েছে, তা থেকে আমাদের মুক্ত রাখতে হবে। এজন্য জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমি আহ্বান করেছি এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে, যত অনাবাদি জমি আছে, সব আবাদ করতে হবে। সেক্ষেত্রে গ্রামের লোকদের শেখানো, তাদের দিয়ে কাজ, ফসল উৎপাদন ও তা সংরক্ষণের করানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কিন্তু আনসার ও আমাদের গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা পালন করতে পারেন। আমি আশা করি আপনারা তা রাখবেন।’

তিনি পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এভাবেই আপনাদের কাজের স্বীকৃতি দিয়ে কাজের উৎসাহ যেন বৃদ্ধি পায় সেটাই আমরা নিশ্চিত করতে চাই।’ বাংলাদেশ আনসার বাহিনী এখন আধুনিক ও মডেল ব্যাটালিয়নে রূপ দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে আনসার বাহিনীর উন্নয়নে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। আমরা আনসার বাহিনীর জন্য নতুন আইন প্রণয়ন, সিডমানি দিয়ে ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠান, কমব্যাট ড্রেসসহ তাদের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।’

ছবি- ফোকাস বাংলা

ছবি- ফোকাস বাংলা

তিনি বলেন, ‘১৯৯৮ সালে আনসার বাহিনীকে জাতীয় পতাকা দিয়েছি। নানা সুযোগ-সুবিধা ও চাকরি স্থায়ী করেছি। আনসার বাহিনীর পদোন্নয়ন ও বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আনসার সদস্যরা মাসিক যে ভাতা পান, তা বাড়ানো হয়েছে। ২৭টি উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন অফিস ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন অফিস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গরিব আনসার সদস্যদের জন্যও নতুন ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তখনই আনসারদের জন্য সবকিছু করা হয়।’

তিনি ভাষণের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে আনসার বাহিনীর সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি মুজিবনগর সরকারকে তাদের গার্ড অব অনার প্রদানের কথাও উল্লেখ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *