নীরবে কানাডার পাশে মিত্ররা

নীরবে কানাডার পাশে মিত্ররা

আন্তর্জাতিক স্লাইড

সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩ ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ

ভারত-কানাডা দ্বন্দ্ব দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে সার বিশ্বে। চিড় ধরা সম্পর্কের ফাটল আরও গভীর হচ্ছে পালটাপালটি আক্রমণে। পক্ষপাতিত্বের বেড়াজালে মিত্রদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবার। ভারত নাকি কানাড, এমন দোটানা পরিস্থিতিতে নীরবে কানাডার পাশেই মিত্রদের থাকার আভাস মিলছে। হরদীপ সিং নিজ্জর (৪৫) হত্যাকাণ্ডে ভারতের বিপক্ষে ট্রুডোর শক্ত অবস্থানে নড়েচড়ে বসেছে দুই দেশের ঘনিষ্ঠ মিত্ররা। পাঁচ দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ‘ফাইভ আই’র কাছেও রয়েছে যুক্তিসিদ্ধ প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের গোয়েন্দা সংস্থা ভারতের বিপক্ষে এ প্রমাণ নিয়ে সুনিশ্চিত। নিউইয়র্ক টাইমস, এপি, বিবিসি, এনডিটিভি, দ্য গার্ডিয়ান।

এর আগে বুধবার হোয়াইট হাউজ থেকে মুখ খুলেছিলেন মার্কিন নিরাপত্তা পরিষদের কাউন্সিল জন কিবরি। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র কানাডাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, এমন যেকোনো প্রতিবেদন ‘শুধুমাত্র মিথ্যা’। তবে তিনি জানান, ক্রমবর্ধমান এ দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। তিনি আরও বলেন, ‘সামনে আসা তথ্যগুলো নিয়ে যথাযথ তদন্ত করা এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা উচিত।’ এছাড়াও এ তদন্তে কানাডাকে সহযোগিতার আহ্বানও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে মতামত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরাও। কানাডার ইতিহাসবিদ ওয়েসলি ওয়ার্ক বলেছেন, ‘এটি কিছুটা অপেক্ষার খেলা। যদি কানাডিয়ানরা গুপ্তহত্যার চেষ্টায় ভারতীয় রাষ্ট্রের জড়িত থাকার বিষয়ে খুব শক্ত প্রমাণ নিয়ে আসে, আমি মনে করি আমরা সমর্থনে আমাদের মিত্রদের কাছ থেকে আরও শুনতে পাব।’ আবার অন্যান্য মিত্রদেশ অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই বিষয়টিতে উদ্বেগ জানালেও কেউ নিন্দা করেনি।

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলির মতে, ট্রুডো সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে হত্যার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সুনাকের মুখপাত্র ম্যাক্স ব্লেইল বলেন, ‘এগুলো গুরুতর অভিযোগ। কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষের তাদের খতিয়ে দেখা উচিত।’ তবে তিনি এও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডটি বাণিজ্য আলোচনায় আসবে না। আমরা অন্য বিষয়গুলোর সঙ্গে এটি নিয়ে সংঘাত করতে চাই না।’ বৃহস্পতিবার নিঃশব্দ সমর্থন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ট্রুডো বলেছিলেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ভারত একটি ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং এমন একটি দেশ যার সঙ্গে আমাদের শুধু এই অঞ্চলে নয়, সারা বিশ্বে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। আমরা উসকানি দিতে বা সমস্যা সৃষ্টি করতে চাই না কিন্তু আমরা আইনের শাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে দ্ব্যর্থহীন এবং কানাডিয়ানদের সুরক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে দ্ব্যর্থহীন।’

টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ এবং অধ্যাপক রবার্ট বোথওয়েল বলেছেন, ‘ওয়াশিংটনের কাছে এ বিষয়টি বিব্রতকর। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থ রয়েছে।’ ট্রুডোর অভিযোগ সঠিক হলে এটাও প্রদর্শিত হবে, ভারত সরকার আইনের শাসনের সহজাত অনুভূতি বা গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার দ্বারা সংযত নয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *