বাংলাদেশকে জিততে হলে আগাতে হবে যে পথ ধরে..

বাংলাদেশকে জিততে হলে আগাতে হবে যে পথ ধরে..

খেলা স্লাইড

অক্টোবর ৩০, ২০২২ ৯:০১ পূর্বাহ্ণ

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে বেশ আশা নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তরুণ একটা দল, আশার পারদটা বাড়িয়ে দিয়েছিল আরো। নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেটার প্রতিফলন দেখা গেলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আবারও সেই পুরনো বাংলাদেশ।

নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে প্রথম পর্ব পেরিয়ে আসা জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। এই ম্যাচে হলে বাংলাদেশকে কোন পথে এগোতে হবে, সেদিকেই চোখ রেখেছে ‘ডেইলি বাংলাদেশ’…

বিশ্বকাপের মূল পর্বের দুই ম্যাচে ভিন্ন দুই বাংলাদেশকে দেখা গেছে। প্রথম ম্যাচে তিন বিভাগেই দুর্দান্ত ছিলেন সাকিবরা। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ঠিক তার বিপরীত। বোলিংয়ে ছন্দ হারানোর পর ব্যাটিংয়ে নেমেও সেই পুরনো স্রোত, আসা-যাওয়ার মিছিল। ফলাফল, বিশাল ব্যবধানে হার!

তৃতীয় ম্যাচে এই ধারা পাল্টাতে হলে বাংলাদেশকে তিন বিভাগেই জ্বলে উঠতে হবে। কেননা ইতিমধ্যে পাকিস্তানকে হারিয়ে বেশ ভালোভাবেই নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। তাতে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের সেই চিরচেনা কথিত ‘অ্যাশেজ’-এর লড়াই দেখা যেতে পারে আরেকবার।

টি-২০তে মোট ১৯ বার জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। তাতে বাংলাদেশের ১২ জয়ের বিপরীতে জিম্বাবুয়ের জয় ৭টি। এদিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও সবশেষ ম্যাচগুলোর হিসেব বলছে ভিন্ন কথা। তাতে বাংলাদেশের অসহায়ত্বই ফুটে উঠেছে বেশি।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সবশেষ ৫ বারের দেখায় জিম্বাবুয়ের জয় তিনটি, বাংলাদেশের দুটি। আর নিজেদের খেলা সবশেষ ৫ ম্যাচে মাত্র একটিতে হেরেছে জিম্বাবুয়ে। বিপরীতে ৩ জয় তুলে নিয়েছে তারা। এর মধ্যে পাকিস্তানও আছে পরাজিতের তালিকায়।

ঐদিকে সবশেষ নিজেদের খেলা সবশেষ পাঁচ ম্যাচে একটি মাত্র জয়ের বিপরীতে চার ম্যাচে আলোর মুখ দেখেনি সাকিবরা। পরাজয়ের পর পরাজয়ে দলের অবস্থাও বেহাল। জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরতে হলে বাংলাদেশকে নিজেদের সেরাটাই খেলতে হবে।

মূল কাজটা করতে হবে ব্যাটারদের। এক্ষেত্রে জ্বলে উঠতে হবে সৌম্য সরকারকে। প্রথম দুই ম্যাচে নিজের চেনা ফর্মটা দেখাতে পারেননি সৌম্য। তবে শুরুতে যে ইঙ্গিতটা দিয়েছেন সেটাকে এবার ধরে রেখে ইনিংস বড় করার চেষ্টাই পারে দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দিতে।

লিটন কুমার দাস অনেকদিন ধরেই ব্যাটিং স্তম্ভের মূল ভরসা। তবে বিশ্বকাপে চেনা ছন্দের লিটনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লিটনের ব্যাটের দিকেও তাকিয়ে থাকবে দেশ। জয়ের পথটা দেখানোর শুরুটা হতে হবে লিটনের ব্যাটের আলোয়।

মিডল অর্ডারে দায়িত্বটা নিতে হবে আফিফ হোসেন ধ্রুবকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাট হাতে এ তরুণের রেকর্ড বেশ ভালো। ১০ ম্যাচের ৭ ইনিংসে ব্যাট করে এক ফিফটিতে ১৭৬ করেছেন আফিফ। সেটাকে আরেকটু বাড়িয়ে নিতে আরেকবার ব্যাট হাতে ব্রিসবেনে জ্বলে উঠতে হবে তাকে।

অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে বোলাররা বেশ ইফেক্ট ফেলছেন। বিশেষ করে ফাস্ট বোলাররা। তাসকিন আহমেদ গতির ঝড় তু্লছেন, হাসান মাহমুদ নিজেকে জানান দিচ্ছেন। মুস্তাফিজ বড় ম্যাচে রান আটকে রাখছেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও এই ধারাটা তাদেরকে ধরে রাখতে হবে।

বর্তমান দলের পেস আক্রমণের নেতা ধরা হয় তাসকিনকে। সুইং, গতি, বাউন্স মিলিয়ে ব্যাটসম্যানদের জন্য দুর্বোধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তার বলের ভাষা বোঝা দায়। ইতিমধ্যে দুই ম্যাচে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন ‘ঢাকা এক্সপ্রেস’। প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের সাজঘরে ফেরত পাঠাতে তার দিকেই চেয়ে থাকবেন অধিনায়ক সাকিব।

বিশ্বকাপে তাসকিনকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন হাসান মাহমুদ। স্মুথ অ্যাকশন, দুর্দান্ত লাইন লেংথে দলের ভরসা হয়ে উঠছেন এ তরুণও। রান আটকাতে তার জুড়ি মেলা ভার। ব্রিসবেনে রান আটকানোর পাশাপাশি হাসানকে উইকেটও তুলে নিতে হবে।

ব্যাটে-বলে দু’দিক থেকে অবশ্য একজনকেই জ্বলে উঠতে হবে। তিনি সাকিব আল হাসান। আসরে এখনো নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি সাকিব। তবে একবার জ্বলে উঠলে প্রতিপক্ষের পরাজয় নিশ্চিত। দলকে জেতাতে সাকিবও চাইবেন অফ-ফর্মের আঁধার থেকে বেরিয়ে আসতে। আলোর ধারায় রাঙাতে চাইবেন জয়ের সুবাসে।

অধিনায়ক সাকিবকেও তাই জ্বলে উঠতে হবে। বলা যায়, অধিনায়কই ব্যাটে বলে হয়ে উঠতে পারেন ট্রাম্পকার্ড। তবে বাইশগজের লড়াইয়ে কি হবে সেটার জন্য অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট যে রহস্যে মোড়ানো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *