নোয়াখালীতে বিষাক্ত রাসেল ভাইপারের দেখা মিলেছে

দেশজুড়ে

ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩ ১০:১০ অপরাহ্ণ

রিপন মজুমদার নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ভূমিহীন বাজারের পাশে ধানখেতে ভয়ংকর বিষধর রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের দেখা মিলেছে। তবে স্থানীয়রা প্রথমে অজগর সাপ মনে করলেও বন বিভাগের কর্মকর্তারা পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর সাপ রাসেল ভাইপার বলে শনাক্ত করেন।
সাপটিকে চট্টগ্রাম ভেনম রিসার্চ সেন্টারে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলায় নদীপাড় এলাকায় গ্রামগুলোতে বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপকূলীয় বন বিভাগ নোয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সুবর্ণচর উপজেলায় ভূমিহীন বাজারের পাশে ধানখেতে রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের দেখা মেলে। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী ইউনিটের সদস্যরা ৪ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি রাসেল ভাইপার সাপ উদ্ধার করেন। ধারণা করা হয়, পানির সঙ্গে মেঘনা নদী দিয়ে থেকে সুবর্ণচর উপজেলার নদীর তীরবর্তী এলাকায় এ সাপ নেমে এসেছে।
উল্লেখ্য, মারাত্মক বিষধর প্রজাতির এ রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ নিচু জমির ঘাসযুক্ত উন্মুক্ত পরিবেশে এবং কিছুটা শুষ্ক পরিবেশে বাস করে। এরা নিশাচর, এরা খাদ্য হিসেবে ইঁদুর, ছোট পাখি, টিকটিকি ও ব্যাঙ ভক্ষণ করে। অন্যান্য সাপ সাধারণত ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। তবে রাসেল ভাইপার সাপ ডিম পাড়ার পরিবর্তে সরাসরি বাচ্চা দেয়। এরা বছরের যে কোনো সময় প্রজনন করে।
একটি স্ত্রী সাপ গর্ভধারণ শেষে ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে কোনো কোনো রাসেল ভাইপার সাপের ৭৫টি পর্যন্ত বাচ্চা দেওয়ার রেকর্ড আছে। এরা প্রচণ্ড আক্রমণাত্মক হয়ে থাকে।
পৃথিবীতে প্রতি বছর যত মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়, তার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ এই রাসেল ভাইপারের কামড়ে মারা যায়। অন্যান্য সাপ মানুষকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলেও এ সাপটির স্বভাব ঠিক তার উল্টো। আক্রমণের ক্ষিপ্রগতি ও বিষের তীব্রতার কারণে ‘কিলিংমেশিন’ হিসেবে বদনাম রয়েছে সাপটির। এদের বিষদাঁত বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃহৎ। এরা প্রচণ্ড জোরে হিস হিস শব্দ করতে পারে।
রাসেল ভাইপারের বিষ হোমটক্সিন, যার কারণে কামড় দিলে মানুষের মাংস পচে যায়। কামড়ের ক্ষিপ্রগতির দিক দিয়ে সব সাপকে হারিয়ে রাসেল ভাইপার প্রথম স্থান দখল করেছে।
দুর্লভ প্রজাতির একটি সাপ। আগে শুধু বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে এ সাপ পাওয়া গেলেও বর্তমানে এরা পদ্মা নদীর তীরবর্তী জেলা ও চরগুলোতেও বিস্তার লাভ করেছে। সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই কার্যকর পথ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *