বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন সুপ্রীমকোর্ট বার শাখার উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন

দেশজুড়ে স্লাইড

জানুয়ারি ১০, ২০২৩ ১১:৫৭ অপরাহ্ণ

এ আর রাজ

১০ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী থাকার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসেন। সেই থেকে দিনটিকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে পালন করছে জাতি। এই উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন সুপ্রীমকোর্ট বার শাখার উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আজ বিকাল সাড়ে ৩টায় সুপ্রীমকোর্ট বার অডিটরিয়ামে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

অ্যাডভোকেট গৌরাঙ্গ চন্দ্র করের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী মোঃ নজিবুল্লাহ হিরু।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন সুপ্রীমকোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু নাসের স্বপন। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালের বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ভাষণ দিয়ে শুরু হয় আজকের অনুষ্ঠান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মোঃ নজিবুল্লাহ হিরু বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে মৃত্যুর আগমুহূর্তে বলা হলো বাঙালিরা আপনাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছেন যে বাঙালি আমার ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে সেই বাঙালি এটা কখনোই করতে পারে না। বঙ্গবন্ধু সারা বাংলাদেশের মানুষকে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো এক সুতোয় গেঁথে সামনে এগিয়ে গিয়েছিলেন।

এছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর অবদানের কথা তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র গড়ে তুলতে ইন্দিরা গান্ধীর কাছ থেকে যুদ্ধশেষে ভারতীয় সৈন্যদের প্রত্যাহার, ফারাক্কার পানি বণ্টন নীতিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বুদ্ধিমত্তার সাথে করিয়ে নিয়েছিলেন।

পরবরর্তীতে তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, যে দলের প্রধানমন্ত্রী কে হবে তার কোনো ঠিক নেই, সেই দল কিভাবে নির্বাচন করবে। তিনি আরো জানান, আমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করি, লড়াই করি।

গৌরাঙ্গ চন্দ্র কর বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করি। কিন্তু এই বিজয় পূর্ণতা পায়নি যতক্ষণ না পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বিজয়ের মহানায়ক শেখ মুজিব মুক্তি পান। তার অনুপস্থিতিতে বিজয় ছিল অসম্পূর্ণ। সেই অসম্পূর্ণ বিজয় পূর্ণতা পেয়েছিল ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি।

তিনি বলেন, আজকের এই দিনের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন একটি আদর্শ রাষ্ট্র। সেই আদর্শ রাষ্ট্র আমাদের অঙ্গীকার। সেই আদর্শ রাষ্ট্র আমরা প্রতিষ্ঠা করব।

স্বাগত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট কাজী সারোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ চিন্তা করার সুযোগ নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ১০ই জানুয়ারি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সাল থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২-এ তা পূর্ণতা পেয়েছে। এই ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে পরিবারের কাছে যায়নি, গিয়েছিলেন জনগণের কাছে। কারণ তিনি আজীবন জনগণের জন্য কাজ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যা বলেন তা করেন। তার বাস্তবায়ন হয়। ভুট্টো যে ষড়যন্ত্র করেছিল এখনো সে ষড়যন্ত্র চলছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে সবাই মিলে এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।

এ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ সময় কারাগারে বন্দি অবস্থায় ছিলেন। অনেক কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি সাহস ধরে রেখেছিলেন। কখনো মাথা নত করেননি।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর নূর দুলাল বলেন, একটি দোয়েল পাখি, কাঁঠাল, শাপলা ফুল সবকিছুর একটা জাতীয় স্ট্যাটাস রয়েছে। এই স্ট্যাটাস দিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ আর বাংলাদেশকে স্বাধীনতার স্ট্যাটাস দিয়েছে, স্বাধীন সার্বভৌমত্ব উপহার দিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি অ্যাড. ড. মশিউর মালেক বলেন, নির্বাচনে যদি কেউ অপচেষ্টা করার পাঁয়তারা করে তবে আমরা তা প্রতিহত করবো। আমরা রাজপথেসহ সর্বত্র বিরাজমান থাকবো। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে নির্বাচনে আবার জয়যুক্ত করব ইনশাল্লাহ। কোন শক্তি রুখতে পারবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল ইসলাম ঠান্ডু বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করেছি বলেই আমরা ১০ই জানুয়ারি পেয়েছি। আজ আমার কষ্ট লাগে যাদের সাথে ৬ দফা আন্দোলন করেছি, ’৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ করেছি তারাই স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে, অস্ত্র ধরেছে এই জাসদ নামধারীরা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক মিয়া, সহ-সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সহ-সভাপতি ডা: আব্দুস সালাম, সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদা হক কণিকা, সহ-সভাপতি কাজী মফিজুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ ওসমানী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক বাসেদ সুমন, আজীবন সদস্য সৈয়দ আইনুল হক, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক টিপু সুলতান, হাসান নাসির মিলন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *